ঢাকা মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর, ২০২৫

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি কামালের মোট সম্পদ কত?

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: নভেম্বর ১৮, ২০২৫, ১০:১১ এএম
সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। ছবি - সংগৃহীত

জুলাই-আগস্টের হত্যাকাণ্ডের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি তাদের সম্পদ বাজেয়াপ্তের আদেশও দেওয়া হয়েছে।

গতকাল সোমবার (১৭ নভেম্বর) দুপুরে বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ রায় ঘোষণা করা হয়। এ সময় ট্রাইব্যুনালের অন্য সদস্য ছিলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং বিচারক মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

আদালতে সম্পদ বাজেয়াপ্তের আদেশের পর অনেকের মনে কৌতূহল তৈরি হয়েছে—আসাদুজ্জামান খানের মোট সম্পদ আসলে কত?

সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ঢাকা-১২ আসন থেকে নির্বাচনে অংশ নিয়ে সংসদ সদস্য হয়েছিলেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি যে হলফনামা দিয়েছিলেন, তাতে ঘোষিত স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের তথ্য পাওয়া যায়।

আসাদুজ্জামান খান হাতে নগদ দেখিয়েছিলেন ৮৪ লাখ টাকার কিছু বেশি। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা দেখান ৮২ লাখ টাকার মতো। বন্ড ও শেয়ার ছিল প্রায় ২৪ লাখ টাকার। ডাকঘর, সঞ্চয়পত্র অথবা স্থায়ী আমানত দেখিয়েছিলেন ২ কোটি ১ লাখ টাকা।

তিনি দুটি মোটরগাড়ির দাম দেখিয়েছিলেন ১ কোটি ৬১ লাখ টাকা। তার ইলেকট্রনিক সরঞ্জাম ও আসবাব ছিল ২ লাখ টাকার। তিনি ঋণ বাবদ ব্যবসার মূলধন দেখিয়েছিলেন ২ কোটি ২০ লাখ টাকার। স্বর্ণ দেখান ১০ ভরি, তবে দাম উল্লেখ ছিল না।

হলফনামা অনুযায়ী, আসাদুজ্জামান খানের কৃষিজমির পরিমাণ ১৭১ শতাংশ (৫ বিঘার বেশি), যার অর্জনকালীন মূল্য ১ কোটি ৬ লাখ টাকা। অকৃষিজমি সাড়ে ১৮ শতাংশ, যার অর্জনকালীন মূল্য সাড়ে ৫৮ লাখ টাকা। তিনি বাড়ি ও অ্যাপার্টমেন্টের ঘরে দুটি সম্পদের মূল্য দেখিয়েছেন। একটি গ্রামের বাড়ি বলে উল্লেখ করেছেন, যার অর্জনকালীন মূল্য ৮০ লাখ টাকা। অন্য সম্পত্তিটির মূল্য দেখানো হয়েছে প্রায় ১৩ লাখ টাকা।

সব মিলিয়ে আসাদুজ্জামান খানের সম্পদের অর্থমূল্য দাঁড়ায় প্রায় ১০ কোটি ২৫ লাখ টাকা (১০ ভরি সোনার মূল্য বাদে)।

উল্লেখ্য, গত বছরের সোমবার (৪ নভেম্বর) আসাদুজ্জামান খান কামালের ৯টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করেন আদালত। এসব অ্যাকাউন্টে ১২ কোটি ১১ লাখ ৯৪ হাজার ১৮০ টাকা স্থিতি থাকার তথ্য পাওয়া যায়।

ওই সময় তার অবরুদ্ধ হওয়া ব্যাংক হিসাবগুলোর মধ্যে জনতা ব্যাংকে ছিল ৫ কোটি ৪৪ লাখ ৮২ হাজার ৫১২ টাকা; ইউনিয়ন ব্যাংকের তিন হিসাবে ৩ কোটি ৬১ লাখ ৪৬ হাজার ৫৯৪ টাকা; সীমান্ত ব্যাংকে ১ কোটি ৩৭ লাখ ৪৫ হাজার ৫৯৬ টাকা; সিটি ব্যাংকের তিন হিসাবে ১ কোটি ৫৯ লাখ ৫২ হাজার ৪২৬ এবং সোনালী ব্যাংকের হিসাবে ছিল ৮ লাখ ৬৭ হাজার টাকা।

দুদকের আবেদনে বলা হয়, আসাদুজ্জামান খান কামাল অসাধু উপায়ে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ১৬ কোটি ৪১ লাখ ৫৭ হাজার ৫৭৪ টাকার সম্পদের মালিকানা অর্জন ও দখলে রেখে এবং ৯টি ব্যাংক হিসাবে সন্দেহজনকভাবে ৫৫ কোটি ৯২ লাখ ৪৪ হাজার ৪৩৬ টাকা লেনদেন করে মানি লন্ডারিংয়ে সম্পৃক্ত অপরাধে জড়িত। দুর্নীতি ও ঘুষের মাধ্যমে পাওয়া অর্থ বা সম্পত্তির অবৈধ উৎস গোপন করার উদ্দেশ্যে তিনি তা রূপান্তর, স্থানান্তর ও হস্তান্তর করেছেন।