ঢাকা মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর, ২০২৫

রাকসুর আচরণবিধিতে নতুন নিয়ম, শিবির প্যানেলের মিটিং স্থগিত

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: অক্টোবর ১৪, ২০২৫, ০১:২৬ পিএম
ছবি- রূপালী বাংলাদেশ গ্রাফিক্স

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনের মাত্র ২ দিন আগে আচরণবিধিতে যুক্ত কার হয়েছে নতুন একটি ধারা। যা নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে শুরু হয়েছে আলোচনা ও সমালোচনা। এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে নিজেদের নির্ধারিত প্রজেকশন মিটিং স্থগিত করেছে ছাত্রশিবির-সমর্থিত ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেল।

মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) রাকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. এফ নজরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, হলের অভ্যন্তরে কোনো নির্বাচনী সভায় বাইরে থেকে চেয়ার, আসবাবপত্র, মাইক বা সাউন্ডবক্স আনা যাবে না। শুধুমাত্র হলের নিজস্ব সামগ্রী ব্যবহার করেই সভা আয়োজন করতে হবে। এছাড়া সভায় কোনো ধরনের নাস্তা বা খাবারের প্যাকেট বিতরণ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

এই নতুন বিধিনিষেধ নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট’। তাদের দাবি, প্রজেকশন মিটিংয়ে শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ দেখে এক শ্রেণির মহল চাপে পড়ে নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে এই নির্দেশনা জারি করিয়েছে।

শিবির সমর্থিত প্যানেলের এক বিবৃতিতে বলা হয়,‘প্রিয় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ভাই ও বোনেরা,আপনারা ইতিমধ্যেই অবগত আছেন যে, ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেল 'সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট'-এর পক্ষ থেকে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলে নির্বাচন কমিশনের সকল নীতিমালা মেনে প্রজেকশন মিটিং আয়োজন করেছি, যেখানে শিক্ষার্থীদের ব্যাপক অংশগ্রহণ সকলের দৃষ্টি গোচর হয়েছে।’

এতে আরো বলা হয়, প্রচারণার শেষ দিনে আজ শহীদ জিয়াউর রহমান হল, সৈয়দ আমীর আলী হল, নওয়াব আব্দুল লতিফ হল এবং শহীদ হবিবুর রহমান হলে প্রজেকশন মিটিং উপলক্ষে সকলকে দাওয়াত প্রদান করা হয়েছে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে, সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোটের প্রজেকশন মিটিংগুলোতে শিক্ষার্থীদের ব্যাপক উপস্থিতি থাকায় বিশেষ গোষ্ঠীর চাপের মুখে নির্বাচন কমিশন শেষ সময়ে এসে আজ সকাল ১০:০০ টার দিকে হঠাৎ নতুন নীতিমালা প্রণয়ন করেছে। সেখানে হলের বাইরে থেকে চেয়ার ও সাউন্ড সিস্টেম নিয়ে আসার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।

সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট জানায়,  পূর্ব নির্দেশনা ছাড়াই গতকাল বেগম খালেদা জিয়া হলে আমাদের প্রজেকশন মিটিংয়ে চেয়ার ঢুকতে দেওয়া হয়নি এবং হলের পক্ষ থেকেও সহযোগিতা করা হয়নি। যার ফলে ছাত্রী বোনেরা মেঝেতে বসতে বাধ্য হয়েছিলেন, যা ছিলো অত্যন্ত বিব্রতকর ও অনাকাঙ্ক্ষিত দৃশ্য।

প্যালেনটি আরও জানায়, আমরা নির্বাচন কমিশনের এই পক্ষপাতমূলক সিদ্ধান্তের কারণে আজকের প্রজেকশন মিটিং স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হচ্ছি।আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সচেতন ও ন্যায়নিষ্ঠ শিক্ষার্থী ভাই-বোনেরা অতীতের মতোই দোয়া, সমর্থন ও সহযোগিতার মাধ্যমে সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোটের পাশে থাকবেন, ইনশাআল্লাহ।

এদিকে, নির্বাচনে কমিশনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল নুরুল ইসলাম সাদ্দাম। তার অভিযোগ, শিবিরকে ঠেকাতে নির্বাচন কমিশন উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে একের পর এক আচরণবিধি জারি করছে।

নির্বাচনের মাত্র ৪৮ ঘণ্টা আগে আচরণবিধিতে এমন পরিবর্তন কতটা গ্রহণযোগ্য ও যুক্তিসঙ্গত, তা নিয়ে এখন শিক্ষার্থীদের মধ্যেই তৈরি হয়েছে নানা প্রশ্ন।

উল্লেখ্য, আজ মধ্যরাতে শেষ হবে প্রার্থীদের প্রচার কার্যক্রম। নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ১৬ অক্টোবর। এবারের রাকসু নির্বাচনে মোট ভোটার ২৮ হাজার ৯০১ জন। ২৩টি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ২৪৭ জন প্রার্থী, সিনেট প্রতিনিধি পদে ৫৮ জন এবং হল সংসদ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন ৫৯৭ জন প্রার্থী।