রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তিতে পোষ্য কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন।
শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২টার দিকে জুমার নামাজ শেষে কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে থেকে একটি মিছিল বের হয়। মিছিলটি ক্যাম্পাসের শহীদ শামসুজ্জোহা চত্বরে এসে বিক্ষোভ সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।
সমাবেশে শিক্ষার্থীরা ‘পোষ্য কোটার বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘ভিক্ষা কোটার বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘ভিক্ষা লাগলে ভিক্ষা নে, পোষ্য কোটার কবর দে’, ‘আলি-রায়হান-মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’ প্রভৃতি স্লোগান দেন।
বক্তারা বলেন, ‘পোষ্য কোটা একটি মীমাংসিত ইস্যু। এটি কোনোভাবেই পুনর্বহাল হবে না। আমরা রক্ত দিতে প্রস্তুত, কিন্তু এই ক্যাম্পাসে পোষ্য কোটা ফিরতে দেব না। দীর্ঘ ৩৫ বছর পর রাকসু নির্বাচনকে ঘিরে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে, সেই সময়ে নির্বাচন বানচাল করার জন্য শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে দ্বন্দ্ব সৃষ্টির ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে, যা কখনো সফল হবে না।’
ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী সজিবুর রহমান বলেন, ‘আমরা পূর্বে বিভিন্ন আন্দোলন ও সংগ্রামের মাধ্যমে পোষ্য কোটার কবর রচনা করেছিলাম। কিন্তু দেখলাম, তা পুনরায় পুনর্বহালের চেষ্টা চলছে। পোষ্য কোটা কোনোভাবেই ফিরবে না।’
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী মাহির ফয়সাল বলেন, ‘আপনারা যদি রক্ত চান, আমরা দিতে রাজি। তবে আমাদের রক্ত দিয়ে এই ক্যাম্পাসে পোষ্য কোটা ফেরানো হবে না।’
আইন ও ভূমি প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী কামরুল হাসান সজীব বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন রাকসু নির্বাচন চায় না। নির্বাচনের আগ মুহূর্তে এই পোষ্য কোটার ইস্যুকে জ্বলন্ত করে তোলা হয়েছে। আমরা এ ষড়যন্ত্র কখনো বাস্তবায়ন হতে দেবো না।’
এর আগে, গত ২ জানুয়ারি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে উপাচার্য সালেহ্ হাসান নকীব পোষ্য কোটা বাতিল ঘোষণা করেছিলেন। তিনি জানিয়েছিলেন, ‘আমি দ্ব্যর্থহীনভাবে বলছি, আমি ১ শতাংশ পোষ্য কোটার পক্ষেও নই। এটি ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে কার্যকর হবে না।’
এরপর শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পোষ্য কোটা পুনর্বহালের দাবিতে আন্দোলনে নামে। প্রশাসনের আশ্বাসে তারা কিছু সময়ের জন্য কর্মসূচি স্থগিত করেছিলেন। সর্বশেষ গত বুধবার পোষ্য কোটা পুনর্বহালসহ তিন দাবিতে ২৪ ঘণ্টার সময় বেঁধে দেওয়া হয়। দাবি না মানলে ২১ সেপ্টেম্বর থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।
এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও করে প্রায় ৪ ঘণ্টা বিক্ষোভ চালান। রাত সাড়ে ১১টার দিকে শুক্রবার বাদ জুমা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ থেকে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা।