নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার কুমারগাড়ী দাখিল মাদরাসার চারতলা একাডেমিক ভবনের নির্মাণকাজ পাঁচ বছরেও সম্পন্ন হয়নি। এতে খোলা মাঠেই শিক্ষার্থীদের পাঠদান করা হচ্ছে।
জানা গেছে, নির্মাণের দায়িত্বে থাকা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ অসমাপ্ত রেখেই উধাও হয়ে গেছেন। ফলে শ্রেণিকক্ষের অভাবে শিক্ষার্থীদের পাঠদান চলছে খোলা আকাশের নিচে।
প্রকল্পটি ২০২০ সালের মধ্যেই শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত ৭৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। এরই মধ্যে ১ কোটি ৮৫ লাখ ৮০ হাজার টাকা উত্তোলন করে নেওয়া হয়েছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে। অথচ বর্তমানে ২৫ শতাংশ কাজ বাকি রেখেই নির্মাণকাজ বন্ধ। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা।
দশম শ্রেণির ছাত্রী লাবনী আক্তার বলেন, ‘ভর্তি হওয়ার পর থেকেই দেখি ভবনের কাজ বন্ধ। শীত, ঝড়-বৃষ্টি সব কিছু উপেক্ষা করে খোলা আকাশের নিচে ক্লাস করি। নতুন ভবনে ক্লাস করা বোধহয় আমাদের ভাগ্যে নেই।’
মাদ্রাসার শিক্ষক রিনা আক্তার বলেন, ‘একটি কক্ষে গাদাগাদি করে দুটি শ্রেণির ক্লাস নিতে হয়। বৃষ্টির সময় টিনের চাল ফুটো হয়ে পানি পড়ে। এ অবস্থায় পাঠদান একেবারেই অমানবিক।’
২০১৯ সালের ৯ এপ্রিল ১২ কক্ষবিশিষ্ট চারতলা ভবন নির্মাণের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়। ৩ কোটি ২৬ লাখ টাকা বরাদ্দে কাজটি পান দিনাজপুর জেলা আওয়ামী লীগের নেতা শেখ মোহাম্মদ শাহ আলমের মালিকানাধীন মেসার্স মা এন্টারপ্রাইজ অ্যান্ড জিন্নাত আলী জিন্নাহ (জেভি)। ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখনো তা অসমাপ্ত।
শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী হাজেরুল ইসলাম জানান, ঠিকাদারকে ৪৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তিনবার সময় বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু তাও কাজ শেষ হয়নি। চলতি বছরের জুন মাস পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছিল। এর মধ্যে কাজ বন্ধ করে দেয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি। বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের পাওয়া যাচ্ছে না।
মাদ্রাসার সুপার মোছা. ফেরদৌসী বেগম বলেন, ‘ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বারবার অনুরোধ করা হয়েছে। শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরেও একাধিকবার চিঠি দেওয়া হয়েছে, কিন্তু কোনো অগ্রগতি নেই। ফলে ভবনটি এখন মাদকসেবীদের আড্ডাস্থলে পরিণত হয়েছে।’
প্রকৌশলী হাজেরুল ইসলাম জানান, জুনের মধ্যে কাজ শেষ না হলে চুক্তি বাতিল করে নতুন করে দরপত্র আহ্বান করা হবে।