রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


শেরপুর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৬, ২০২৫, ১১:১৩ পিএম

গারো পাহাড়ের মূল্যবান লাল বালু লুট হচ্ছে অবাধে

শেরপুর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৬, ২০২৫, ১১:১৩ পিএম

রাতের আঁধারে মাহিন্দ্র গাড়িতে করে পাচার করা হচ্ছে লাল বালু। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ 

রাতের আঁধারে মাহিন্দ্র গাড়িতে করে পাচার করা হচ্ছে লাল বালু। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ 

মেঘালয়ের কোল ঘেঁষা সীমান্তবর্তী জেলা শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার গারো পাহাড় এলাকার বিভিন্ন পাহাড়ি নদী ও ঝোড়া থেকে মূল্যবান লাল বালু উত্তোলন করে দীর্ঘদিন ধরে রাতের আঁধারে পাচার করছে কথিত রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থাকা প্রভাবশালী বালুখেকো সিন্ডিকেট।

উপজেলা প্রশাসন বিভিন্ন সময়ে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে অভিযান চালিয়ে অনেককে জেল–জরিমানার আওতায় আনলেও থামছে না লাল বালুর অবৈধ উত্তোলন। উত্তোলিত এসব বালুর মধ্যে মূল্যবান খনিজ বালুও রয়েছে। ফলে সরকার হারাচ্ছে মূল্যবান সম্পদ ও রাজস্ব।

দীর্ঘ অনুসন্ধানে জানা গেছে, সীমান্তবর্তী গারো পাহাড়ের গজনী বিট এলাকার বাকাকুড়া, গজনী, গান্ধীগাঁও, জিয়া খাল, সন্ধ্যাকুড়া, বালিঝুড়ী সংলগ্ন তাওয়াকুচার সোমেশ্বরী ও মহারশি নদীর বিভিন্ন পয়েন্টসহ ছোট-বড় নদী ও খাল থেকে প্রতিদিনই নানা কৌশলে বালু উত্তোলন করা হয়।

এরপর রাতের আঁধারে কিংবা ভোরে মাহিন্দ্রা ট্রাক, ট্রলি, ভ্যান ও অটোরিকশায় এসব বালু ঝিনাইগাতীর বিভিন্ন গ্রামীণ সড়ক হয়ে পাচার হয়ে যায় শেরপুর শহর ও আশপাশের বাজিতখিলা, তাতালপুর, কালিগঞ্জসহ বিভিন্ন সেলস পয়েন্টে—প্রশাসনের নাকের ডগায়ই চলছে এসব বিক্রি।

এর আগে জেলা প্রশাসন প্রজ্ঞাপন জারি করে শেরপুরের সীমান্তবর্তী ঝিনাইগাতী, শ্রীবরদী ও নালিতাবাড়ী উপজেলায় বালু উত্তোলন ও পরিবহন নিষিদ্ধ করেছে। তবে এখন শহরের আশপাশে বিভিন্ন সেলস পয়েন্টে প্রকাশ্যে লাল বালু বিক্রি করায় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে সচেতন মহলে প্রশ্ন উঠেছে।

বাজিতখিলা বাজারে বালু পরিবহন কাজে নিয়োজিত ঝিনাইগাতীর ডাকাবর এলাকার এক মাহিন্দ্রা চালকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতি মাহিন্দ্রা বালু ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা, ট্রলি সাড়ে ৭ হাজার টাকা এবং অটোভ্যান ২,৫০০ টাকায় বিক্রি করা হয়। প্রতিবেদক বিস্তারিত জানতে চাইলে তিনি শেরপুর শহরের এক বালু ব্যবসায়ীর সঙ্গে ফোনে কথা বলিয়ে দেন।

রাতের আঁধারে মাহিন্দ্র গাড়িতে করে পাচার করা হচ্ছে লাল বালু। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ 

নিজ পরিচয় প্রকাশ না করে ওই ব্যবসায়ী বলেন, পুলিশ প্রশাসন ও ফরেস্ট অফিসকে ‘ম্যানেজ’ করেই চলছে এ অবৈধ বালু ব্যবসা। এ ছাড়া ঝিনাইগাতীর বাকাকুড়া এলাকার সাইফুলসহ কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তিও এতে জড়িত বলে তিনি জানান।

বালু পাচারের সময় আরেক অটোরিকশাচালক, বাকাকুড়া এলাকার হাসমত আলী জানান, আমরা প্রতিদিন ভ্যান যোগে বালু এনে শেরপুর শহরে ২,৫০০ টাকায় বিক্রি করি। কাউকে টাকা দিতে হয় কিনা জানতে চাইলে তিনি কোনো উত্তর দেননি।

ঝিনাইগাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আল আমিন বলেন, ‘আমাদের টহল টিম সবসময় রাস্তায় টহল দেয়। তবে কোনো সময় আসামি ধরার কাজে ফোর্স ব্যস্ত থাকলে সুযোগে কেউ বালু পাচার করতে পারে।’ তিনি আরও বলেন, ‘পুলিশ বালু পাচারে জড়িত নয়।’

রাংটিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. আ. করিম বলেন, ‘সাইফুলের একটি বালুবাহী মাহিন্দ্রা ট্রাক বালুসহ আমার কাছে আটক আছে। আমার এরিয়া থেকে কোনো বালু উত্তোলন হয় না। এখন পাহাড় থেকে নয়, বরং পাহাড়ি ঝোড়া থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে।’

ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আশরাফুল আলম বলেন, ‘আমরা বালু পাচারকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছি। অনেককে আটক করে সাজা দিয়েছি। আজও (৬ ডিসেম্বর) এসিল্যান্ডের মাধ্যমে অভিযান চালিয়ে দুটি গাড়ি আটক করা হয়েছে। এ ধরনের কাজে যারা জড়িত থাকবে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Link copied!