জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনায় সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দিয়েছে পুলিশ।
তবে মামলার প্রধান আসামি অবন্তিকার সহপাঠী রায়হান সিদ্দিকী আম্মানের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে।
গতকাল রোববার (১০ আগস্ট) মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও কুমিল্লার কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মিজানুর রহমান আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। তিনি জানান, অবন্তিকার মায়ের দায়ের করা মামলায় প্রাথমিকভাবে দুজনকে আসামি করা হয়েছিল।
কিন্তু তদন্তে সহকারী প্রক্টরের বিরুদ্ধে কোনো প্রমাণ মেলেনি। অপরদিকে, ফরেনসিক বিশ্লেষণে আম্মানের পাঠানো মানসিক হয়রানিমূলক বার্তার প্রমাণ পাওয়া গেছে, যা অবন্তিকার আত্মহত্যার সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত।
তদন্ত কর্মকর্তা আরও জানান, তদন্তের অংশ হিসেবে জবি শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তাসহ ২৩ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া অবন্তিকার মোবাইল ফোন থেকে উদ্ধার হওয়া ছবি, স্ক্রিনশট, মেসেঞ্জার ও হোয়াটসঅ্যাপ বার্তা এবং তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া ‘সুইসাইড নোট’ বিস্তারিতভাবে পর্যালোচনা করা হয়।
এসব তথ্যের ভিত্তিতে ফরেনসিক রিপোর্টে স্পষ্ট হয়, আম্মানের প্রেরিত বার্তাগুলো অবন্তিকাকে মানসিকভাবে চাপে ফেলে আত্মহত্যায় প্ররোচিত করেছে।
ঘটনার পরপরই আম্মান ও দ্বীন ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়। বর্তমানে দুজনই জামিনে মুক্ত রয়েছেন।
২০২৪ সালের ১৫ মার্চ রাতে কুমিল্লা নগরীর একটি ভাড়া বাসায় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন অবন্তিকা।
আত্মহত্যার আগে তিনি ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন, যেখানে সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম ও সহপাঠী আম্মানসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ আনেন। পরদিন অবন্তিকার মা তাহমিনা শবনম দুইজনকে আসামি করে আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলা দায়ের করেন।
মেয়ের মৃত্যুর বিচার নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে অবন্তিকার মা বলেন, ‘মেয়ের মৃত্যুর নেপথ্যে যারা জড়িত তারা শাস্তি পাবে কি না শুরু থেকেই সন্দেহ ছিল। যে জবি প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানিয়েও মেয়েকে বাঁচাতে পারিনি, সেই প্রশাসন কীভাবে দায় এড়াতে পারে?’