ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারাতে পারলে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ২-০ ব্যবধানে জয় নিশ্চিত হবে। এমন সমীকরণ নিয়ে দ্বিতীয় ওয়ানডে ম্যাচে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ৭ উইকেটে ২১৩ রান তুলে বাংলাদেশ। এই ম্যাচে বিশ^ রেকর্ড গড়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচের পুরো ৫০ ওভার স্পিনারদের দিয়ে বোলিং করিয়েছে দলটি। আন্তর্জাতিক ওয়ানডে ক্রিকেটে আর কোনো দল এত বেশি ওভার স্পিনারদের দিয়ে বোলিং করায়নি। এর আগে ২০০৪ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ওয়ানডে ম্যাচে ৪৪ ওভার স্পিনারদের দিয়ে বোলিং করিয়েছিল শ্রীলঙ্কা। এবার মিরপুরের উইকেটে শুধু স্পিনারদের দিয়ে বোলিং করিয়ে ইতিহাসে পাতায় নাম তুলল ক্যারিবীয়রা। টানা ৩ ঘণ্টা ১৮ মিনিট ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্পিনাররা বোলিং করে গেছেন।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের রেকর্ড গড়া ম্যাচে ব্যাটিংয়ে জ¦লে উঠতে পারেনি বাংলাদেশ। শেষ দিকে রিশাদ হোসেনের বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ের সুবাদে কোনোমতে দলীয় রান ২০০ পার করে স্বাগতিকরা। মাত্র ১৪ বলে ৩টি চার ও ৩টি ছক্কায় অপরাজিত ৩৯ রানের ইনিংস খেলেন রিশাদ। ৫৮ বলে ৩২ রানে অপরাজিত থাকেন মেহেদী হাসান মিরাজ। দলে ফেরা অভিজ্ঞ ওপেনার সৌম্য সরকার এদিন রানে ফিরেছেন। ৮৯ বল খেলে ৪৫ রান করেন তিনি। এ ছাড়া নুরুল হাসান সোহান ২৩ রান করেন। মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন করেন ১৭ রান। ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে গুডাকেশ মোটি নেন সর্বোচ্চ ৩ উইকেট। আকিল ও আথানেজ দুটি করে উইকেট নেন।
গতকাল মিরপুরে দুই দলই একাদশে চারজন করে বিশেষজ্ঞ স্পিনার নিয়ে মাঠে নামে। কেননা অতিরিক্ত স্পিনসহায়ক মিরপুরের উইকেট নিয়ে আগেও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে শিরোনাম হয়েছে। নতুন কিউরেটরের প্রস্তুত ‘কালো পিচ’ও সেই ধারা অব্যাহত রেখেছে। পিচের প্রভাব এতটাই বেশি, ম্যাচের আগের দিন (২০ অক্টোবর) স্পিন সামলানোর জন্য স্বাভাবিকের চেয়ে ছোট ব্যাট দিয়ে অনুশীলন করেছে বাংলাদেশ দল। অন্যদিকে, ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলও নেটে শুধু স্পিন বলের অনুশীলনে মনোযোগ দেয়। ম্যাচেও সেটির প্রতিফলন দেখা গেল। ওয়েস্ট ইন্ডিজ পুরো ইনিংসেই স্পিনারদের দিয়ে বল করিয়েছে, যা ওয়ানডেতে এক ম্যাচে দলটির সর্বোচ্চ। এর আগে ২০০১ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে এক ম্যাচে তারা ৩৪ ওভার স্পিনারদের দিয়ে করিয়েছিল।
ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথম যে পাঁচজন বোলার ব্যবহার করেছে, তারা সবাই স্পিনার। দুই পেসার জাস্টিন গ্রিভস এবং পার্ট টাইম পেসার শেরফান রাদারফোর্ড প্রথম ৩৬ ওভারে বল করার সুযোগ পাননি। আইসিসির পূর্ণ সদস্য দেশগুলোর খেলায় এমন ঘটনা দেখা গেল প্রথমবার। এ ছাড়া চারজন স্পিনার নিয়ে মাঠে নেমে প্রায় সাড়ে ৩ বছর আগের স্মৃতি ফিরিয়ে এনেছে বাংলাদেশ। সর্বশেষ ২০২২ সালে তারা চার স্পিনার নিয়ে মাঠে নেমেছিল, দিনের হিসাবে যা ছিল ১ হাজার ১৯৩ দিন আগে। গায়ানার প্রভিডেন্স স্টেডিয়ামে হওয়া সেই ম্যাচের মতো ম্যাচেও বাংলাদেশের একমাত্র পেসার মোস্তাফিজুর রহমান। উল্লেখ্য, সেই স্পিন-সহায়ক উইকেটে তাইজুল ইসলামের ৫ উইকেটে মাত্র ১৬৮ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল ক্যারিবীয়রা। বাংলাদেশ ম্যাচটি জিতেছিল ৪ উইকেট ও ৯ বল হাতে রেখে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন