ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

জাকসু নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে যা বলছেন প্রশাসন ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা

জাবি প্রতিনিধি
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২৫, ০৯:২৬ পিএম
জাকসুতে বিজয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতার প্রশ্নে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ও বাম সংগঠনগুলো নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেয়। এ ক্ষেত্রে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মাঝে ভিন্ন চিত্র লক্ষ করা যায়। নির্বাচনে ভিপিসহ অন্য দুইটি গুরুত্বপূর্ণ সম্পাদকীয় পদে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে নির্বাচিত হন। প্রার্থীরা হচ্ছেন: আব্দুর রশিদ জিতু—যিনি দশম জাকসু সংসদের সহসভাপতি (ভিপি) হিসেবে নির্বাচিত হন, মাহমুদুল হাসান কিরন—যিনি ক্রীড়া সম্পাদক পদে এবং সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে নির্বাচিত হন শেখ জিসান আহমেদ। 

নির্বাচনে কারচুপি ও স্বচ্ছতার প্রশ্নে শেখ জিসান আহমেদ বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন, ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে—বটতলা থেকে শুরু করে প্রধান প্রধান পয়েন্টে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে, যার মাধ্যমে কারচুপির কোনো প্রশ্নই আসে না। তবে প্রশাসনের কিছু ব্যর্থতা স্পষ্ট ফুটে উঠেছে। তাদের পরিকল্পনার অভাব ছিল, প্রস্তুতির অভাব ছিল। কিন্তু কারচুপির যেই প্রশ্নটা, এটা পুরোটাই অবান্তর।’

ক্রীড়া সম্পাদক পদে নির্বাচিত মাহমুদুল হাসান কিরণ বলেন, ‘আমি নির্বাচন হয়ে যতটা না খুশি হয়েছি, তারচেয়ে বেশি দুঃখিত—যেই মানুষগুলো বিভিন্ন কাঠামোতে যোগ্য তাদের অনেকেই নির্বাচিত হয়ে আসতে পারেনি। স্বতন্ত্র প্রার্থী যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে তারা অনেক যোগ্য ছিল। নির্বাচনে ভোটারদের প্যানেল ধরে ভোট দেবার চেয়ে আরও বিচক্ষণ হয়ে ভোট দিলে এটি ইন্ক্লুসিভ হতে পারত। জাকসু নির্বাচনে যেই ভোট কারচুপির কথা শোনা যাচ্ছে আমি সরাসরি নির্বাচনের দিন উপস্থিত না থাকতে পারায় সেটি নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাচ্ছি না।’

এ বিষয়ে জাকসুর সহসভাপতি আব্দুর রশিদ জিতু বলেন, ‘ভোট গ্রহণ ও ভোট গণনা যেই পদ্ধতিতে হয়েছে সেখানে কারচুপির কোনো সুযোগ ছিল না। ভোট গ্রহণ থেকে শুরু করে গণনা পর্যন্ত সিসিটিভিতে দেখানো হয়েছে, যেখানে শিক্ষার্থী গোপণ কক্ষে গিয়ে ভোট দিয়েছে, তাতে কারচুপি করা সম্ভব না। হ্যাঁ, নির্বাচনে বেশিকিছু অব্যবস্থাপনা ছিল। তবে এত বছর পর নির্বাচন কমিশন এমন একটি নির্বাচন আয়োজন করতে পেরেছে সে ক্ষেত্রে কিছু বিষয় বিবেচনা করতে হবেই। কারচুপি বা ফলাফলকে প্রভাবিত করার মতো কোনোকিছু হয়নি। যারা এই কথাগুলো বলতেছে তারা নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য বলে যাচ্ছে। প্রায় ৮ হাজার শিক্ষার্থী ভোট দিয়েছে এবং ফলাফল মেনে নিয়েছে।’

ভোটগ্রহণের স্বচ্ছতা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও জাকসু নির্বাচন কমিশনের সদস্য সচিব অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, ‘নির্বাচনের প্রত্যেকটি ফুটেজ সংরক্ষিত আছে। কেউ যদি চ্যালেঞ্জ করে আমরা সেটি দেখাতে পারব। কোনোপ্রকার অনিয়মের অভিযোগ যারা করছে তারা ব্যক্তি স্বার্থে এ সকল অভিযোগ করছে। যদি কেউ এ সকল অভিযোগ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানহানী করে তাহলে তাদের বলব ব্যক্তির চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় বড়।’

নির্বাচিত কমিটির শপথ অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে বিভিন্ন মহল যেসব অভিযোগ করেছিল সেগুলো মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন সত্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত ছিল এবং থাকবে।’