মহাসড়কে সিএনজিচালিত অটোরিকশা দাঁড় করানোকে কেন্দ্র করে ময়মনসিংহের নান্দাইলে দু’গ্রামের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন।
শুক্রবার (১৩ জুন) সকাল ১১টার দিকে ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়কের বেলালাবাদ দত্তপুর বাজারে এই সংঘর্ষ ঘটে।
এ সময় মহাসড়কের দুই পাশে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর তৎপরতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে বেলালাবাদ দত্তপুর বাসস্ট্যান্ডে মহাসড়কে সিএনজিচালিত অটোরিকশা রাখাকে কেন্দ্র করে মোয়াজ্জেমপুর ইউনিয়নের দত্তপুর গ্রামের আনোয়ারুল ইসলাম ও উত্তর পালাহার গ্রামের সজল মিয়ার মধ্যে মারধরের ঘটনা ঘটে।
এ নিয়ে গতকাল রাত থেকে দুই গ্রামের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল। আজ সকালে স্থানীয়রা বেলালাবাদ দত্তপুর বাজারে মীমাংসার জন্য বসে। বিষয়টি মীমাংসার দিকে না গিয়ে পরিস্থিতি বরং আরও জটিল হয়।
একপর্যায়ে ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়কের এমএন ফিলিং স্টেশনের সামনে দেশীয় অস্ত্র ও ইট-পাটকেল নিয়ে দু’গ্রামের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। রণক্ষেত্রে পরিণত হয় পুরো এলাকা।
সংঘর্ষে উত্তর পালাহার গ্রামের কাঞ্চন (২৮), ইসরাফিল (৪৮), আল আমিন (২৫), অপু (২০) ও হিমেল (২৫) এবং দত্তপুর গ্রামের আনোয়ারুল ইসলাম (৪০), শরীফ মিয়া (২৫), ফারুক (৩০), রমজান মিয়া (৩৩), ফজলুর রহমানসহ (৫০) অন্তত ২০ জন আহত হন। আহতরা নান্দাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ময়মনসিংহ জেলা মোটরযান কর্মচারী সমিতি নান্দাইলের কানুরামপুর পরিবহন পরিচালনা রোডে ২৯ সদস্যের কমিটির অনুমোদন দেয়। ময়মনসিংহ জেলা মোটরযান কর্মচারি সমিতির সভাপতি নজরুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক মো. আইয়ুব আলী ১১ জুন কমিটির অনুমোদন দেন।
এ কমিটি ঘোষণার পর থেকে দু’গ্রামের সম্পর্ক ভালো যাচ্ছিল না। দুই গ্রামের মানুষই কমিটির পুরো নিয়ন্ত্রণ নিতে চাইছিল।
সংঘর্ষের ব্যাপারে দত্তপুর গ্রামের আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, অটোচালককে মারধর করতে ছিল মানিক আর সুমন। সেটার প্রতিবাদ করতে গিয়ে আমার ওপরে হামলা করেছে। আজকেও তারা দলবল নিয়ে আক্রমণ করেছে।’
উত্তর পালাহার গ্রামের সজল মিয়া বলেন, ‘আমার এলাকার ছোট ভাইদের আনোয়ারুল মারধর করছে। আমি গিয়ে জিজ্ঞেস করলে আমাকেও গলায় ধরে। মোটরযান কর্মচারী সমিতির কমিটি ঘোষণার পর থেকেই তারা এমন শুরু করেছে।’
নান্দাইল মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘চাঁদাবাজি নিয়ে দু’গ্রামের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনা বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে।’
উল্লেখ্য, গত ঈদুল ফিতরে ৫ এপ্রিল কানুরামপুর বাসস্ট্যান্ডে চাঁদাবাজির ঘটনায় নান্দাইল মডেল থানার এ এস আই সালেহুর রহমান বাদী হয়ে ৯ জনের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা করেন। এ ঘটনায় সে সময় দত্তপুর গ্রামের শাহজাহান ও ইউসুফ মিয়াকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছিল। চাঁদাবাজি সেই মামলায় দত্তপুর গ্রামের লোকজনকে বেশি আসামি করা হয়েছিল।
নান্দাইল উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফয়জুর রহমান বলেন, ‘ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’
আপনার মতামত লিখুন :