ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় একজন আন্দোলনকর্মী সমন্বয়ক মো.তারেক আজিজ, যিনি ২০২২ সালের ৩ আগস্ট শেখ হাসিনা পতনের এক দফার কর্মসূচিতে প্রেসক্লাবে অংশ নিয়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলেন। তিনি এখন নিজের নিরাপত্তা এবং জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তার অভিযোগ, জুলাই মাসের গণহত্যাকাণ্ডে জড়িত চিহ্নিত আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসীরা এখনো অবাধে ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং তাকে প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি দিচ্ছে। এই পরিস্থিতিকে তিনি বর্তমান সরকার ও প্রশাসনের অচলাবস্থার প্রমাণ হিসেবে দেখছেন।
তিনি জানান, ২০২২ সালের ৩ আগস্ট তিনি প্রেসক্লাবে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন, যা প্রথম সারির পত্রিকায় রিপোর্ট হয় এবং তার বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে।
এরপর থেকে তিনি একজন সক্রিয় অ্যাক্টিভিস্ট হিসেবে রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনগুলোর সাথে এবং ব্যক্তিগতভাবে হাসিনার পতনের আন্দোলনে যুক্ত ছিলেন।
তার দাবি, ২০২৩ সালের ২৬ অক্টোবর তার বাসায় স্থানীয় আওয়ামী সন্ত্রাসীরা হামলা চালায় এবং তিনি আটক হন। ২০২৪ সালের ২২ জানুয়ারি কাশিমপুর-১ কারাগার থেকে তিনি জামিনে মুক্তি পান।
এরপর বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সম্মুখসারী থেকে ‘ফ্যাসিবাদের পতন ঘটাতে সামান্য লড়াই জারি রাখেন’।
জুলাইয়ের পর থেকে ‘খুনি দমনে’ তিনি বিভিন্ন মামলার আসামি আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের আটকে পুলিশকে সরাসরি তথ্য দিয়ে এবং মাঠ পর্যায়ে বৈধ সহায়তা করে আসছেন।
গত ৪ জানুয়ারি তার বসবাস করা এলাকা রাজধানীর ৫৮ নম্বর ওয়ার্ড রাজাবাড়ি, পোস্তগোলা-কদমতলীতে একজন চিহ্নিত আসামি পলাতক অবস্থা থেকে ফিরে আসে। তিনি তাৎক্ষণিক পুলিশ ডাকলে আসামি পালিয়ে যায়। এবং জনবল সংকটের কারণে পুলিশ তাদের আটকাতে ব্যর্থ হয় বলে অভিযোগ করেন।
সর্বশেষ, আজ সন্ধ্যায় আওয়ামী সন্ত্রাসী আকাশ তার একটি ফেসবুক আইডি থেকে মেসেঞ্জারে তাকে সরাসরি হত্যার হুমকি দেয়। এই ঘটনায় তিনি নিজের নিরাপত্তার চেয়ে জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে অধিক শঙ্কিত বলে উল্লেখ করেন।
তিনি ১৮ জুলাই আরটিভিতে প্রকাশিত একটি ফুটেজের কথা উল্লেখ করেন, যেখানে মেরাজ নগরে এই সন্ত্রাসীরাই মাসুদ মিয়া ও সর্বকনিষ্ঠ শিশু আহাদকে হত্যা করে।
এছাড়াও তিনি বাদি হয়ে যাত্রাবাড়ীতে করা হাছান হত্যা মামলায়ও এদের আসামি বলে জানান। তার জানা মতে, জুলাই-আগস্টে ‘বিপ্লবের স্টারলিনগ্রাদ খ্যাত যাত্রাবাড়ী, শনিরআখড়ায়’ এরা শতাধিক হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত ছিল।
জুলাইয়ের বিপ্লবের এক বছর পেরিয়ে গেলেও এসব আসামির মুক্ত চলাচল এবং হুমকি দেওয়ার দুঃসাহস প্রমাণ করে বর্তমান সরকার ও প্রশাসনের ‘অচলাবস্থা’ বলে ওই অ্যাক্টিভিস্ট মনে করেন।
তারেক আজিজ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এর মধ্যে ‘জুলাই ঘোষণাপত্রও’ দেওয়া হয়নি। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে, এভাবে চলতে থাকলে জুলাই গণহত্যাকাণ্ডে জড়িত অধিকাংশ পুলিশ ও রাজনৈতিক নেতা-কর্মীসহ সকল সন্ত্রাসী দায় মুক্তি পাবে। এবং ধীরে ধীরে বিপ্লবী ছাত্র নেতারা বিপদের মুখে পড়বেন।
তিনি প্রশাসনের নীরব ভূমিকার তীব্র নিন্দা জানান এবং ‘জুলাই যোদ্ধাদের নিয়ে বিপ্লবী রক্ষক দল গড়ে নতুন প্রশাসন গঠনের’ আহ্বান জানান।
অন্যথায় ‘বিপ্লবীদের রক্তের বদলা আদায় হবে না’ বলেও তিনি সতর্ক করেন।
আপনার মতামত লিখুন :