ঈদুল আজহার টানা ছুটির পর আজ রোববার (১৫ জুন) থেকে খুলছে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। প্রথম দফায় খুলছে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়। এরপর আগামী ২২ জুন খুলবে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। সর্বশেষ ২৬ জুন খুলবে মাদ্রাসা। তবে চলতি বর্ষা মৌসুমে হঠাৎ করে ডেঙ্গু ও করোনার সংক্রমণ বাড়তে থাকায় অভিভাবকদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে উদ্বেগ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, জুনের প্রথম ১৩ দিনেই দেশে ১ হাজার ২২৫ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন এবং ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর আগে মে মাসে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৭৭৩। বর্ষা মৌসুমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চত্বর ও আশপাশে পানি জমে থাকায় এডিস মশার বিস্তার ঘটার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
একই সময়ে করোনার সংক্রমণেও ঊর্ধ্বগতি দেখা দিয়েছে। জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১৫৮ জন। কিন্তু জুনের প্রথম ১০ দিনেই নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৫৪ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ২ জনের। পাশের দেশ ভারতে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হওয়ায় বাংলাদেশেও স্বাস্থ্য সতর্কতা জোরদার করা হয়েছে।
রাজধানীর উদয়ন স্কুলের দ্বাদশ শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর বাবা শিমুল মাহমুদ বলেন, মৌসুম পরিবর্তনের কারণে মেয়ের তিন দিন ধরে জ্বর। ডেঙ্গু ও করোনা পরীক্ষাও করিয়েছি। এখন তাকে কলেজে পাঠাতে ভয় লাগছে। কারণ, দীর্ঘদিন ছুটির পর অনেক জায়গায় পানি জমে আছে, যেখান থেকে ডেঙ্গুর বিস্তার ঘটতে পারে। করোনার ভয় তো রয়েছেই।
অভিভাবক ঐক্য ফোরামের সভাপতি জিয়াউল কবির দুলু বলেন, কলেজ ১৫ দিন আর অন্য প্রতিষ্ঠান ২০ দিন পর খুলছে। অথচ ডেঙ্গু ও করোনা মোকাবিলায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর প্রস্তুতি খুবই কম। এ কারণে অনেক অভিভাবক সন্তানের স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিয়ে উদ্বিগ্ন।
করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঁচ দফা নির্দেশনা দিয়েছে।
নির্দেশনাগুলো হলো: কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড ধরে সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, জনসমাগমস্থলে মাস্ক পরা, আক্রান্ত ব্যক্তির কাছ থেকে ৩ ফুট দূরত্ব বজায় রাখা।
চোখ, নাক ও মুখ স্পর্শ না করা, হাঁচি-কাশির সময় টিস্যু বা কনুই ব্যবহার করা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা জোরদার করার নির্দেশ।
মাউশির মহাপরিচালক ড. মুহাম্মদ আজাদ খান জানান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুসারে করোনা প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি, ডেঙ্গু রোধে স্কুল-কলেজের শ্রেণিকক্ষ, মাঠ ও আশপাশের এলাকাও পরিষ্কার রাখতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়াও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ও মাউশি জানিয়েছে, ঈদের ছুটি শেষে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার আগে এবং পরে নিয়মিতভাবে পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা এবং এডিস মশার লার্ভা ধ্বংসের উদ্যোগ নিতে হবে।