ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর, ২০২৫

অদৃশ্য শক্তির ছায়াতলে এখনো বেপরোয়া আ.লীগ নেতা ফিরোজ

নিজস্ব প্রতিবেদক, নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত: অক্টোবর ১৬, ২০২৫, ০৭:৩৮ পিএম
লাল বৃত্তে কামরুল হাসান ফিরোজ। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

নারায়ণগঞ্জ জেলার ভুলতা ইউনিয়নে ক্ষমতাবান আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজীর ঘনিষ্ঠ সহযোগী কামরুল হাসান ফিরোজের ‘রাজত্ব’ এখনো বহাল। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের সরকারের পতনের পরেও তার প্রভাব কমেনি। অভিযোগ, তিনি ক্ষমতাবানের হাত বদল করে ইউনিয়নের যুবদল নেতা শাহাদুল্লা মিয়াকে সামনে রেখে জমি দখল, চাঁদাবাজি, সালিশ বাণিজ্যসহ বিভিন্ন অপরাধ চালিয়ে যাচ্ছেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, গত ১৬ বছরে কামরুল হাসান ফিরোজ অবৈধভাবে স্থানীয়দের জমি দখল করেছেন। অভিযোগ অনুযায়ী, আব্দুর রহমান, অ্যাডভোকেট শাহিন মিয়া, জহিরুল হক, সবুজ, অন্তর ইয়ানুস মিয়া, মাহফুজ মিয়া ও বাবুল মিয়ার জমি জোরপূর্বক দখলে নেওয়া হয়েছে। ৫ আগস্টের পর শাহাদুল্লা মিয়ার হাত ধরে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে কামরুল ফিরোজ।

সম্প্রতি, ১২ অক্টোবর সকালে ফাতেমা বেগমের ৫০ শতাংশ জমি জোরপূর্বক দখলের চেষ্টা করা হয়। অভিযুক্তরা শ্রমিক নিয়ে জমির চারপাশে দেওয়াল নির্মাণ ও সাইনবোর্ড টানান। ছবি তুলতে গেলে সাংবাদিক রুবেল শিকদারকে হুমকি ধামকি দেওয়া হয় বলে জানা গেছে।

ভুক্তভোগী ফাতেমা বেগম বলেন, ‘আমার বাপ-দাদার ওয়ারিশ সূত্রে মালিকানা পাই, সেই জমিটি আমার দাদা, বাবা ভোগদখলে ছিলেন। আওয়ামী লীগ আমলে দখলে নিতে হামলা চালায়। গত ৫ আগস্টের পরে তিনি ভুলতা ইউনিয়ন যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহাদুল্লা মিয়া ও তার লোকজনকে সাথে নিয়ে গত রোববার জমি দখলে নিতে আসেন।’ পরে পুলিশে জানালে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে তাদেরকে বুঝিয়ে সরিয়ে দেন। এ ঘটনায় একটি লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।

আরেক ভুক্তভোগী জহিরুল হক বলেন, ‘বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ আমলে আমার জমি জোরপূর্বক দখলে নিয়ে গেছে এই আওয়ামী লীগ নেতা কামরুল হাসান ফিরোজ ও তার লোকজন। আমার কাগজপত্র সবকিছু ঠিক থাকার পরেও কোনো সমাধান পাইনি। জমির কাছে যেতে পারছি। উল্টো প্রতিনিয়ত হুমকি ধামকির মধ্যে থাকতে হচ্ছে। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের পতনের পর ভাবছিলাম, এবার বুঝি জমিটার সুরাহা হবে আমার জমি আমি ফেরত পাব। তা আর হলো না এখন সে খোলস পাল্টে ভুলতা ইউনিয়ন যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহাদুল্লা মিয়ার হাত ধরে সব অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। আমার জমি আমি ফেরত চাই। এ বিষয়ে প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করছি।’



এ বিষয়ে অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা কামরুল হাসান ফিরোজের সাথে যোগাযোগ করতে একাধিকবার ফোন করা হলে তার ব্যবহৃত নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে রূপগঞ্জ থানার ওসি তরিকুল ইসলাম বলেন, ফাতেমা বেগমের অভিযোগ পেয়েছি। ফাতেমা বেগমসহ যারা ভুক্তভোগী রয়েছেন থানায় অভিযোগ করলে সহযোগিতা করা হবে।