সোমবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২১, ২০২৫, ১১:১৮ পিএম

বিশ্বের শীর্ষ ২ শতাংশ গবেষকদের তালিকায় রাবির প্রাক্তন শিক্ষার্থী ড. মুসা

রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২১, ২০২৫, ১১:১৮ পিএম

ড. আবু সালেহ মুসা মিয়া। ছবি- সংগৃহীত

ড. আবু সালেহ মুসা মিয়া। ছবি- সংগৃহীত

বাংলাদেশের তরুণ গবেষক ড. আবু সালেহ মুছা মিয়া বিশ্বের শীর্ষ ২ শতাংশ গবেষকদের তালিকায় স্থান করে নিয়েছেন। আন্তর্জাতিক প্রকাশনা সংস্থা এলসেভিয়ারের তথ্যভান্ডার অনুযায়ী শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) প্রকাশিত তালিকায় তার নাম অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।

ড. মুসা গবেষণা যাত্রা শুরু করেছিলেন ২০১৪ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে স্নাতক পর্যায়ে পড়াশোনার সময়। এ সময় তিনি গবেষণার প্রাথমিক দীক্ষা নেন ড. মো. রোকনুজ্জামানের তত্ত্বাবধানে। পরে স্নাতকোত্তর পর্যায়ে তিনি কাজ করেন ড. মো. খায়দেমুল ইসলাম মোল্লার অধীনে এবং গবেষণার নানা বিষয়ে আলোচনা ও দিকনির্দেশনা পান ড. মো. রবিউল ইসলামের কাছ থেকে।

তার গবেষণা জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক ছিল ২০১৭ সালে জাপানের শিজুওকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত IAA কনফারেন্সে অংশগ্রহণ। এই সুযোগটি করে দিয়েছিলেন ড. মো. একরামুল হামিদ, যিনি তার স্নাতকোত্তর গবেষণাকে আন্তর্জাতিক সম্মেলনে উপস্থাপনের পথ উন্মুক্ত করেছিলেন।

ড. মুসা পরবর্তীতে পিএইচডি সম্পন্ন করেন জাপানের ইউনিভার্সিটি অব আইজু থেকে প্রফেসর জংপিল শিনের তত্ত্বাবধানে। এ সময় তিনি সহযোগিতা ও পরামর্শ পান প্রফেসর ড. মো. আল মেহেদী হাসান (RUET), ড. রাশেদুল ইসলাম এবং ড. মো. আবদুর রহিমের কাছ থেকে।

তিনি ৩ বছর ৬ মাস বাংলাদেশ আর্মি ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজিতে (BAUST) শিক্ষকতা করেছেন। পরে ২০২৫ সালের ১২ আগস্ট রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে তার নিজ ডিপার্টমেন্টে শিক্ষক হিসেবে যোগদন করেছেন।

বর্তমানে তিনি শিক্ষা ছুটিতে ইউনিভার্সিটি অব আইজুতে পোস্টডক্টরাল গবেষণার সঙ্গে যুক্ত আছেন। তার গবেষণার অর্থায়ন করছে জাপানের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের MEXT স্কলারশিপ এবং ইউনিভার্সিটি অব আইজুর Public University Corporation।

তিনি শিক্ষাজীবনে দাখিল সম্পন্ন করেছেন রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার জাফরপুর দাখিল মাদ্রাসা থেকে এবং আলিম সম্পন্ন করেছেন রংপুরের ধাপ সাতগাড়া বায়তুল মোকাররম মডেল কামিল মাদ্রাসা থেকে।

ড. আবু সালেহ মুছা মিয়া তার এই অর্জনের জন্য আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জ্ঞাপন করেছেন এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন তার শিক্ষক, সহকর্মী, গবেষণা সহযোগী ও পরিবারের প্রতি। তিনি বলেন, এটি আমার জীবনের একটি বড় অর্জন। আমি চাই ভবিষ্যতেও গবেষণার মাধ্যমে সমাজ ও বিশ্বের কল্যাণে অবদান রাখতে।

ড. আবু সালেহ মুসা মিয়ার বাবা হাফেজ ক্বারী মো. আব্দুস সামাদ অনুভূতি প্রকাশ করে বলেন, ‘মুসা অত্যন্ত সহজ-সরল ছেলে। শুরুতে ভাবতেই পারিনি, সে এতদূর যেতে পারবে। আল্লাহর অশেষ রহমতে আজ দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক প্রকাশনা সংস্থা এলসেভিয়ারের তথ্যভান্ডারে প্রকাশিত বিশ্বের শীর্ষ ২ শতাংশ গবেষকদের তালিকায় আমার ছেলের নাম এসেছে। এতে আমি, আমার পরিবার, এলাকাবাসী ও উপজেলাবাসী গর্বিত আলহামদুলিল্লাহ। আমি চাই, তার মেধা দেশের মানুষের কল্যাণে আজীবন কাজে লাগুক।’

প্রথম গবেষণা তত্ত্বাবধায়ক ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মো. রোকনুজ্জামান বলেন, ‘ড. আবু সালেহ মুসা মিয়ার এ অর্জনে স্বাভাবিকভাবেই আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। আমরা চাই আমাদের সন্তানতুল্য শিক্ষার্থীরা দেশে-বিদেশে নাম কুড়িয়ে এগিয়ে যাক।

আমরা যে সীমিত সুযোগ-সুবিধা দিতে পেরেছি, সেই সামান্য সুবিধা নিয়েই তারা গবেষণার কাজ করেছে। সেই সুযোগ-সুবিধা থেকেও যদি আমরা একজন ভালো শিক্ষার্থী তৈরি করতে পারি, সেটাই আমাদের বড় পাওয়া। তাদের এই অর্জন বিভাগের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে যায়। তারা বিভাগের সুনাম ছড়িয়ে দিতে পারবে।’

ইউনিভার্সিটি অব আইজুর প্রফেসর দক্ষিণ কোরিয়ার প্রখ্যাত গবেষক প্রফেসর জংপিল শিন তার প্রাক্তন পিএইচডি শিক্ষার্থী ড. আবু সালেহ মুসা মিয়ার সাফল্যের প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমাদের ল্যাবরেটরিতে মূলত প্যাটার্ন রিকগনিশন নিয়ে কাজ করি, বিশেষ করে মানব ক্রিয়াকলাপ শনাক্তকরণ এবং তা পারকিনসন ও আলঝেইমারের মতো রোগে প্রয়োগের ওপর গুরুত্ব দিই। আমার প্রাক্তন শিক্ষার্থী এবং বর্তমানে পোস্টডক্টরাল গবেষক ড. আবু সালেহ মুসা মিয়া অসাধারণ নিষ্ঠা ও গবেষণা প্রতিভার পরিচয় দিয়েছেন। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বিষয়ে বিশ্বের শীর্ষ ২ শতাংশ বিজ্ঞানীর তালিকায় (এলসেভিয়ার ও স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক যাচাইকৃত) তার নাম উঠে আসা নিঃসন্দেহে গৌরবের বিষয় এবং তার অসাধারণ অবদানের স্বীকৃতি।’

তিনি বলেন, ‘আমরা একসঙ্গে সায়েন্টিফিক রিপোর্টস (নেচার), আইইইই অ্যাক্সেসসহ আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন জার্নালে গবেষণা প্রকাশ করেছি এবং আইইইই, স্প্রিঙ্গার ও এসিএম আয়োজিত গুরুত্বপূর্ণ সম্মেলনগুলোতেও প্রবন্ধ উপস্থাপন করেছি। আমি বিশ্বাস করি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়নে তার গবেষণা ভবিষ্যতেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।’

Link copied!