রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) এবং হল সংসদ ও সিনেটের ছাত্র প্রতিনিধিদের নির্বাচনের ভোট গণনা শুরু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৮টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে ভোট গণনা কার্যক্রম শুরু হয়। প্রথম ধাপে মন্নুজান হলের ভোটের গণনা করা হচ্ছে।
এর আগে, সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার পর পৌনে ৫টার মধ্যে সমস্ত ব্যালট বাক্স মিলনায়তনে আনা হয়। এরপর সন্ধ্যা পৌনে ৮টায় পোলিং কর্মকর্তারা এবং প্রার্থীদের এজেন্টদের উপস্থিতিতে ব্যালট বাক্স খোলা হয়।
নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মোস্তফা কামাল আকন্দ জানান, ‘আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে রাকসুর ভোট গণনা শুরু করেছি। প্রথমে মন্নুজান হলের ভোট গণনা করা হবে এবং ধারাবাহিকভাবে অন্যান্য হলের ভোটের ফলাফলও প্রকাশ করা হবে।’
রাকসু নির্বাচনের টেকনিক্যাল কমিটির প্রধান প্রফেসর ড. মামুনুর রশিদ খন্দকার বলেন, ‘সন্ধ্যায় প্রার্থীদের এজেন্টদের সঙ্গে মিলিয়ে ওএমআর মেশিনের পরীক্ষা করা হয়েছে। কয়েকটি ব্যালটে পরীক্ষামূলক ভোট দিয়ে মেশিনের কার্যকারিতা যাচাই করা হয়েছে, যা সবাইকে সামনে তুলে ধরা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ভোটের সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ গণনা নিশ্চিত করা হয়েছে, যাতে কোনো পক্ষেরই কোনো অভিযোগের সুযোগ না থাকে।’
ভোট গণনা কাজ বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তন এবং শহীদ মিনারে স্থাপিত বড় পর্দায় সরাসরি প্রদর্শিত হচ্ছে।
মিলনায়তনের মঞ্চে ছয়টি আলাদা ওএমআর মেশিন বসানো হয়েছে। প্রতিটি হলের ব্যালট বাক্স সংশ্লিষ্ট প্রিজাইডিং কর্মকর্তা, রিটার্নিং কর্মকর্তা, পোলিং কর্মকর্তা এবং প্রার্থীদের এজেন্টদের সামনে খোলা হচ্ছে।
এই পুরো প্রক্রিয়া মিলনায়তনের বড় পর্দায় সবাই দেখতে পাচ্ছে। শিক্ষার্থীরা মিলনায়তনের সামনে দাঁড়িয়ে ভোট গণনা পর্যবেক্ষণ করছে। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, অনুমতিপ্রাপ্ত ব্যক্তিবর্গ ও গণমাধ্যমকর্মীরাও অনুষ্ঠানটি অনুসরণ করছেন।
এবারের রাকসু নির্বাচনে ভোটার সংখ্যা ২৮ হাজার ৯০১। ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয় ৯টি অ্যাকাডেমিক ভবনে স্থাপিত ১৭টি ভোটকেন্দ্রে। কেন্দ্রীয় রাকসুর ২৩টি পদে মোট ৩০৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে দুই হাজার পুলিশ, ৬ প্লাটুন বিজিবি ও ১২ প্লাটুন র্যাব।
এর মধ্যে রয়েছে সহসভাপতি (ভিপি), সাধারণ সম্পাদক (জিএস) ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পদ। সিনেটের ছাত্র প্রতিনিধির পাঁচটি পদে ৫৮ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। অন্যদিকে ১৭টি হল সংসদের ২৫৫টি পদে মোট ৫৫৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। মোট ভোটারের ৩৯ দশমিক ১০ শতাংশ নারী, ৬০ দশমিক ৯০ পুরুষ।
এ নির্বাচনে ১১টি প্যানেল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। এর মধ্যে আলোচিত ৮টি প্যানেল হলো:
- ছাত্রদল মনোনীত প্যানেল ‘ঐক্যবদ্ধ নতুন প্রজন্ম’;
- ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট’;
- ছাত্র অধিকার পরিষদ ও ছাত্র ফেডারেশনের নেতৃত্বে গঠিত ‘রাকসু ফর র্যাডিক্যাল চেঞ্জ’;
- সাবেক সমন্বয়কদের নেতৃত্বে ‘আধিপত্যবাদবিরোধি ঐক্য’;
- বাম জোটের ‘গণতান্ত্রিক শিক্ষার্থী পর্ষদ’;
- ছাত্র ইউনিয়ন (একাংশ) ঘোষিত ‘অপরাজেয় ৭১, অপ্রতিরোধ্য ২৪’;
- সাবেক আরেক নারী সমন্বয়কের নেত্বতে ‘সর্বজনীন শিক্ষার্থী সংসদ’;
- ইসলামী ছাত্র আন্দোলন মনোনীত ‘সচেতন শিক্ষার্থী পরিষদ’;