ঢাকা শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর, ২০২৫

যমুনায় যেতে পারলেন না বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন গ্র্যাজুয়েটরা

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: অক্টোবর ২৪, ২০২৫, ০৭:০৪ পিএম
পুলিশের বাধায় যমুনায় যেতে পারলেন না বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন গ্র্যাজুয়েটরা। ছবি- সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা পর্যন্ত পদযাত্রা করতে চেয়েছিলেন বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন গ্র্যাজুয়েটরা। তবে শাহবাগ মোড়ের আগে পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে তাদের আটকে দেয়।

শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) বিকেল ৩টার দিকে বিশেষ নিয়োগ ও সরকারি চাকরিতে বয়সসীমা বাড়ানোর দাবিতে পদযাত্রা শুরু করে তারা। 

সরেজমিনে দেখা যায়, বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড ও ব্যানার হাতে শ্লোগান দিতে দিতে যমুনার দিকে এগোতে চেষ্টা করেন প্রতিবন্ধী গ্র্যাজুয়েটরা। তবে পুলিশের ব্যারিকেড তাদের সামনের দিকে অগ্রসর হতে বাধা দেয়। একপর্যায়ে কিছু প্রার্থীর সঙ্গে পুলিশের টানাটানি ও ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে।

চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধী গ্র্যাজুয়েট পরিষদের ব্যানারে চলা এই আন্দোলন পাঁচ দিন ধরে চলছে। তারা গত ১৯ অক্টোবর রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। গত বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) বিকেলেও প্রায় ৪০-৫০ জন প্রতিবন্ধী গ্র্যাজুয়েট থালা-বাটি নিয়ে ভুখা মিছিল করেন।

সংগঠনের আহ্বায়ক মো. আলী হোসেন বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণভাবে যমুনার দিকে যাচ্ছিলাম, কিন্তু পুলিশ আমাদের পথ আটকে দিয়েছে। আমাদের দাবিগুলো পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।’

তিনি আরও জানান, ‘কর্মসূচির মাধ্যমে তারা সরকারকে বাধ্য করতে চাইছেন যাতে প্রতিবন্ধী বেকারদের জন্য বিশেষ নিয়োগ, সরকারি চাকরিতে বয়সসীমা বৃদ্ধি এবং অন্যান্য সুবিধা নিশ্চিত করা হয়।’
প্রতিবন্ধী গ্র্যাজুয়েটরা জানিয়েছেন, তাদের এই আন্দোলন শুধু চাকরি বা কোটা নিয়ে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর সার্বিক অধিকার ও জীবনের মান উন্নয়নের জন্য। তারা আশা করছেন, সরকার তাদের দাবি পূরণে পদক্ষেপ নেবে এবং শিগগিরই বিশেষ নিয়োগ ও বয়সসীমা বৃদ্ধির বিষয়টি বাস্তবায়িত হবে।

এই সময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির সদস্য সচিব আলিফ হোসেন, ডাকসুর সদস্য ও যুগ্ম আহ্বায়ক রাইসুল ইসলাম, যুগ্ম আহ্বায়ক শেখ কামরুজ্জামান, আব্দুল ওয়াহেদ, কামাল হোসেন পিয়াস এবং প্রতিনিধি আজাদ হোসেন।

প্রতিবন্ধী গ্র্যাজুয়েট পরিষদের পাঁচ দফা দাবি হলো:

  • প্রধান উপদেষ্টার নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে প্রতিবন্ধী বেকারদের জন্য বিশেষ নিয়োগের ব্যবস্থা করা।
  • প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে ২ শতাংশ, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণিতে ৫ শতাংশ স্বতন্ত্র প্রতিবন্ধী কোটা সংরক্ষণ।
  • জাতীয় শ্রুতিলেখক নীতিমালা সংশোধন করে শ্রুতিলেখক মনোনয়নে স্বাধীনতা নিশ্চিত করা।
  • সমাজসেবা অধিদপ্তরের অধীনে ব্রেইলভিত্তিক শিক্ষা কার্যক্রম ও পিএইচটি সেন্টারের শূন্য পদে দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জন্য বিশেষ নিয়োগের ব্যবস্থা।
  • সরকারি চাকরিতে প্রতিবন্ধী প্রার্থীদের বয়সসীমা ৩৫ বছরে উন্নীত করা (সাধারণ প্রার্থীদের জন্য ৩৫ হলে তাদের জন্য ৩৭ বছর নির্ধারণ)।