শনিবার, ০২ আগস্ট, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


নিজস্ব প্রতিবেদক, গোপালগঞ্জ

প্রকাশিত: আগস্ট ২, ২০২৫, ০৯:০৯ পিএম

সাংবাদিক নির্মল সেনের ৯৫তম জন্মদিনে শ্রদ্ধা 

নিজস্ব প্রতিবেদক, গোপালগঞ্জ

প্রকাশিত: আগস্ট ২, ২০২৫, ০৯:০৯ পিএম

সাংবাদিক নির্মল সেন।  ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

সাংবাদিক নির্মল সেন। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

বাংলাদেশের প্রগতিশীল আন্দোলনের অন্যতম অগ্রদূত, বিশিষ্ট সাংবাদিক, কলামিস্ট, বামপন্থী রাজনীতির পুরোধা, বীর মুক্তিযোদ্ধা নির্মল সেনের ৯৫তম জন্মদিন ৩ আগস্ট, রোববার। ১৯৩০ সালের এই দিনে গোপালগঞ্জ জেলার কোটালীপাড়া উপজেলার দিঘীরপাড় গ্রামে এক শিক্ষিত ও সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন তিনি।

নির্মল সেনের পিতা সুরেন্দ্রনাথ সেন গুপ্ত ছিলেন কোটালীপাড়া ইউনিয়ন ইনস্টিটিউশনের গণিত শিক্ষক। এর আগে তিনি ঢাকার ইস্ট বেঙ্গল ইনস্টিটিউটে শিক্ষকতা করতেন। মা লাবণ্যপ্রভা সেন গুপ্ত ছিলেন এক আদর্শ গৃহিণী। পাঁচ ভাই ও তিন বোনের মধ্যে নির্মল ছিলেন পঞ্চম।

দেশবিভাগের পর তার পরিবার কলকাতায় চলে গেলেও তিনি জন্মভূমির প্রতি গভীর ভালোবাসা থেকে বাংলাদেশেই থেকে যান। শৈশবকাল অতিবাহিত হয় ঝালকাঠি জেলার পিসির বাড়িতে। মাত্র ১৪ বছর বয়সে ১৯৪৪ সালে কলসকাঠি বিএম একাডেমি থেকে ম্যাট্রিক পাস করেন। এর আগে তিনি টুঙ্গিপাড়ার জিটি স্কুলে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়াশোনা করেন। পরবর্তীতে বরিশাল বিএম কলেজ থেকে আইএসসি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ ও মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন।

নির্মল সেনের রাজনীতিতে আগমন ঘটে স্কুল জীবনেই, ভারত ছাড়ো আন্দোলনের মাধ্যমে। কলেজ জীবনে তিনি অনুশীলন সমিতির সক্রিয় সদস্য ছিলেন। পরবর্তীতে তিনি বাম রাজনৈতিক সংগঠন আরএসপি-তে যোগ দেন এবং দীর্ঘ সময় শ্রমিক-কৃষক সমাজবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।এই রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের কারণে তাঁকে জীবনের অনেকটা সময় কারাবরণ
করতে হয়েছে।

নির্মল সেন সাংবাদিকতা শুরু করেন ১৯৬১ সালে দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকায় লেখালেখির মাধ্যমে। এরপর তিনি কাজ করেছেন দৈনিক আজাদ, দৈনিক পাকিস্তান এবং দৈনিক বাংলা পত্রিকায়। তিনি ছিলেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি, যা তার সাংবাদিকতা জগতে নেতৃত্বের প্রমান।

এছাড়া তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগে অতিথি শিক্ষক হিসেবেও পাঠদান করেছেন। তার লেখা ছিল সমাজ, রাষ্ট্র, রাজনীতি ও মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক।

উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে: পূর্ব পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ, মানুষ সমাজ রাষ্ট্র, বার্লিন থেকে মস্কো, মা জন্মভূমি, স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি চাই, আমার জীবনে ৭১-এর যুদ্ধ, আমার জবানবন্দি।

২০০৩ সালে নির্মল সেন ব্রেইন স্ট্রোকে আক্রান্ত হন এবং দীর্ঘদিন চিকিৎসার পর ২০১৩ সালের ৮ জানুয়ারি মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর পূর্বে তার শেষ ইচ্ছা ছিল দেহদানের মাধ্যমে চিকিৎসা বিজ্ঞানে অবদান রাখা। সেই অনুযায়ী তাঁর মরদেহ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে দান করা হয়।

নির্মল সেনের স্মৃতিকে অমর করে রাখার জন্য এ বছর ‘প্রেসক্লাব-কোটালীপাড়া ও নির্মল সেন স্মৃতি সংসদ’ কোটালীপাড়া উপজেলা পরিষদ হলরুমে আলোচনা সভা ও কেক কাটা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।

তার ভাতিজা রতন সেন কংকন বলেন, আমরা পারিবারিকভাবে কোন অনুষ্ঠান করবো না, কারণ নির্মল সেন ছিলেন সার্বজনীন ব্যক্তিত্ব। তিনি যেন তার কর্মের মাধ্যমে মানুষের মাঝে বেঁচে থাকেন, এটাই আমাদের কামনা।

নির্মল সেন শুধু একজন সাংবাদিক বা রাজনীতিবিদই নন, তিনি ছিলেন স্বাধীনতা সংগ্রামের এক অকুতোভয় সৈনিক, মুক্তচিন্তার প্রচারক এবং সমাজ বদলের সংগ্রামী কণ্ঠস্বর। তার জীবন, আদর্শ ও কর্ম আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য অনুকরণীয় পথনির্দেশক।

রূপালী বাংলাদেশ

Shera Lather
Link copied!