লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে অন্যান্য কৃষি ফসলের পাশাপাশি সুস্বাদু ও পুষ্টিকর রসালো ফল মাল্টা চাষে আগ্রহ বেড়েছে কৃষকদের। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এখন মাল্টা চাষের প্রতি ঝুঁকছেন অনেক চাষি।
চাষিদের মতে, বর্তমানে অন্যান্য ফল ও ফসলের দাম কমে যাওয়ায় এবং খরচ বেড়ে যাওয়ায় লাভজনক বিকল্প ফসল হিসেবে তারা মাল্টার দিকে ঝুঁকছেন। তা ছাড়া নতুন জাতের ফল ও ফসলের প্রতি যেমন চাষিদের আগ্রহ থাকে, তেমনি স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত ফলের প্রতি ভোক্তাদের চাহিদাও বেশি থাকে। এ কারণে বাজারে মাল্টার দামও ভালো পাওয়া যাচ্ছে।
কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনা ইউনিয়নের কৃষক রঞ্জু মিয়া ৬৫ শতাংশ জমিতে বারি-১ জাতের মাল্টা চাষ করেছেন। সবুজ পাতার ফাঁকে ঝুলছে সবুজ মাল্টা—সেই দৃশ্যেই লুকিয়ে আছে তার স্বপ্ন। মাল্টা বাগানের ফাঁকা ও পরিত্যক্ত জায়গায় তিনি সাথী ফসল হিসেবে মুখি কচু ও সুপারির চারা রোপণ করেছেন। এক জমিতে তিন ফসল আবাদ করে তিনি বাড়তি আয়ের স্বপ্ন দেখছেন। স্থানীয় বাজারের চাহিদা পূরণ করে বছরে প্রায় ৪ লাখ টাকা আয় করছেন তিনি।
রঞ্জু মিয়া জানান, আমি বারি-১ জাতের মাল্টা চাষ করেছি। এই জাতের ফলন ভালো হয় এবং বাজারে চাহিদাও বেশি। প্রতি কেজি ৬০-৭০ টাকায় বিক্রি করছি। বাগানের ফাঁকা জায়গায় মুখি কচু ও সুপারির চারা লাগিয়ে অতিরিক্ত আয় হচ্ছে। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে নিয়মিত দিকনির্দেশনা পাচ্ছি।
স্থানীয়রা বলছেন, রঞ্জু মিয়া এখন একজন সফল মাল্টা চাষি হিসেবে পরিচিত। তার বাগান দেখে অনেকেই মাল্টা চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। দিন দিন এক জমিতে তিন ফসল চাষ কালীগঞ্জ উপজেলায় জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
উপজেলা কৃষি বিভাগের তত্ত্বাবধানে মাল্টা বাগান নিয়মিত পরিদর্শন ও পরামর্শ দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্লকের দায়িত্বে থাকা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তুষার কান্তি রায় বলেন, ‘কালীগঞ্জ উপজেলার মাটি বেলে-দোআশ প্রকৃতির এবং তুলনামূলকভাবে উঁচু হওয়ায়, পাশাপাশি মাটিতে পিএইচ এর পরিমাণ কম থাকায় এতে কিছুটা অ্যাসিডিক বৈশিষ্ট্য থাকে। এসব কারণে এখানে মাল্টা ও কমলার মতো ফলের ফলন ভালো হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘কাকিনার কৃষক রঞ্জু মিয়া তার মাল্টা বাগানের ফাঁকে মুখি কচু এবং অন্যান্য সবজিও চাষ করেছেন। তাকে দেখে অনেক কৃষক উৎসাহিত হবেন বলে আশা করছি। বারি-১ জাতের মাল্টা একটি লাভজনক ও সুস্বাদু ফল হওয়ায় এর চাহিদাও বেশি।’