ঘড়ির কাঁটা তখন রাত ১১টা ৪৫ মিনিট ছুঁইছুঁই। চিরিংগা ইউনিয়নের সওদাগরঘোনা রাবার ড্যামের পাশে রামপুর আবাসন প্রকল্প এলাকা তখন নিস্তব্ধ। হঠাৎই সেই নীরবতা ছিন্ন করে গর্জে ওঠে গুলি। আতঙ্কে কেঁপে ওঠে চারপাশ। ঘরবন্দি মানুষ জানালার ফাঁক দিয়ে দেখতে থাকে এক ভয়াবহ দৃশ্য- মাছের ঘেরের দখল নিতে মুখোমুখি দুই পক্ষ।
সেই রাতেই সবকিছু হারিয়ে ফেলেন শেকাব উদ্দিন। ৪০ বছর বয়সি এই মানুষটি তখন গুলিবিদ্ধ হয়ে পড়ে ছিলেন রক্তাক্ত অবস্থায়। মুহূর্তেই তাকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে নিয়ে যান চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। কিন্তু চিকিৎসকেরা তখনই জানান- সব শেষ। শেকাব আর নেই।
শেকাব ছিলেন সাহারবিল ইউনিয়নের রামপুর এলাকার মঞ্জুর আলমের ছেলে। জীবনের সংগ্রামে জড়িয়ে পড়েছিলেন মাছ চাষে।
স্থানীয়দের মতে, রামপুর আবাসন প্রকল্প এলাকার একটি লাভজনক মাছের ঘেরের মালিকানা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে দুই পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছিল। অনেকেই আঁচ করতে পেরেছিলেন- এই বিরোধ একদিন ভয়ংকর কিছু ঘটাতে পারে। সেটাই সত্যি হলো শনিবার রাতে।
চকরিয়া থানার ওসি মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘মাছের ঘের নিয়ে বিরোধের জেরে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। শেকাব উদ্দিন নামের এক ব্যক্তি এতে নিহত হয়েছেন। তার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনায় জড়িতদের ধরতে অভিযান চলছে।’
এলাকার মানুষ এখনো আতঙ্কে। ঘটনার পর থেকেই অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে ঘটনাস্থলে। শেকাবের পরিবারে নেমে এসেছে শোকের ছায়া- একটি মাছের ঘেরের জন্য অকালে ঝরে গেল এক জীবন।
পাড়ার মোড়ে দাঁড়িয়ে এক বৃদ্ধ বলছিলেন, ‘ঘের তো থাকল, মানুষটা আর রইল না...’