ভারতের কেন্দ্রশাসিত লাদাখে সহিংসতা উসকে দেওয়ার অভিযোগে আন্দোলনের নেতা সোনাম ওয়াংচুককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এর একদিন আগেই তিনি বলেছিলেন, ‘এই আন্দোলনের জন্য আমাকে যেকোনো সময় গ্রেপ্তার করা হলে আমি খুশি হবো।’ ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়েছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ওয়াংচুকের অলাভজনক সংস্থা ‘স্টুডেন্টস এডুকেশনাল অ্যান্ড কালচারাল মুভমেন্ট অব লাদাখ’-এর বিদেশ থেকে অর্থ গ্রহণের নিবন্ধন বাতিল করে। ফরেন কন্ট্রিবিউশন (রেগুলেশন) অ্যাক্ট বা এফসিআরএ ২০১০-এর আওতায় বিদেশি তহবিল গ্রহণের অনুমোদন প্রত্যাহার করা হয়।
২০১৮ সালের র্যামন ম্যাগসেসে পুরস্কারপ্রাপ্ত ওয়াংচুক অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, তাদের সংস্থা বিদেশি অনুদান নেয়নি, বরং জাতিসংঘ, সুইস ও ইতালির কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ব্যবসায়িক লেনদেন করেছে এবং সব কর পরিশোধ করেছে। তিনি বলেন, ‘ওরা এটিকে বিদেশি অনুদান হিসেবে ভুল ধরেছে। আমি মনে করি এটি কেন্দ্রের একটি ভুল বোঝাবুঝি।’
২০১৯ সালে কেন্দ্র যখন জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করে লাদাখকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত করেছিল, তখন এলাকাবাসী উচ্ছ্বাস প্রকাশ করলেও পরবর্তী সময়ে রাজ্য মর্যাদার দাবিতে উত্তেজনা বাড়তে থাকে। রাজনৈতিক শূন্যতার অভিযোগে বৌদ্ধ অধ্যুষিত লেহ ও মুসলিম অধ্যুষিত কারগিলের রাজনৈতিক ও ধর্মীয় সংগঠনগুলো যৌথভাবে আন্দোলনে নেমেছে।
কেন্দ্রের অভিযোগ, সংলাপ প্রক্রিয়া চলতে থাকা সত্ত্বেও অনশন ভাঙেননি ওয়াংচুক। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন কমিটির মাধ্যমে আলোচনার অগ্রগতি সত্ত্বেও কিছু রাজনৈতিক স্বার্থান্বেষী ব্যক্তি সংলাপ নস্যাৎ করার চেষ্টা করছেন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও জানায়, সহিংসতার মধ্যেই তিনি অনশন ভেঙে অ্যাম্বুলেন্সে গ্রামে ফিরে যান এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে উল্লেখযোগ্য কোনো উদ্যোগ নেননি।
গ্রেপ্তারের আগের দিন ওয়াংচুক বলেন, ‘এই দাবির জন্য আমাকে যেকোনো সময় গ্রেপ্তার করা হলে আমি আনন্দিত হবো।’ তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘জেলে থাকা সোনাম ওয়াংচুক সংলাপে অংশ নেওয়া সোনম ওয়াংচুকের চেয়ে কম নয়, বরং বেশি প্রভাব ফেলবে। এতে মানুষ আরও বুঝবে দেশটি কীভাবে পরিচালিত হচ্ছে।’