ঢাকায় অবস্থিত অরাজনৈতিক সামাজিক সংগঠন চট্টগ্রাম সমিতি-ঢাকা-এর কার্যালয় বর্তমানে অবৈধ দখলে রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন প্রতিষ্ঠানটির জীবন সদস্যরা।
তারা বলেন, রাজধানীর তোপখানা রোডে অবস্থিত সমিতির কার্যালয়ে বহিরাগতদের শোডাউন এবং রাত্রীকালীন অবস্থান, আদালতের রায় অমান্য করে স্বাভাবিক কার্যক্রমে বাধাদান ও আর্থিক জালিয়াতির মাধ্য অর্থ আত্মসাৎ করা হচ্ছে।
রোববার (১২ অক্টোবর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এসব অভিযোগ করেন সমিতির জীবন সদস্যরা। এসময় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম সমিতি-ঢাকা-এর আরিফ উদ্দিন, প্রকৌশলী জয়নুল আবেদীন প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করে বলা হয়, এম এ হাশেম রাজু নামের এক ব্যক্তি, যিনি চট্টগ্রাম সমিতি-ঢাকা’র জীবন সদস্য নন, তিনি একটি মনগড়া এডহক কমিটি গঠন করে জোরপূর্বক সমিতি দখলে নিয়েছেন।
নিজেকে স্বঘোষিত আহ্বায়ক দাবি করছেন। তার নেতৃত্বে একটি চক্র দিনের বেলায় কার্যালয়ের নিচে শোডাউন এবং রাতে ভবনে অবৈধভাবে অবস্থান করছে।
জীবন সদস্যদের অভিযোগ, রাজু গং বিনা নির্বাচনে ক্ষমতা দখল করে সমিতির প্যাড ও রসিদ ব্যবহার করে ভবনের ভাড়াটিয়াদের কাছ থেকে ভাড়া আদায় করছেন, যা সরাসরি অর্থ আত্মসাতের শামিল।
১১৫ বছরের ঐতিহ্যে ‘কালো অধ্যায়’ উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, চট্টগ্রাম সমিতি-ঢাকা ১১৫ বছরের পুরনো, একটি অরাজনৈতিক ও সমাজসেবামূলক সংগঠন। এর ইতিহাসে কখনও এত অনিয়ম ও দখলদারিত্বের ঘটনা ঘটেনি। আমরা সমিতির ভাবমূর্তি রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ।
নির্বাচন কমিশন গঠন হলেও কার্যক্রমেও বাধা দেওয়া হচ্ছে। অথচ সংগঠনের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, বর্তমান কার্যনির্বাহী কমিটির মেয়াদ শেষ হবে ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫। নিয়ম অনুযায়ী ৩ মাস আগেই ২০ জুলাই ২০২৫ তারিখে একটি ৫ সদস্যবিশিষ্ট নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার করা হয় সাবেক অতিরিক্ত সচিব ও চট্টগ্রাম সমিতি-ঢাকা’র সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও উপদেষ্টা পরিষদ মো. নাজিম উদ্দিন চৌধুরী।
নির্বাচন কমিশনার হিসেবে রয়েছেন সাবেক অতিরিক্ত সচিব ও চট্টগ্রাম সমিতি-ঢাকা’র জীবন সদস্য মোহাম্মদ হাবিবুল কবির চৌধুরী, সাবেক অতিরিক্ক সচিব (পিআরএল) ও চট্টগ্রাম সমিতি-ঢাকা’র জীবন সদস্য মোহাম্মদ মুনীর চৌধুরী, বাণিজ্য মন্ত্রনালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও চট্টগ্রাম সমিতি-ঢাকা’র জীবন সদস্য ড. নাজনীন কাউসার চৌধুরী এবং ডেপুটি এটর্নি চেনারেল ও চট্টগ্রাম সমিতি-ঢাকা’র জীবন সদস্য ব্যারিস্টার মোহাম্মদ ওসমান চৌধুরী।
জীবন সদস্যরা জানান, এই নির্বাচন কমিশনের সদস্যরা ভবনে ঢুকতে পারছেন না এবং স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনায় বাধা সৃষ্টি করা হচ্ছে। ফলে সমিতির গণতান্ত্রিক ও গঠনতান্ত্রিক নির্বাচন আয়োজন নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এ অবৈধ দখল ও আর্থিক অনিয়মের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে ১৯ এপ্রিল ২০২৫ তারিখে শাহবাগ থানায় একটি এজাহার দায়ের করা হয়েছে। পাশাপাশি প্রশাসনের সর্বোচ্চ মহলে সহযোগিতা চেয়ে তারা যোগাযোগ করছেন।
এসময় চট্টগ্রাম সমিতি-ঢাকা’র জীবন সদস্যদের পক্ষ থেকে বলা হয়, আমাদের একটাই দাবি — গঠনতন্ত্র অনুসারে নির্বাচন হোক। বহিরাগতদের অবৈধ দখলদারিত্ব, চাঁদাবাজি ও জালিয়াতি বন্ধে অবিলম্বে প্রশাসনের কার্যকর হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন