শনিবার, ০২ আগস্ট, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


বিল্লাল হোসেন, যশোর

প্রকাশিত: আগস্ট ২, ২০২৫, ১১:২৯ এএম

যশোর-ঝিনাইদহের মহাসড়ক যেন পুকুর!

বিল্লাল হোসেন, যশোর

প্রকাশিত: আগস্ট ২, ২০২৫, ১১:২৯ এএম

যশোর-ঝিনাইদহ মহাসড়ক। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

যশোর-ঝিনাইদহ মহাসড়ক। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

যশোর-ঝিনাইদহ মহাসড়কের পালবাড়ি থেকে চুড়ামনকাটি পর্যন্ত ছয় কিলোমিটার সড়কে পিচের ঢালাই উঠে গেছে এবং সেখানে বড় বড় খানাখন্দ তৈরি হয়েছে। দিন দিন এসব খানাখন্দ আরও বড় বড় গর্তে রূপ নিচ্ছে। বৃষ্টির সময় এসব গর্তে হাঁটু পানি জমে থাকে।

অন্যদিকে, যশোর-খুলনা মহাসড়কের চেঙ্গুটিয়া থেকে প্রেমবাগ পর্যন্ত অংশটি এখন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। বৃষ্টি হলে কাদা ও পিচ্ছিলতা দেখা দেয়, আর রোদে হলে ধুলার ঝড় ওঠে। এই সড়কে প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন হাজারো মানুষ, শিক্ষার্থী ও পরিবহন চালকরা। প্রায়ই দুর্ঘটনার সৃষ্টি হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, যশোর থেকে রাজধানী, খুলনা ও আশপাশের জেলা কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা যাতায়াতের প্রধান মাধ্যম এ সড়কটি। তবে এই মহাসড়কে ইট, বালি, খোয়া ও পিচ উঠে বড় বড় খানাখন্দ সৃষ্টি হয়েছে। সামান্য বৃষ্টিতেই গর্তে পানি জমে থাকে, ফলে গর্তের গভীরতা বোঝা যায় না। ছোট-বড় সব ধরনের যানবাহনের চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে এবং দুর্ঘটনা ঘটছে।

তবুও বাধ্য হয়ে সড়ক দিয়ে শত শত যানবাহন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। বিশেষ করে মোটরসাইকেল ও ছোট যানবাহনগুলো বেশি দুর্ঘটনায় পড়ছে। অনেক বাস ও ট্রাক গর্তের কারণে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে যায়।

রূপসা পরিবহনের চালক গোলাম কিবরিয়া ও গড়াই পরিবহনের চালক শফিয়ার রহমান জানান, ‘যশোর-খুলনা মহাসড়ক এখন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। যেখানে-সেখানে বড় বড় গর্ত দেখে মনে হয় ছোট ছোট পুকুর তৈরি হয়েছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই সড়কে চলাচল করতে হচ্ছে। সড়কটি দ্রুত সংস্কারের প্রয়োজন।’

নড়াইল এক্সপ্রেস পরিবহনের বাস চালক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘বেহাল দশা দেখে মনে হয় না এটি ব্যস্ততম মহাসড়ক। যশোরের রাস্তার অবস্থা খুবই খারাপ। গাড়ি চালাতে অনেক কষ্ট হয়। সড়কের বুকে যেখানে সেখানে বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে।’

পথচারীরা জানান, পালবাড়ি থেকে চুড়ামনকাটি পর্যন্ত সড়কের একাধিক স্থানে খানাখন্দে প্রায় ইট বিছানো হয়, কিন্তু বেশিদিন স্থায়ী হয় না। বৃষ্টি হলে দুর্ভোগের শেষ থাকে না। মানুষ কষ্ট করে চলাচল করছে। এই অবস্থার পরিবর্তন প্রয়োজন। কারণ এই ব্যস্ততম মহাসড়কে প্রতিদিন শত শত যাত্রীবাহী বাস, সিএনজি, ইজিবাইক, ভ্যান, রিকশা, নসিমন, করিমন, মোটরসাইকেল, বাইসাইকেল, ট্রাকসহ নানা পণ্যবাহী যানবাহন চলাচল করে।

তারা আরও জানান, বেনাপোল, ভোমরা ও মংলা বন্দরসহ দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে মালামাল আসা-যাওয়া করে এ সড়ক দিয়ে। চুয়াডাঙ্গা, আলমডাঙ্গা, ঝিনাইদহ, মাগুরা, যশোর, সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের যাত্রীরা এই সড়ক ব্যবহার করেন। এছাড়া যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে যাতায়াতের জন্য এটি একমাত্র সড়ক। সবমিলিয়ে এই সড়কে চলাচলে দুর্ভোগের শেষ নেই।

যশোরের জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক সাজেদ রহমান ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আমি পা বাড়ালাম যশোর-খুলনা মহাসড়কের সেই অতিপরিচিত, অতিচর্চিত, অতিপীড়িত অংশ- যশোর থেকে নওয়াপাড়া সড়ক দিয়ে। তখনই বুঝলাম, চাঁদের উল্টোপিঠ আর যশোর-নওয়াপাড়া সড়কের মাঝে বিস্তর পার্থক্য আছে। চাঁদের পিঠে শুধু গর্ত, কিন্তু এই সড়কে গর্তের মাঝেই একটু একটু রাস্তা!’

তিনি আরও লিখেছেন, ‘সকালে রওনা দিলাম, ভাবলাম আধা ঘণ্টায় গন্তব্যে পৌঁছাব। কিন্তু প্রথম ঝাঁকুনিতে মনে হলো- জীবনটা একটা খোলা রোলার কোস্টার। দ্বিতীয় গর্তে পড়ে আমার জিন্সের পকেটে থাকা কয়েনগুলোও ‘টিং টিং’ করে আত্মচিৎকার দিয়ে উঠল।’

নওয়াপাড়া হাইওয়ে থানার ওসি মাহবুবুর রহমান জানান, ‘বালি ও ইটভাটা মালিকদের লাইসেন্সবিহীন গাড়ির প্রতি বাড়তি নজর রাখা হচ্ছে। অবৈধ যানবাহনের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান চলছে। সড়ক সংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথেও যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে।’

যশোর সড়ক বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী শাহজাদা ফিরোজ বলেন, ‘যশোর-খুলনা সড়কের সংস্কার কাজ জরুরি ভিত্তিতে করার জন্য ঠিকাদারকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কাজ শেষ হলে পথচারীদের দুর্ভোগ লাঘব হবে।’

যশোর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া জানান, ‘বর্ষার কারণে যশোর-ঝিনাইদহ মহাসড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। একাধিক স্থানে পিচ ও খোয়া উঠে গেছে, বড় বড় গর্ত হয়ে গেছে। মানুষের দুর্ভোগ চিন্তা করে মহাসড়কের ক্ষতিগ্রস্ত অংশে ইটের সলিং বিছিয়ে দেয়া হচ্ছে। ট্রেন্ডার ছাড়া স্থায়ীভাবে উন্নয়ন কাজ সম্ভব নয়।’

Shera Lather
Link copied!