ঢাকা সোমবার, ০৭ জুলাই, ২০২৫

গোপালপুরে জালের ব্যাবসায় ধস, দিশেহারা ব্যবসায়ীরা

গোপালপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: জুলাই ৬, ২০২৫, ০৩:৫৭ পিএম
গোপালপুর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী জাল ব্যাবসা। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী জাল ব্যাবসা পড়েছে চরম সংকটে। দীর্ঘদিন বৃষ্টিহীন আবহাওয়ার কারণে নদী-নালা ও জলাশয়গুলোতে পানি শূন্যতা দেখা দিয়েছে। ফলে মাছ ধরার কার্যক্রম প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে অবৈধ ও নিষিদ্ধ ‘চায়না জাল’-এর ব্যাপক ব্যবহার, যা বৈধ জাল ব্যবসায়ীদের জন্য তৈরি করেছে ভয়াবহ বিপর্যয়।

স্থানীয় জেলেরা জানান, পানির অভাবে এখন মাছ ধরা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। আর যেটুকু মাছ পাওয়া যায়, তাও চায়না জালের ফাঁদে আটকে পড়ে। এসব জাল এতটাই সূক্ষ্ম যে পোনা মাছও রেহাই পায় না। এতে মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, যা ভবিষ্যতে মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে।

গোপালপুর বাজারের প্রবীণ জাল ব্যবসায়ী জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘২৫-৩০ বছর ধরে জালের ব্যাবসা করছি, কিন্তু এমন খারাপ সময় কখনো দেখিনি। বৃষ্টি নেই, পানি নেই মানুষ জালই কিনছে না। আবার চায়না জালের কারণে বৈধ জালেরও চাহিদা নেই। এখন দোকান বন্ধ রেখে ঘরে বসে থাকতে হচ্ছে, ধার-দেনা করে সংসার চালাতে হচ্ছে।’

স্থানীয়রা মনে করেন, চায়না জালের অনুপ্রবেশ বন্ধ না হলে এবং পানি সংকট অব্যাহত থাকলে গোপালপুরের ঐতিহ্যবাহী জাল শিল্প বিলুপ্তির পথে চলে যাবে। তারা অবৈধ জালের বিরুদ্ধে প্রশাসনের কঠোর অভিযান এবং এসব জাল আমদানি ও বিক্রি নিষিদ্ধ করার দাবি জানান।

এ বিষয়ে গোপালপুর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা সৌরভ কুমার দে বলেন, ‘চায়না জাল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। আমরা নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছি। তবে এর বিরুদ্ধে জনসচেতনতা গড়ে তোলা এখন সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন।’

জেলেদের জীবিকা, পরিবেশ সংরক্ষণ এবং মাছের প্রজনন রক্ষায় জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন স্থানীয়রা। তাদের মতে, এখনই কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে গোপালপুরের একটি সমৃদ্ধ ঐতিহ্য হারিয়ে যাবে।