পটুয়াখালীর মহিপুর মৎস্য বন্দরের এক জেলের জালে ধরা পড়েছে ২১ কেজি ৫০০ গ্রাম ওজনের একটি বিশাল কালো পোয়া মাছ। বিরল এই সামুদ্রিক মাছটি স্থানীয়ভাবে ‘দাঁতিনা’ ও ‘ব্ল্যাক ডায়মন্ড’ নামেও পরিচিত।
জানা যায়, ‘এফবি ভাই ভাই’ ট্রলার থেকে গত ৩ দিন আগে গভীর সমুদ্রে অন্যান্য মাছসহ এ বিরল মাছটি ধরা পড়ে।
শনিবার (৮ নভেম্বর) সকালে মাছটি মহিপুর মৎস্য বন্দরের ফয়সাল ফিস আড়তে আনা হলে একনজর দেখতে উৎসুক জনতা ভিড় জমায়। স্থানীয়দের দাবি, সচরাচর এ ধরনের মাছ জেলেদের জালে ধরা পড়ে না।
ফয়সাল ফিস আড়তের ব্যবসায়ী রাজু বলেন, “মাছটি তোলার পর নিলামে এক লাখ টাকা পর্যন্ত দাম উঠেছে। তবে আরও ভালো দামের আশায় মাছটি চট্টগ্রামে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। শুনেছি মাছটির বায়ু থলি (এয়ার ব্লাডার) অত্যন্ত দামি, তাই আশা করছি আরও ভালো দামে বিক্রি করতে পারব।”
স্থানীয় মৎস্য ব্যবসায়ী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “মহিপুর বন্দরে আজ এমন এক মাছ উঠেছে যা সচরাচর দেখা যায় না। এক লাখ টাকার নিলাম এটা সত্যিই অবিশ্বাস্য।”
ইকোফিশ বাংলাদেশের গবেষণা সহকারী বখতিয়ার রহমান জানান, কালো পোয়া একটি বিরল সামুদ্রিক প্রজাতি। এদের দৈর্ঘ্য সাধারণত ৫০ থেকে ১৮০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হয় এবং ওজন ১০ থেকে ২৫ কেজি হলেও কখনও ৫০ কেজিরও বেশি হতে পারে।
তিনি আরও বলেন, বঙ্গোপসাগরের কক্সবাজার, মহেশখালী, সেন্ট মার্টিন, পটুয়াখালী ও বরিশাল উপকূলে এ মাছ দেখা যায়। কাদামাটি বা বালুময় তলদেশে এরা বসবাস করে এবং ছোট মাছ, চিংড়ি ও অন্যান্য সামুদ্রিক প্রাণী খেয়ে বেঁচে থাকে।
কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, “মহিপুর বন্দরে ২১ কেজি ওজনের একটি কালো পোয়া মাছ ধরা পড়েছে এটা খুবই আনন্দের সংবাদ। মাছটির এয়ার ব্লাডার আন্তর্জাতিক বাজারে অত্যন্ত মূল্যবান হওয়ায় একে ‘ব্ল্যাক স্পটেড ক্রোকার’ও বলা হয়।
সরকার ঘোষিত মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞার সুফলেই জেলেরা এখন বড় ও দুষ্প্রাপ্য মাছ ধরতে পারছেন, যা তাদের অর্থনৈতিকভাবে লাভবান করছে।”

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন