ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর, ২০২৫

রাকসুর ভোটগ্রহণ চলছে

রাবি প্রতিনিধি
প্রকাশিত: অক্টোবর ১৬, ২০২৫, ০৯:৫৩ এএম
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনের একটি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ চলছে। ছবি- সংগৃহীত

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), হল সংসদ ও সিনেট-এ ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনের ভোটগ্রহণ চলছে। বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সকাল ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯টি ভবনের ১৭টি কেন্দ্রে ৯৯০টি বুথে এই ভোটগ্রহণ শুরু হয়। এবারের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে ওএমআর ব্যালট পদ্ধতিতে। দিনব্যাপী ভোটগ্রহণ চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। 

এদিন সকাল থেকেই ক্যাম্পাসে নির্বাচনি আমেজ বিরাজ করছে। শিক্ষার্থীরা দল বেঁধে আসছেন ভোট দিতে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও রয়েছে কঠোর অবস্থানে।

এবারের নির্বাচনে ২৮ হাজার ৯০১ জন ভোটার ৮৬০ জন প্রার্থীর পক্ষে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবে। ৯ একাডেমিক ভবনের ১৭টি কেন্দ্রে ৯৯০টি বুথ থাকবে। প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ ৭ জন কমিশনার এবং ১ জন প্রধান রিটার্নিং অফিসারসহ ৭ জন রিটার্নিং অফিসার নির্বাচন পরিচালনা করছেন।

ভোটগ্রহণ করবেন ২১২ জন শিক্ষক। আবাসিক হলের ১৭ জন প্রাধ্যক্ষ প্রিসাইডিং অফিসার ও আবাসিক শিক্ষকরা সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। পোলিং অফিসার থাকবেন ৯১ জন।

এ ছাড়া ক্যাম্পাসের সার্বিক নিরাপত্তায় ২ হাজার পুলিশ, ৬ প্লাটুন বিজিবি ও ১২ প্লাটুন র‍্যাব রয়েছে।

এবারের রাকসুর কেন্দ্রীয় সংসদে ২৩ পদে ৩০৫ জন প্রার্থী, ১৭টি হল সংসদের ২৫৫ পদে ৫৫৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। মোট ভোটারের ৩৯.১% নারী এবং ৬০.৯% পুরুষ।

সরেজমিনে দেখা গেছে, প্রতিটি হলেই ভোটগ্রহণ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে শিক্ষক, কর্মচারী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, বিএনসিসি, প্রক্টরিয়াল টিম দায়িত্ব পালন করছে।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, বহু বছর পর রাকসু নির্বাচন হওয়ায় তাদের মধ্যে আলাদা উৎসাহ কাজ করছে।

তাদের প্রত্যাশা, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোটের মাধ্যমে নিজেদের প্রতিনিধি বেছে নিতে পারবেন তারা।

এক্ষেত্রে সৎ ও ব্যক্তিত্বসম্পন্ন প্রতিনিধি বাছাই করবেন বলেও জানিয়েছেন তারা।

ভোটগ্রহণ শুরু হলেই কেন্দ্রে আসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী সানজিদা ইয়াসমিন মীম। দেন ভোটও। বলেন, আজকের দিনটি স্মরণীয় একটি দিন।

‘খুবই ভালো লাগছে, এক ধরনের অন্যরকম উত্তেজনা কাজ করছে মনে। গতকাল থেকেই পুরো ক্যাম্পাসে উৎসবের আমেজ ছিল— সবাই সবার সঙ্গে কাকে ভোট দিবে, কে যোগ্য এসব বিষয়ে কথা বলছিল’, বলেন এই শিক্ষার্থী।

‘মনে হচ্ছিল যেন কোনো উৎসব চলছে, একেবারে ঈদ ঈদ পরিবেশ। আমি জীবনের প্রথম ভোট দিয়েছি, সেটাও রাকসুর মতো ঐতিহাসিক নির্বাচনে— এটা সত্যিই গর্বের। আমি চাই যোগ্য, দায়িত্বশীল ও ছাত্রবান্ধব প্রার্থীরাই নির্বাচিত হোক, যারা সত্যিকার অর্থে সাধারণ শিক্ষার্থীদের স্বার্থে কাজ করবে,’ যোগ করেন মীম।

ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী রাফায়েল আহমেদ মারুফ বলেন, তারা চান প্রতিবছর যেন রাকসু নির্বাচন হয়।

‘গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি নির্বাচন করার জন্য ছাত্রসংসদ নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ। আমি চাই যোগ্য ব্যক্তি নির্বাচিত হয়ে প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে শিক্ষার্থীদের কল্যাণে কাজ করুক,’ বলেন মারুফ।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণ চলছে।

‘কোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি যেন না ঘটে, সে ব্যাপারে সতর্ক অবস্থান নেওয়া হয়েছে’, বলেও প্রশাসন জানায়।