জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রায় ঘোষণার দিন সোমবার (১৭ নভেম্বর) দেশের শেয়ারবাজারে বড় ধরনের উত্থান দেখা গেছে।
প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার পাশাপাশি সব মূল্যসূচক বেড়েছে। একইসঙ্গে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণও। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠানের শেয়ারদর বাড়ায় সূচকে উত্থান হয়েছে। টানা ১১ কার্যদিবস পতনের পর সিএসইতে এদিন সূচক বাড়ল।
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায় পড়া শুরু হয় দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটে। এর আগে স্বাভাবিক নিয়মে শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয়। লেনদেনের প্রথম দিকে বেশিরভাগ শেয়ারের দাম কমতে থাকায় ডিএসইর প্রধান সূচক একসময় ১৬ পয়েন্ট পর্যন্ত নিচে নেমে যায়। তবে বেলা ১১টার পর বাজার ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে এবং দিনের শেষ পর্যন্ত ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বজায় থাকে।
দিন শেষে ডিএসইতে ৩২২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে, ৩৫টির কমেছে এবং ১৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
ভালো কোম্পানি বা ১০ শতাংশ বা তার বেশি লভ্যাংশ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৭০টির শেয়ারদর বেড়েছে, ২৭টির কমেছে এবং ৮টি অপরিবর্তিত রয়েছে। মাঝারি মানের কোম্পানির মধ্যে ৬৫টির দাম বেড়েছে, ৩টির কমেছে এবং ৫টি অপরিবর্তিত ছিল। লভ্যাংশ না দেওয়ায় ‘জেড’ গ্রুপভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৮৭টির দাম বেড়েছে, ৫টির কমেছে এবং ৩টি অপরিবর্তিত রয়েছে। মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে লেনদেন হওয়া ৩৫টির মধ্যে ৩৩টির দাম বেড়েছে।
ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৪২ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪,৭৭৪ পয়েন্টে। ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১৫ পয়েন্ট বেড়ে ১,০০০ পয়েন্টে এবং ডিএসই–৩০ সূচক ৯ পয়েন্ট বেড়ে ১,৮৬৯ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
লেনদেনেও ভালো প্রবৃদ্ধি দেখা যায়। ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৩৪৮ কোটি ৫ লাখ টাকার, যা আগের দিনের ২৯৮ কোটি ১০ লাখ টাকার তুলনায় প্রায় ৫০ কোটি টাকা বেশি।
সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের শেয়ার—১৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকার। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে আনোয়ার গ্যালভানাইজিং, যার লেনদেন হয়েছে ১২ কোটি ৭৭ লাখ টাকার। তৃতীয় স্থানে ১০ কোটি ৭২ লাখ টাকার লেনদেন নিয়ে রয়েছে খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ। শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় আরও আছে রানার অটোমোবাইল, ওরিয়ন ইনফিউশন, লাভেলো আইসক্রিম, সিমটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ, সামিট এলায়েন্স পোর্ট, বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার এবং মনোস্পুল বাংলাদেশ।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে সার্বিক সূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৪১ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৫৬ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১০০টির দাম বেড়েছে, ৪৫টির কমেছে এবং ১১টির অপরিবর্তিত রয়েছে। সিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ১৪ কোটি ৬ লাখ টাকার, যা আগের কার্যদিবসের ৪ কোটি ৭৬ লাখ টাকার তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি।



