শনিবার, ১২ জুলাই, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


মো. জসিম উদ্দিন, বেতাগী

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৫, ২০২৪, ১২:৪২ পিএম

বিলুপ্তর পথে দেশীয় মাছ

মো. জসিম উদ্দিন, বেতাগী

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৫, ২০২৪, ১২:৪২ পিএম

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

উপকূলীয় জনপদ বরগুনার বেতাগীতে বর্ষার এ মৌসুমে নদী-নালা, খাল-বিল ও মাঠ-ঘাট ছেয়ে গেছে নিষিদ্ধ ‍‍`চায়না‍‍` জালে। এ জাল দিয়ে প্রাকৃতিক উৎসে ডিম দিতে আসা মা ও পোনা মাছ অবাধে নিধন করছেন স্থানীয়রা। শুধু চায়না জাল নয়, বাঁশ ও বেতের তৈরি বিভিন্ন চাঁইয়ের কারণে বিলুপ্ত হচ্ছে দেশীয় মাছ। বেতাগী পৌরসভাসহ ইউনিয়নগুলোর হাট জমজমাট হয়ে উঠেছে মাছ ধরার এসব উপকরণে।

জানা গেছে, উপজেলার বিবিচিনি ইউনিয়নের কারিকরপাড়া খাল, গড়িয়াবুনিয়া, পুটিয়াখালী খাল, নাপিতখালী, সদর ইউনিয়নের কবিরাজের খাল, বাসন্ডা, বেড়েরধন, লক্ষ্মীপুরা; হোসনাবাদের উত্তর কাটাখালী, ধনমানিক চত্রা, জলিসা খালসহ বিভিন্ন খাল আর বিলে তিন শতাধিক নিষিদ্ধ জাল ব্যবহার করে স্থানীয় জেলেরা মাছ শিকার করছে অবাধে। শিকারিদের পাতা এসব জালে আটকা পড়ে বিলুপ্তির পথে চিংড়ি, কালিবাউশ, বাইলা, গুইল্লাসহ অসংখ্য পোনা মাছ। এ ছাড়া বিভিন্ন অংশে অবৈধভাবে বাঁধ দিয়ে গতিরোধ করা হচ্ছে পানি প্রবাহের। 

এতে মৎস্য উৎপাদন যেমন ব্যাহত হচ্ছে তেমনি ফসল উৎপাদনও ব্যাহত হচ্ছে। বেহুন্দি জাল দিয়ে মাছ ধরছিলেন স্থানীয় এক যুবক। তিনি বলেন, ‍‍`সবাই তো খালে ধরে কেউ কিছু বলে না। তাই আমিও ধরি। এই এলাকায় বেশির ভাগ লোক ভাসা জাল, কারেন্ট জাল, বেহুন্দি জাল দিয়েই মাছ ধরে।

সরেজমিনে পৌরসভার সাপ্তাহিক হাটে দেখা গেছে, বিভিন্ন এলাকা থেকে ক্রেতা-বিক্রেতারা বাঁশের তৈরি চাঁই, বুচনা ও চরগড়া কিনতে ভিড় জমাচ্ছেন। উপকূলীয় অঞ্চলে বৈশাখ থেকে ভাদ্র মাস পর্যন্ত এই পাঁচ মাস নদী ও খাল-বিল পানিতে পূর্ণ থাকে এবং দেশীয় প্রজাতির বিভিন্ন মাছ বেশি পাওয়া যায় বলে এই সময়কে উপকূলে চাইয়ের মৌসুম হিসেবে ধরা হয়। 

বর্ষার মৌসুমে উপজেলার দুই শতাধিক নারী ও পুরুষ বাঁশ ও বেতের এসব জাল তৈরি করছেন। হাটে চার ধরনের চাই বেচাকেনা হয়। এগুলো হলো খলনী, বুচনি, ময়ূরপঙ্খি ও গোল চাঁই। এর মধ্যে ময়ূরপঙ্খি ও গোল চাঁইয়ের চাহিদাই বেশি। প্রতিটি খলনী চাই বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা, বঁচনি চাঁই ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা, ময়ূরপঙ্খি ১৩০ থেকে ১৬০ টাকা, গোল চাই ৮০ থেকে ১২০ টাকা। এ ছাড়া চাঁইয়ের গড়া বিক্রি হচ্ছে প্রতিটি ৬০ থেকে ১০০ টাকা। প্রতি হাটে প্রায় দেড় থেকে দুই হাজার চাঁইয়ের বেচাকেনা হয়। 

উপজেলার বিবিচিনি, পল্লীমঙ্গল, দেশান্তরকাঠী, ফুলতলা, পুটিয়াখালী, গড়িয়াবুনিয়া, বাসন্ডা, হোসনাবাদ, জলিসা, মোকামিয়াসহ কয়েকটি গ্রাম ঘুরে সারি সারি চায়না জাল দেখতে পাওয়া যায়। এসব গ্রামে যেখানেই একটু পানি রয়েছে, সেখানেই এই জাল পাতা হচ্ছে। এভাবে অবাধে ডিমওয়ালা দেশীয় বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ধরা হচ্ছে। বর্ষাকালে মাছের প্রজননকাল। চায়না জাল দিয়ে মাছ ধরার কারণে নতুন পানিতে মা-মাছ ডিম ছাড়তে পারছে না। এসব কারণে প্রাকৃতিকভাবে মাছের উৎপাদন হ্রাস পাচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

এ বিষয় পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস্য বিভাগের গবেষক ড. লোকমান হোসেন বলেন, ‍‍`প্রজননের সময় ডিমযুক্ত মা-মাছ ধরা পড়লে ধীরে ধীরে দেশীয় মাছ বিলুপ্ত হবে।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা এস এম মাহমুদুল হাসান বলেন, ‍‍`বাঁশের তৈরি চাঁই, বুচনা ও চায়না জাল, কারেন্ট জালসহ যে জাল দিয়ে পোনা মাছ ধরা হয় সেসব জাল আমাদের দেশে নিষিদ্ধ। এসব অবৈধ মাছ ধরার উপকরণ বন্ধ করতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

আরবি/জেডআর

Shera Lather
Link copied!