২০২৫–২৬ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির আবেদনে ইকিউ-১ ও ইকিউ-২ (এডুকেশন কোটা–১, ২) ক্যাটাগরিতে ব্যাপক অনিয়ম ও জালিয়াতি দেখা গেছে। বিশেষ করে শিক্ষা ক্যাডারদের সন্তানদের জন্য নির্ধারিত কোটা ঘিরে সবচেয়ে বেশি অনিয়ম ও ভুয়া দাবি সামনে এসেছে। ফলে শিক্ষার্থীদের সতর্ক করতে এবং অনিয়ম রোধে আলাদাভাবে বিশেষ নির্দেশনা জারি করতে বাধ্য হয়েছে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি।
রোববার (২৪ আগস্ট) আন্তঃশিক্ষা বোর্ডের প্রকাশিত বিশেষ নির্দেশনায় বলা হয়, ইকিউ-১ কোটা প্রযোজ্য শুধু শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে সরাসরি কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য। অন্যদিকে, ইকিউ-২ প্রযোজ্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন ২৮টি দপ্তর, সংস্থা এবং মাউশির আওতাধীন সরকারি স্কুল, কলেজ ও শিক্ষা অফিসে কর্মরত শিক্ষক-কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য।
ভর্তি কমিটির সদস্যরা জানান, এই কোটাগুলোতে আবেদনকারীদের অবশ্যই সংশ্লিষ্ট দপ্তরের প্রত্যয়নপত্র জমা দিতে হবে। তা না হলে তারা চূড়ান্তভাবে ভর্তি হতে পারবেন না। কিন্তু অনেক সাধারণ প্রার্থী ভুয়া পরিচয় ও তথ্য দিয়ে এই কোটায় আবেদন করেছেন।
চিঠিতে বলা হয়েছে, কোটার জন্য বিবেচিত না হয়েও যারা আবেদন করেছেন, তাদের আবেদন বা নিশ্চায়ন বাতিল করে পুনরায় আবেদন করতে হবে। এক্ষেত্রে ভুলভাবে আবেদনকারীরা সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডে গিয়ে আবেদন বাতিল করতে পারবেন।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জন্য নির্ধারিত ইকিউ-১ কোটায় কেবল সচিব, অতিরিক্ত সচিব, উপসচিব, সিনিয়র সহকারী সচিব, সহকারী সচিব এবং অন্যান্য পর্যায়ের সরাসরি কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানরা আবেদন করতে পারবেন। আর ইকিউ-২ কোটা পাবে ইউজিসি, মাউশি, এনটিআরসিএ, ব্যানবেইস, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর, নায়েম, এনসিটিবি, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট, ১১টি শিক্ষা বোর্ডসহ মোট ২৮টি নির্ধারিত দপ্তর বা প্রতিষ্ঠানে কর্মরতদের সন্তানরা এ কোটার আওতাভুক্ত হবেন।
এ বিষয়ে আন্তশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক খন্দোকার এহসানুল কবির বলেন, একাদশে ভর্তির আবেদনে ইকিউ-১, ইকিউ-২ (এডুকেশন কোটা-১, ২) কোটা নির্ধারিত করা আছে। এরপরও কিছু সাধারণ প্রার্থী ভুয়া তথ্য-পরিচয় দিয়ে চতুরতার সঙ্গে এ কোটায় অনেক আবেদন করেছে। তাই আমরা সতর্ক করতে নোটিশ ইস্যু করেছি।
এ আবেদনের সংখ্যা কেমন হতে পারে সেই বিষয়ে মুহূর্তে সঠিক সংখ্যাটি বলা যাচ্ছে না বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, গত ৩০ জুলাই থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রথম ধাপে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য আবেদন নেওয়া হয়। এ ধাপে ১০ লাখ ৭৩ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী আবেদন করেন, যার মধ্যে ১০ লাখ ৪৭ হাজারের কিছু বেশি শিক্ষার্থী নির্বাচিত হয়েছেন। বাকি ২৫ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী কলেজ পাননি, যাদের মধ্যে প্রায় ৬ হাজার শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পাওয়া।
প্রথম ধাপে নির্বাচিত না হওয়া এবং যারা আবেদনই করেননি তাদের জন্য দ্বিতীয় ধাপের আবেদন শুরু হয়েছে শনিবার (২৩ আগস্ট) সকাল ৯টায়, যা চলবে সোমবার (২৫ আগস্ট) রাত ৮টা পর্যন্ত। এরপর তৃতীয় ধাপে আবেদন গ্রহণ, নিশ্চায়ন, মাইগ্রেশন ও চূড়ান্ত ভর্তি শেষে আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর একাদশ শ্রেণির ক্লাস শুরু হবে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন