আলোচিত টঙ্গীর বিটিসিএল টিএন্ডটি কলোনী জামে মসজিদের খতিব ও পেশ ইমাম মাওলানা মো. মোহেবব্বুল্লাহ মিয়াজিকে (৬০) পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে তিনি গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের টঙ্গী পূর্ব থানায় রয়েছেন। তার সঙ্গে রয়েছেন দুই ছেলেও।
তবে ইমাম মোহেবব্বুল্লাহকে নিরাপত্তার স্বার্থে থানার হেফাজতে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কমিশনার মো. জাহিদুল হাসান।
টঙ্গী পূর্ব থানা সূত্রও জানায়, আলোচিত ইমামকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নেওয়া হয়নি।
থানা সূত্র জানায়, এ বিষয়ে সর্বশেষ অগ্রগতি তুলে ধরতে আগামী মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সদর দপ্তরে একটি প্রেস ব্রিফিং করা হবে।
গত সপ্তাহে নিখোঁজ হওয়ার পর পঞ্চগড় সদর উপজেলার হেলিপ্যাড বাজার এলাকায় শিকলবন্দি অবস্থায় উদ্ধার করা হয় মাওলানা মো. মোহেবব্বুল্লাহকে।
ঘটনাটি দেশজুড়ে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
ওই এ ঘটনায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সংগঠন আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘের (ইসকন) বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে পঞ্চগড়ে বিক্ষোভ করা হয়।
স্থানীয় ও পুলিশ জানায়, গত ২৩ অক্টোবর ফজরের নামাজের পর পঞ্চগড় সদরের সিতাগ্রাম হেলিপ্যাড এলাকায় ইমাম মোহেবব্বুল্লাহ মিয়াজিকে পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয় বায়তুল ফালাহ জামে মসজিদের ইমাম শিহাব উদ্দিন। তিনি কাছে গিয়ে তার দুই পায়ে শিকল দিয়ে বাঁধা দেখতে পান।
পরে তিনি স্থানীয় লোকজনকে ডাকাডাকি করলে বেশ কয়েকজন জড়ো হন। এরপর ফেসবুকে ছবি দেখে ওই ব্যক্তি মুহিবুল্লাহ মিয়াজী বলে বুঝতে পারেন। পরে তারা জাতীয় জরুরি সেবা নম্বরে (৯৯৯) কল করলে পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।
দুপুরে পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক মো. সাবেত আলী তাঁকে দেখতে হাসপাতালে যান। এ সময় জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নেতা-কর্মীরাও সেখানে যান।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মুহিবুল্লাহ মিয়াজী সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি ২২ অক্টোবর সকাল সাতটার দিকে বাসা থেকে হাঁটতে বের হই। কিছুক্ষণ পর একটি অ্যাম্বুলেন্স তার সামনে এসে দাঁড়ায়। সেখান থেকে চার-পাঁচজন নেমে আমার মুখে কী যেন ধরে অ্যাম্বুলেন্সে তোলে। এরপর কালো কাপড় দিয়ে আমার চোখ বেঁধে ফেলে।’
‘পরে আমি অনুভব করি যে কাচের বোতলে পানি ভরে আমাকে মারধর করছে। আমার আগের অপারেশনের (অস্ত্রোপচার) জায়গাগুলোতে তারা আঘাত করেছে। আমার মাকে নিয়ে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেছে। মোবাইলটা নিয়ে গেছে। আমাকে ধরে আনা লোকজনকে বাংলাদেশি নাগরিক মনে হয়নি। তাঁরা প্রমিত বাংলায় কথা বলছিল।’
ইমাম মোহেবব্বুল্লাহ’র ভাষ্য, তাকে বিগত ১১ মাস ধরে বেনামি চিঠি দিয়ে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। এসব চিঠিতে তাকে অখণ্ড ভারত ও ইসকনের পক্ষে কথা বলতে বলা হয়। বাংলাদেশের ধর্মভিত্তিক দলগুলো ও বিএনপি-এনসিপির বিরুদ্ধে কথা বলতে বলা হয়।
সর্বশেষ গত ২১ অক্টোবরেরও এক চিঠিতে তাকে কোরআন, ইসলাম, আল্লাহ শব্দ বলতে নিষেধ করাসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলা হয় বলে তিনি দাবি করেন।


সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন