রাজবাড়ীজুড়ে এখন উৎসবের আমেজ। হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজাকে ঘিরে সর্বত্র সাজ সাজ রব। প্রতিমাশিল্পীদের ব্যস্ততা, মণ্ডপ সজ্জায় রংতুলির ছোঁয়া—সব মিলিয়ে জেলার বিভিন্ন এলাকায় চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি।
শহরের বিভিন্ন পূজামণ্ডপ ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিমার কাঠামো ও মাটির কাজ শেষ হয়েছে। এখন চলছে রং ও সাজসজ্জার কাজ। দেবী দুর্গা, সরস্বতী, কার্তিক, গণেশসহ সব প্রতিমাকে বর্ণিল রূপে সাজাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন শিল্পীরা। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সব প্রস্তুতি শেষ করতে রাত জেগে কাজ করছেন তারা।
প্রতিমা শিল্পী বিনোদ পাল জানান, এ বছর তিনি রাজবাড়ীর ছয়টি মন্দিরে প্রতিমা তৈরি করছেন। কয়েকটি কাজ ইতোমধ্যেই শেষ হলেও বাকি মন্দিরগুলোর জন্য দিন-রাত পরিশ্রম করতে হচ্ছে। তবে খরচের তুলনায় পারিশ্রমিক কম হওয়ায় হতাশার কথাও তুলে ধরেন তিনি।
রাজবাড়ী জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর জেলায় মোট ৪৩৮টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে রাজবাড়ী সদর ও পৌরসভায় ১০৯টি, গোয়ালন্দে ২৫টি, বালিয়াকান্দিতে ১৪৯টি, কালুখালীতে ৫৭টি এবং পাংশায় ৯৮টি পূজামণ্ডপে আয়োজন করা হয়েছে।
ধর্মীয় পঞ্জিকা অনুযায়ী, মহালয়ার মাধ্যমে দুর্গোৎসবের সূচনা হয়েছে ২১ সেপ্টেম্বর। ষষ্ঠী ২৮ সেপ্টেম্বর, সপ্তমী ২৯ সেপ্টেম্বর, অষ্টমী ৩০ সেপ্টেম্বর, নবমী ১ অক্টোবর এবং বিজয়া দশমী ২ অক্টোবর পালিত হবে।
নিরাপত্তার বিষয়ে জেলা পূজা উদযাপন ফ্রন্টের আহ্বায়ক অনিন্দিতা গুহ (বানী) বলেন, প্রতিটি মণ্ডপে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনসহ বাড়তি সতর্কতা নেওয়া হয়েছে। নিয়মিত পরিদর্শনও চলছে।
পরিষদের সাধারণ সম্পাদক স্বপন কুমার দাস জানান, প্রতিটি মণ্ডপে সিসি ক্যামেরার পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবকরাও দায়িত্বে থাকবেন।
পুলিশ সুপার মো. কামরুল ইসলাম বলেন, শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে পূজা সম্পন্ন করতে বিশেষ টহল, আনসার, গ্রাম পুলিশ ও গোয়েন্দা নজরদারি নিশ্চিত করা হয়েছে। প্রয়োজনে র্যাব ও সেনাবাহিনীও মাঠে থাকবে।
জেলা প্রশাসক সুলতানা আক্তার জানান, পূজা নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কঠোর নজরদারির পাশাপাশি সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হবে বলেও আশ্বস্ত করেন তিনি।
উৎসবের আমেজে এখন রাজবাড়ীজুড়ে সাজ সাজ রব, তাদের অপেক্ষা কেবল দেবী দুর্গার আগমনের।