উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠন, ভারতীয় দোসরদের অপসারণ এবং 'জুলাই ঘোষণাপত্র' ঘোষণার দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে 'জুলাই ঐক্য' নামক প্ল্যাটফর্ম। বৃহস্পতিবার (২২ মে) রাত সাড়ে ১০টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে আয়োজিত এ সমাবেশে সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এসব দাবি উত্থাপন করেন।
সমাবেশে বক্তারা অভিযোগ করেন, উপদেষ্টা পরিষদে এমন ব্যক্তিরা রয়েছেন যারা জুলাই আন্দোলনের আদর্শের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করছেন এবং ভারতীয় আধিপত্যবাদের স্বার্থ রক্ষা করছেন। বক্তারা অধ্যাপক আসিফ নজরুল ও আলী ইমাম মজুমদারকে উপদেষ্টা পরিষদ থেকে অপসারণের দাবি জানিয়ে বলেন, এই দুই ব্যক্তি 'জুলাই ঐক্য'-বিরোধী অবস্থান নিয়ে কাজ করছেন।
প্লাটফর্মের অন্যতম সংগঠক আব্দুল্লাহ আল মিনহাজ বলেন, ‘এ জুলাইয়ের রক্তের ওপর দিয়ে যারা ক্ষমতায় বসেছিল তারা বিভিন্ন ইস্যুতে দৃশ্যমান কোনো কাজ করেনি। জুলাইয়ের সৈনিকদের বিপদে ঠেলে দিয়ে তোমরা ক্ষমতা ক্ষমতা করো।’
ড. ইউনূসের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমরা আপনার ওপর আস্থা রাখতে চাই। আপনার আশেপাশে যারা জুলাইয়ের গাদ্দার আছে তাদেরকে অপসারণ করুন।’
মিনহাজ বলেন, ‘খুনি হাসিনাকে যেভাবে আমরা একতাবদ্ধ হয়ে ভারতে পালাতে বাধ্য করেছি সেভাবে জুলাইয়ের রক্তের সঙ্গে যারা গাদ্দারি করবে তাদেরকেও আমরা পালাতে বাধ্য করব।’
উপদেষ্টা মাহফুজের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, ‘মাহফুজ তুমি জুলাইয়ের সঙ্গে গাদ্দারি করেছো। দেশের প্রশ্নে কেউ কাল হয়ে দাঁড়ালে আমরা সহ্য করব না।’
প্লাটফর্মের মুখপাত্র ইসরাফিল ফরাজী বলেন, ‘আজকে জুলাই যোদ্ধারা মাঠে আছে, এখনও ঘরে ফিরে যায় নাই। যতক্ষণ পর্যন্ত জুলাইয়ের গাদ্দারদের বিচার না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত জুলাইয়ের যোদ্ধারা ঘরে ফিরবে না। অবিলম্বে জুলাই ঘোষণাপত্র ঘোষণা করতে হবে। ঘোষণা দিয়ে সসম্মানে আমাদের সঙ্গে থাকুন।’
জুলাই ঐক্যের অন্যতম সংগঠক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মুসাদ্দিক আলী ইবনে মোহাম্মদ বলেন, ‘আমরা বুক ভরা আশা নিয়ে এ অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করেছিলাম। এ সরকারের প্রথম কাজ হওয়া উচিত ছিল আহতদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসন নিশ্চিত করা, অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করা। কিন্তু তারা সেটি না করে নির্বাচন নির্বাচন করছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘উপদেষ্টা পরিষদে কোনো ধরনের ভারতীয় দোসরদের জায়গা হবে না। কতিপয় জুলাই ব্যবসায়ীরা আমাদের ঐক্যকে নষ্ট করেছে। উপদেষ্টা পরিষদে যারা ভারতীয় আধিপত্যবাদের অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়ন করছেন তাদেরকে অতিসত্বর সরাতে হবে।’
তিন দাবি জানিয়ে মুসাদ্দিক বলেন, ‘সকল জায়গা থেকে ভারতীয় আধিপত্যবাদীদের অপসারণ করতে হবে; দ্রুত সময়ের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র ঘোষণা করতে হবে; এবং প্রশাসন, গণমাধ্যমে যেসব আওয়ামী লীগের দোসর আছে তাদেরকে অতি দ্রুত অপসারণ করতে হবে।’