বৃহস্পতিবার, ০৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রাবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৪, ২০২৫, ১২:০৬ এএম

রাকসু নির্বাচনে লড়বেন ৫১ বছর বয়সী শাহরিয়ার

রাবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৪, ২০২৫, ১২:০৬ এএম

শাহরিয়ার মোর্শেদ খান। ছবি- সংগৃহীত

শাহরিয়ার মোর্শেদ খান। ছবি- সংগৃহীত

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচন ঘিরে যখন শিক্ষার্থীদের মধ্যে উৎসাহ ও প্রতিযোগিতা বেড়েই চলেছে, তখন ব্যতিক্রমী এক প্রার্থী সবার দৃষ্টি কেড়েছেন। বয়স তার ৫১ বছর। মাথায় পাতলা চুল, মুখে বয়সের ভাঁজ, দাড়িতে পাক ধরা। কেউ ভাবতেও পারেননি, এমন এক ব্যক্তি মনোনয়ন তুলতে এসেছেন একজন শিক্ষার্থী হিসেবে।

তিনি শাহরিয়ার মোর্শেদ খান- রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের একজন চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। আসন্ন রাকসু নির্বাচনে ‘মিডিয়া ও প্রকাশনা’ পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তিনি। তার প্রার্থিতা শুধু বিস্ময় নয়, বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।

একটি অসমাপ্ত যাত্রার ফিরে আসা

১৯৯৯ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগে ভর্তি হন শাহরিয়ার। কিন্তু পারিবারিক সমস্যার কারণে চতুর্থ বর্ষে এসে পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যায়। এরপর দীর্ঘ সময় তিনি চাকরি করেছেন চট্টগ্রামের বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে।

২০১৪ সালে নতুন করে জীবনের গতিপথ বদলানোর সিদ্ধান্ত নেন। ভর্তি হন ভোকেশনাল কারিগরি শিক্ষায়। ধাপে ধাপে উত্তীর্ণ হয়ে ২০১৭ সালে এসএসসি এবং ২০২০ সালে এইচএসসি পাস করেন। এরপর তিনি ভর্তি হন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে।

শিক্ষার্থী ও অভিভাবক

শাহরিয়ারের চার মেয়ে। সদ্য বড় মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। কাকতালীয়ভাবে তার জামাতা একই বিশ্ববিদ্যালয়ের একই ব্যাচের ছাত্র। শাহরিয়ার থাকেন হবিবুর রহমান হলে, আর জামাতা শহীদ জিয়াউর রহমান হলে। এই সম্পর্ক ও জীবনঘনিষ্ঠ বাস্তবতা তাকে করেছেন আরও অনন্য।

পরিবারের দায়িত্ব, বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস, আর ভবিষ্যতের স্বপ্ন- সব এক সঙ্গে সামলাচ্ছেন শাহরিয়ার।

তিনি বলেন, ‘পরিবার চালানো আর পড়াশোনা এক সঙ্গে চালানো অনেক কষ্টের। তবে শিক্ষক ও বিভাগের সহযোগিতায় টিকে আছি।’

রাজনীতিতে প্রবেশ

দুই ভাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন। নিজেও ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতির সাক্ষী। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই ছাত্র রাজনীতির বাস্তবতা বুঝেছেন তিনি।

‘নেতারা মুখে বলেন এক, আর করেন আরেক। সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য কেউ সঠিকভাবে কাজ করেন না,’-বলেন শাহরিয়ার। তাই নিজের অভিজ্ঞতা ও বাস্তবতাকে পুঁজি করে রাকসু নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন তিনি, শিক্ষার্থীদের স্বার্থে কাজ করার প্রত্যয়ে।

‘বয়স নয়, মানসিকতাই বড়’

বয়সের কারণে কেউ যাতে তাকে অবজ্ঞা না করে, সেই বার্তাও স্পষ্ট দিয়েছেন তিনি। বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, বয়স কখনো বাধা হতে পারে না। আমি যদি ৫১ বছর বয়সে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারি, তবে নেতৃত্বও দিতে পারি। শিক্ষার্থীরা যদি বিশ্বাস করে, আমি তাদের জন্য লড়ব।’

রিটার্নিং কর্মকর্তাও বিস্মিত!

রাকসুর মনোনয়ন জমা দিতে গিয়েছিলেন শাহরিয়ার। উপস্থিত সংবাদকর্মী ও শিক্ষার্থীদের মাঝে তখন বিস্ময় ও আগ্রহ। এমন সময় আসেন রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক মো. সেতাউর রহমান। তিনিও প্রথমে অবাক হয়ে প্রশ্ন করেন, ‘আপনি কি প্রার্থী?’ উত্তর পেয়ে তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থী হয়ে থাকলে, বয়স কোনো বাধা নয়।’

Link copied!