বাংলাদেশের কিছু রাজনৈতিক দল এখনো ফ্যাসিবাদী সংস্কৃতি থেকে মুক্ত হতে পারেনি বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আমরা কোনো ব্যক্তি বা দলের বিরোধিতা করি না।’
তিনি আরও বলেন, যারা সন্ত্রাস চালায়, পাথর মারে মানুষ হত্যা করে, মনোনয়ন না পেয়ে নিজ কর্মীকে হত্যা করে, চাঁদাবাজি-টেন্ডারবাজি-লুটপাট করে—আমরা সবসময় তাদের বিরুদ্ধে দাঁড়াই। ফটিকছড়িতে আমাদের বহু ভাই রক্ত দিয়েছেন, আমরা তা ভুলিনি।’
মঙ্গলবার (১১ ডিসেম্বর) বিকেলে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি সরকারি কলেজ মাঠে ফটিকছড়ি-ভূজপুর উন্নয়ন ফোরামের আয়োজনে ছাত্র ও যুব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জাহিদুল ইসলাম।
সমাবেশের সভাপতি ছিলেন বাংলাদেশ সরকারের অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিব গোলাম হোসেন। প্রধান বক্তা ছিলেন চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) আসনের জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী অধ্যক্ষ মুহাম্মদ নুরুল আমিন।
ছাত্রশিবির সভাপতি বলেন, ‘ব্রিটিশ উপনিবেশ থেকে শুরু করে দেশি-বিদেশি শক্তি বাংলাদেশকে গোলামির শৃঙ্খলে আবদ্ধ রাখার ষড়যন্ত্র করে এসেছে।’ তিনি জুলাই আন্দোলনে প্রাণ উৎসর্গকারীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, ‘আল্লাহ তাদের শাহাদাতের সর্বোচ্চ মর্যাদা দান করুন।’
সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তিনি আজ মুমূর্ষু অবস্থায়। আমরা তার সুস্থতার জন্য দোয়া করি।’
জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘স্বাধীনতার উদ্দেশ্য ছিল ইনসাফ, মানবিকতা ও সাম্য প্রতিষ্ঠা। কিন্তু শেখ মুজিবুর রহমান গণতন্ত্রের কথা বলে বাকশাল কায়েম করেন, রক্ষীবাহিনী দিয়ে বিরোধীদের দমন করেন। তার জুলুম ও লুটপাটের কারণে একসময়ের ধানভরা গোলা ও পুকুরভরা মাছের দেশে ১৯৭৪ সালে দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়।’
শেখ হাসিনার শাসনামলের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘সেনা অফিসার, আলেম-ওলামাসহ বহু মানুষ হত্যা ও গুমের শিকার হয়েছেন। ২০২৪ সালের ছাত্র আন্দোলনে আবাবিলের ঝাঁকের মতো তরুণরা রাস্তায় নেমে জীবন দিয়েছে। তাদের ত্যাগে ৫ আগস্ট বাংলাদেশের নতুন স্বাধীনতার সূর্য উদিত হয়েছে।’
ছাত্রশিবিরের ভূমিকা তুলে ধরে সভাপতি বলেন, ‘প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে ছাত্রশিবির তরুণদের সৎ, দক্ষ ও দেশপ্রেমিক হিসেবে গড়ে তুলছে। স্বাধীনতা সংগ্রাম থেকে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন—প্রতিটি গণআন্দোলনে ছাত্রশিবিরের গৌরবময় অবদান রয়েছে।’
সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন: ছাত্রশিবিরের চট্টগ্রাম মহানগরী উত্তরের সভাপতি তানজির হোসেন জুয়েল, দক্ষিণের সভাপতি মাইনুল ইসলাম মামুন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সভাপতি মোহাম্মদ আলী, উত্তর জেলা সভাপতি শওকত আলী, উত্তর জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি আব্দুল জব্বার এবং চাকসু ভিপি ইব্রাহিম হোসেন রনি।
উত্তর জেলা জামায়াতের প্রচার সেক্রেটারি এজাহারুল ইসলাম ও উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি ইউসূফ বিন সিরাজের যৌথ সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন উপজেলা আমির নাজিম উদ্দিন ইমু ও ভূজপুর শাখার আমির অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম। সমাবেশে স্থানীয় কয়েক হাজার নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।



