বুধবার, ১৩ আগস্ট, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: আগস্ট ১৩, ২০২৫, ০৫:৪২ পিএম

সত্যিই কি নিজের প্রশিক্ষিত তিমির হাতে প্রাণ হারিয়েছেন জেসিকা?

বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: আগস্ট ১৩, ২০২৫, ০৫:৪২ পিএম

ভাইরাল হওয়া ‘জেসিকা র‍্যাডক্লিফ’ ও অর্কা। ছবি- সংগৃহীত

ভাইরাল হওয়া ‘জেসিকা র‍্যাডক্লিফ’ ও অর্কা। ছবি- সংগৃহীত

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) এই যুগে বাস্তবতা এবং কল্পকাহিনীর মধ্যে পার্থক্য করা ক্রমশ কঠিন হয়ে উঠছে। সম্প্রতি ইন্টারনেট জগতে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে  ‘জেসিকা র‍্যাডক্লিফ’ নামের একজন সামুদ্রিক প্রশিক্ষককে একটি অর্কা বা ঘাতক তিমির আক্রমণে নিহত হতে দেখা যায়।

টিকটক, ফেসবুক এবং এক্স-জুড়ে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়া এই ক্লিপটিকে ঘিরে যে দাবি করা হচ্ছে, তা সম্পূর্ণ বানোয়াট। একইসঙ্গে এর বাস্তব কোনো ভিত্তি নেই বলে একাধিক ফ্যাক্টচেকিং সংস্থা নিশ্চিত করেছে।

ভাইরাল হওয়া ক্লিপটিতে দেখা যায়, প্যাসিফিক ব্লু মেরিন পার্ক নামের স্থানে জেসিকা র‍্যাডক্লিফ একটি অর্কার পিঠে চড়ে নাচছেন। দর্শকরা উল্লাস করার মাঝেই হঠাৎ তিমিটি তাকে পানির নিচে টেনে নিয়ে যায়। ভিডিওটি শেয়ার করে অনেকেই দাবি করেছেন যে, পানির নিচে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরেই প্রশিক্ষক জেসিকার মৃত্যু হয়।

ব্যাপকভাবে প্রচারিত হলেও জেসিকা র‍্যাডক্লিফ নামে কোনো প্রশিক্ষকের অস্তিত্ব কিংবা এই ধরনের কোনো দুর্ঘটনার কোনো প্রমাণ খুঁজে পাওয়া যায়নি। বিভিন্ন কর্তৃপক্ষ, সামুদ্রিক পার্ক এবং প্রতিষ্ঠিত সংবাদমাধ্যমগুলো অনুসন্ধান করে তার বা এই ঘটনার কোনো রেকর্ড পায়নি।

ভাইরাল হওয়া ‘জেসিকা র‍্যাডক্লিফ’ ও অর্কা। ছবি- সংগৃহীত

দ্য স্টার পত্রিকা তাদের প্রতিবেদনে এই ফুটেজটিকে কাল্পনিক বলে উল্লেখ করেছে এবং ক্লিপটিতে ব্যবহৃত কণ্ঠস্বরও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই দিয়ে তৈরি বলে মনে করা হচ্ছে।

অন্যান্য প্রতিবেদনেও বলা হয়েছে, সামুদ্রিক পার্কে সাধারণত এই ধরনের দুর্ঘটনার পর আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়, কিন্তু এক্ষেত্রে তেমন কিছুই পাওয়া যায়নি। ভিডিওটির ফরেনসিক বিশ্লেষণে পানির অস্বাভাবিক গতিবিধি এবং অদ্ভুত কিছু বিরতি লক্ষ করা গেছে, যা নিশ্চিত করে যে এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি।

এমনকি, ভিডিওতে উল্লিখিত পার্কটিরও বাস্তবে কোনো অস্তিত্ব নেই।

ফোর্বস এই ক্লিপটিকে একটি ‘প্রতারণা’ হিসেবে চিহ্নিত করে বলেছে, এই মাত্রার কোনো বাস্তব ট্র্যাজেডি ঘটলে তা আন্তর্জাতিক সংবাদ শিরোনামে পরিণত হতো। ভিডিওটির দৃশ্য এবং শব্দ সম্ভবত চাঞ্চল্য সৃষ্টির উদ্দেশ্যেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বিভিন্ন টুল ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে।

ইকোনমিক টাইমস উল্লেখ করেছে, এই গল্প এবং চরিত্র কোনো যাচাইযোগ্য রেকর্ডের সঙ্গে মেলে না, যা এই সিদ্ধান্তকে আরও জোরালো করে যে পুরো আখ্যানটিই কাল্পনিক।

এই ধরনের ভুয়া ভিডিওগুলো বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের জন্য প্রায়শই অতীতের সত্যিকারের দুঃখজনক ঘটনাকে ব্যবহার করে। এই বানোয়াট গল্পটি ২০১০ সালে সিওয়ার্ল্ডে ডন ব্রাঞ্চো এবং ২০০৯ সালে অ্যালেক্সিস মার্টিনেজের বাস্তব জীবনের মৃত্যুকে মনে করিয়ে দেয়, যেখানে উভয় প্রশিক্ষকই অর্কার আক্রমণে মারাত্মকভাবে আহত হয়েছিলেন।

তবে সেই ঘটনাগুলো ছিল সম্পূর্ণ সত্য এবং তার বিস্তারিত প্রমাণ রয়েছে, যা জেসিকা র‍্যাডক্লিফের গল্পের ক্ষেত্রে অনুপস্থিত।

বিশেষজ্ঞদের মতে, একটি ভিডিওর আবেগঘন আবেদন এবং বাস্তবসম্মত নির্মাণ কৌশলের কারণে তা দ্রুত ভাইরাল হয়। এই ধরনের ক্লিপগুলো একদিকে যেমন বুদ্ধিমান সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণীদের বন্দিদশা নিয়ে মানুষের গভীর উদ্বেগকে ব্যবহার করে, তেমনি তথ্য যাচাইয়ের আগেই চাঞ্চল্য ছড়িয়ে দেয়।

‘জেসিকা র‍্যাডক্লিফের’ অর্কা আক্রমণের ভিডিওটি তাই একটি সম্পূর্ণ বানোয়াট ঘটনা। অনলাইনে এমন কোনো তথ্য পেলে তা বিশ্বাস করার আগে নির্ভরযোগ্য উৎস থেকে যাচাই করে নেওয়ার গুরুত্ব আরও একবার স্পষ্ট হলো।

Shera Lather
Link copied!