ঢাকা শনিবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২৫

ঘুষের মামলায় দণ্ডিত শিক্ষা কর্মকর্তা স্বপদে, তীব্র প্রতিক্রিয়া

ফটিকছড়ি (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: অক্টোবর ২৫, ২০২৫, ০৬:৩৩ এএম
ছবি- সংগৃহীত

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা ঘুষ মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত ফটিকছড়ি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আজিমেল কদর পুনরায় আগের কর্মস্থলে যোগ দিয়েছেন।

গত বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) তিনি ফটিকছড়ি উপজেলা শিক্ষা অফিসে আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই শিক্ষক সমাজে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেক শিক্ষক ও সংগঠনের নেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে দ্রুত তার প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন। কেউ কেউ সতর্ক করে বলেছেন, দাবি না মানলে কঠোর কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য হবেন তারা।

সূত্র জানায়, প্রশাসনিক প্রক্রিয়ায় আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত আজিমেল কদরকে সাময়িকভাবে পূর্বের কর্মস্থলে যোগদানের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে পরবর্তীতে তাকে অন্যত্র বদলি করা হতে পারে বলেও জানা গেছে।

মামলার নথি অনুযায়ী, ২০১৯ সালের ২৮ মার্চ ফটিকছড়ির বেড়াজালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা তাসলিমা আক্তারের কাছ থেকে বদলির বিনিময়ে ৩০ হাজার টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে দুদক কর্মকর্তারা আজিমেল কদরকে হাতে-নাতে গ্রেপ্তার করেন। পরদিন দুদকের সহকারী পরিচালক মো. নুরুল ইসলাম বাদী হয়ে ফটিকছড়ি থানায় মামলা দায়ের করেন।

দীর্ঘ বিচারপ্রক্রিয়া শেষে ২০২৩ সালের ১৫ জুন চট্টগ্রামের আদালত আজিমেল কদরকে ঘুষ গ্রহণের দায়ে আড়াই বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করেন। পরে তিনি উচ্চ আদালতে আপিল করলে তা গৃহীত হয়। এরপর দুদকের অভ্যন্তরীণ সভায় মামলায় পুনরায় আপিল না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই সিদ্ধান্তের ভিত্তিতেই তিনি পুনরায় ফটিকছড়িতে যোগদানের অনুমতি পান।

এই পুনর্বহালে ক্ষুব্ধ ফটিকছড়ি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির নেত্রী রহিমা বেগম। তিনি বলেন, ‘একজন শিক্ষা কর্মকর্তা, যিনি দুদকের হাতে ঘুষের মামলায় গ্রেপ্তার ও দণ্ডপ্রাপ্ত হয়েছেন, তিনি কীভাবে একই পদে ফের দায়িত্ব নিতে পারেন! এটি শিক্ষক সমাজের কাছে অগ্রহণযোগ্য। আমরা তার অবিলম্বে প্রত্যাহার দাবি করছি; অন্যথায় কঠোর আন্দোলনের পথে যাব।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষা কর্মকর্তা আজিমেল কদর বলেন, ‘আইনিভাবে বিষয়টি নিষ্পত্তি হয়েছে। এরপর মন্ত্রণালয় নিয়ম অনুযায়ী আমাকে পদায়ন করেছে। এর বেশি কিছু বলার সুযোগ নেই।’

চট্টগ্রাম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা দপ্তরের এক কর্মকর্তা জানান, বিষয়টি উচ্চপর্যায়ে আলোচনায় রয়েছে এবং প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত শিগগিরই জানানো হবে।