ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে ইতালিতে থাকা স্ত্রীকে ভিডিও কলে রেখে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন শামীম আকতার (৪০) নামে এক নাট্যকর্মী।
সোমবার (২৭ অক্টোবর) বিকেলে জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার বড়বাড়ী ইউনিয়নের কাশিডাঙ্গা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
শামীম আকতার ওই গ্রামের পজির উদ্দীনের ছেলে। স্থানীয় ও বেসরকারি টেলিভিশনের নাটকে অভিনয়ের কারণে এলাকায় নাট্যকর্মী হিসেবে বেশ পরিচিত ছিলেন তিনি।
শামীম আকতারের ভাই জাপান জানান, ইতালিতে থাকা ভাবি মোবাইলে জানান যে, শামীম ঘরের ভিতর গলায় ফাঁস দেওয়ার চেষ্টা করছেন। এই খবর শুনে বাজার থেকে ছুটে আসেন তিনি। দেখেন, তিনি পৌঁছানোর আগেই মারা গেছেন শামীম। এ সময় দরজা ও বাড়ির গ্রিল বন্ধ ছিল। পরে দরজা ভেঙে ঘরের ভিতর ঢুকে দেখেন ঝুলন্ত অবস্থায় আছেন শামীম।
স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দুই মাস আগে ৩০ লাখ টাকা টাকা খরচ করে ইতালিতে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন শামীম আকতার ও স্ত্রী মুক্তা আক্তার। ভিসা জটিলতার কারণে স্ত্রী চলে গেলেও স্বামী আটকে যান। চেষ্টা করছিলেন, ভিসা জটিলতা কাটিয়ে স্ত্রীর কাছে যাওয়ার।
শামীমের ভাই জানান, ‘ইতালিতে ভাবি যাওয়ার পর কাজে যোগ দিতে পারেনি। তার ভরণ-পোষণের জন্য প্রতি মাসে ৭০ হাজার টাকা পাঠাতে হতো। টাকার জন্য খুব চাপে ছিল শামীম। আজ কী হয়েছে, কেউ বলতে পারছি না।’
প্রতিবেশীরা বলছেন, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রচণ্ড ভালোবাসা ছিল। এক মুহূর্ত দুজনের বিচ্ছেদ সহ্য করতে পারতেন না শামীম ও তার স্ত্রী। দুই প্রান্তে দুজন এবং টাকার দুশ্চিন্তায় শামীম এমন পথ বেছে নিয়েছেন বলে ধারণা অনেকের।
বালিয়াডাঙ্গী টাইগার নাট্যগোষ্ঠীর সদস্য নাট্যকর্মী আশরাফুল ইসলাম জানান, ‘শামীম সচেতন ব্যক্তি ছিলেন। তার অভিনয় দেখে আমরা অনুপ্রাণিত হতাম। সেই শামীম এমন অঘটন ঘটাবে, ভাবতে পারেননি কেউ। তার মৃত্যুতে সবাই শোকাহত।’
বালিয়াডাঙ্গী থানার ওসি (তদন্ত) দিবাকর অধিকারী জানান, ঘটনাস্থলে পুলিশ প্রাথমিক সুরতহাল প্রতিবেদনের কাজ করছে। পরিবারের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলার পর বাকি বিষয়ে বলা যাবে।



