শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলায় ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ‘কাবিখা’ ও ‘কাবিটা’ কর্মসূচির আওতায় বাস্তবায়নাধীন বেশির ভাগ প্রকল্পেই দেখা দিয়েছে চাঞ্চল্যকর দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা দাবি করেছেন, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার (পিআইও) দপ্তরে ঘুষ না দিলে কাজ শুরু করা যায় না।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, এ বছর গোসাইরহাটে ১ কোটি ২৬ লাখ টাকার বেশি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে নগদ অর্থ, গম ও চাল মিলিয়ে। যার বাজারমূল্য প্রায় ১ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। তবে অনুসন্ধানে জানা গেছে, প্রকল্পের প্রায় অর্ধেক অর্থই খরচ হচ্ছে অন্য খাতে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য ও প্রকল্প সভাপতিরা অভিযোগ করেছেন, প্রতি লাখ টাকায় ১৫-২০ হাজার টাকা ঘুষ দিতে হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ইউপি সদস্য বলেন, কোনো কাজ শুরু করতে চাইলে আগে টাকা জমা দিতে হয়, না দিলে ফাইল আটকে রাখে।
কুচাইপট্রি ইউপি সদস্য রুস্তম সরদার বলেন, আমার প্রকল্পের টাকার ১৫ শতাংশ অফিসে রেখে দেওয়া হয়েছে। অফিস সহকারী সজল সাহা ও বদিয়ার রহমান এতে জড়িত।
নলমুড়ি ইউনিয়নের পাঁচকাঠি গ্রামের একটি রাস্তা প্রকল্পে ৩ লাখ ৫ হাজার টাকা বরাদ্দ থাকলেও স্থানীয়দের দাবি, সেখানে কোনো কাজই হয়নি।
গ্রামবাসী দুলাল আকন বলেন, এই রাস্তায় এক আঁটি মাটিও ফেলা হয়নি।
এ বিষয়ে ইউপি সদস্য সিদ্দিকুর রহমান ঢালী বলেন, একটা খাল ভরাট করেছি।
চরমনপুরা এমরানিয়া নূরানি মাদ্রাসা মাঠ ভরাট প্রকল্পেও একই অভিযোগ। সভাপতি সোবাহান বাবুর্চি বলেন, ৩ লাখ টাকার প্রকল্পে অফিসে ৫০ হাজার টাকা দিতে হয়েছে।
এ বিষযে জানতে চাইলে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) ইকবাল কবির বলেন, আমি এখন ব্যস্ত, পরে অফিসে এসে কথা বলুন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আহমেদ সাব্বির সাজ্জাদ বলেন, এখনো তার বিরুদ্ধে কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সরকারি হিসাব অনুযায়ী, বরাদ্দের ১৫ শতাংশ হারে ঘুষ নেওয়া হলে প্রায় ২৭ লাখ ৭৫ হাজার টাকার হিসাব নেই। এ অর্থ কার হাতে গেছে, কোথায় ব্যয় হয়েছে, সে বিষয়ে মুখ খোলেননি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।