রবিবার, ১৩ জুলাই, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


মাহাবুল ইসলাম, রাজশাহী

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২০, ২০২৪, ০৮:৫৩ পিএম

‘পরীদিঘি’র শাপলা ফুলের দুরন্ত শৈশব, বরেন্দ্রেরই প্রতীকী

মাহাবুল ইসলাম, রাজশাহী

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২০, ২০২৪, ০৮:৫৩ পিএম

অবাক চাহুনির দুরন্ত শৈশবের হাজার বছরের ‘প্রতিকী’ ছবির শিশু আব্দুল্লাহ। ছবিটি রাজশাহীর পবা উপজেলার খড়খড়ির পাশের একটি পরিত্যক্ত ডোবা থেকে তুলেছেন প্রতিবেদক মাহাবুল ইসলাম।

অবাক চাহুনির দুরন্ত শৈশবের হাজার বছরের ‘প্রতিকী’ ছবির শিশু আব্দুল্লাহ। ছবিটি রাজশাহীর পবা উপজেলার খড়খড়ির পাশের একটি পরিত্যক্ত ডোবা থেকে তুলেছেন প্রতিবেদক মাহাবুল ইসলাম।

‘তুমি সুতোয় বেঁধেছো শাপলার ফুল, নাকি তোমার মন, আমি জীবন বেঁধেছি, মরণ বেঁধেছি, ভালোবেসে সারাক্ষণ’- জহির রায়হানের ‘হাজার বছর ধরে’ অমর উপন্যাসের সে গানের সুর-ছন্দ-শব্দের পরতে পরতে মিশে আছে বরেন্দ্রের গ্রামীণ শৈশব। উপন্যাসের নায়িকা ‘টুনি ও পরীদিঘি’ বরেন্দ্রের লাল মাটির প্রাণ-প্রকৃতি ও শৈশবেরই ‘উজ্জ্বল প্রতীকি’ রুপেই ধরা দিচ্ছে এখনও। প্রযুক্তির উৎকর্ষতা হাজার বছরের শৈশব স্মৃতিকে যে এখনো ম্লান করতে পারে নি; তা বরেন্দ্রের মেঠোপথ কিংবা পিচঢালা পথ বেয়ে হাঁটে চললেই অনুভব করা যায়।

দূরন্ত শৈশব বলতে যা বোঝায় তা বরেন্দ্রের দারিদ্রতায় নিমগ্ন হাজারো শিশুর শৈশবে এখনও একটু বেশিই প্রতিফলিত হয়। যা টুনির মতো রাজশাহীর পবা উপজেলার খড়খড়ির দুরন্ত শিশু আব্দুল্লাহ ও সমজান হোসেনের শৈশবকেও পূর্ণতা দেয়।

ঋতু চক্রে এখন বরষা। বরষায় বরেন্দ্রের প্রাণ-প্রকৃতি সেজেছে নিজ রুপে। খাল-বিল-ঝিল-ডোবায় ফুটেছে শাপলা, পদ্ম, কচুরিপনাসহ বার্ণিল নানা ফুল। তবে সবার নজর ও মন শাপলাকেই ভিন্ন আবেগে ছুঁয়ে যায়। কেন না শাপলা আমাদের জাতীয় ফুল। যে ফুলের রং-ঢং-মাধুর্য মিশে আছে বাঙালির আবেগ-ভালোবাসায়। আর শৈশবের পরতে পরতে শাপলাবিলাসী জল্পনা-কল্পনা!

বেলা তখন ১০ টা। সূর্যটা তেজি মনোভবে জেগে উঠছে। মহাসড়কের পাশে সূর্য যখন পরিত্যক্ত বিশাল ডোবায় পানিতে পড়ছে, তা চকচক করছে। সূর্যের আলোর সে বিচ্ছুরণ যখন শাপলায় পূর্ণ ডোবায় আবিষ্কার করা যায়; তখন সে সৌন্দর্য কেমন হয়, তা নিজ চক্ষে না দেখলে, মনে হবে এ আর তেমন কি? ভাবনাটা লেখকেরও মনে এসেছিলো  বৈ কি!

অবাক চাহুনির দুরন্ত শৈশবের হাজার বছরের ‘প্রতিকী’ ছবির শিশু আব্দুল্লাহ। ছবিটি রাজশাহীর পবা উপজেলার খড়খড়ির পাশের একটি পরিত্যক্ত ডোবা থেকে তুলেছেন প্রতিবেদক মাহাবুল ইসলাম।

যা হোক, শব্দে সে রুপ মাধুর্য্য তুলে ধরে যথার্থ মূল্যায়ন অসম্ভব। প্রতিবেদককে দেখে সমজানের হাসির খলখলানিসহ অবাক চাহুনি, দেখেও না দেখার ভান করে শাপলার গাছসহ জঙ্গল থেকে ‘খৈ’ (সাধারণ মাকই ও খৈ নামে ডাকা হয়। শাপলার পাতা খসে পরিপুষ্ট খাদ্যযোগ্য বস্তু) খুঁজতে থাকা, একটু এগিয়ে এসে কয়েকটা ফুল তুলে ‘ভাইয়া নেন এটা আপনার জন্য’ বলা আব্দুল্লাহর স্বাগত জানানো সবাই চিরায়ত বাংলার গ্রামীণ রুপে মিশে আছে হাজার বছর ধরে। যদিও এটা উপন্যাসের পরীদিঘির মতো ওতটা সমৃদ্ধ কোন দীঘি নয়; তবে শাপলাগুলো ওই দুই শিশু ডোবাটাকেই বিশাল কল্পনার রাজ্য বানিয়েছে।

আব্দুল্লাহ ও সমজান জানায়, তারা কয়েক সপ্তাহ আগে থেকেই এখানে আসে। ফুল খেলার জন্য কয়েকটা তোলে। সবগুলো ফুল তারা তোলে না। কারণ তারা মূলত এখানে আসে ফুলের মাকই বা খৈ খুঁজতে। একারণেই তারা ফুলগুলো সরিয়ে দিয়ে একে একে মাকই খুঁজছিলেন। এটি খেতেও খুবই সুস্বাদু।

তারা আরও জানায়, তারা দুই বন্ধু। দিনের একটা বড় সময় তারা একসঙ্গে খেলাধুলা করেন। আর এই পরিত্যাক্ত বিশাল ডোবাটি তাদের বাড়ির পাশেই। বর্ষা মৌসুমে এখানে পানি থাকে, আর শাপলা ফুটে। অন্য সময় এখানে আবাদ করা হয়। কিছুটা দুর্ভোগ হলেও বাড়ির পাশে পরিত্যক্ত এ জায়গাটি বর্ষা মৌসুমেই তাদের স্বপ্নের মতো হয়ে থাকে।

প্রতিবেদনের এই পরিত্যক্ত ডোবাটি রাজশাহীর বিচিত্র সৌন্দর্যমন্ডিত খাল-বিল-ঝিলের প্রতিনিধিত্ব না করলেও প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যের একটি বিশাল অংশকে ধারণ করে। বরেন্দ্রের এমন হাজারো দুরন্ত শৈশব স্মৃতি হতে পারে নতুন কোন শৈশব স্মৃতিময় গল্পের উপজীব্য।

রূপালী বাংলাদেশ

Shera Lather
Link copied!