ঢাকা শনিবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২৫

ইবির ক্রীড়া উন্নয়নে ৩ লাখ টাকা অনুদান ক্রীড়া সচিবের

ইবি প্রতিনিধি
প্রকাশিত: নভেম্বর ১৫, ২০২৫, ০৪:২৬ পিএম
ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তঃবিভাগ ও আন্তঃহল ব্যাডমিন্টন, টেবিল টেনিস ও ভলিবল (ছাত্র-ছাত্রী) প্রতিযোগিতা ২০২৫-২০২৬ এর উদ্বোধন করেছেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুব-উল-আলম। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রীড়া সামগ্রী ক্রয় ও ক্রীড়া উন্নয়নের জন্য ৩ লাখ টাকা অনুদানের ঘোষণা দেন তিনি।

শনিবার (১৫ নভেম্বর) সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ভলিবল মাঠে বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষা বিভাগের উদ্যোগে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে প্রতিযোগিতা উদ্বোধন করেন তিনি।

পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত, গীতা ও ত্রিপিটক পাঠ, জাতীয় সংগীত পরিবেশন ও পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহর সভাপতিত্বে এবং জার্নালিজম বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. রশিদুজ্জামান ও শারীরিক শিক্ষা বিভাগের উপ-পরিচালক মাবিলা রহমানের যৌথ সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম. এয়াকুব আলী এবং ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার, প্রক্টর, ছাত্র উপদেষ্টা, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগীয় সভাপতি সহ কয়েকশত শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।

বিশেষ অতিথি উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম. এয়াকুব আলী বলেন, ‘আজ আমাদের জন্য অত্যন্ত আনন্দের একটি দিন। শরীর, মন ও মেধা বিকাশের জন্য খেলাধুলা অত্যন্ত প্রয়োজনীয় এবং কার্যকরী একটি পদক্ষেপ। খেলায় এক দল বিজয়ী হবে, আরেক দল বিজিত হবে—এটাই নিয়ম। এই খেলায় অংশগ্রহণকারী প্রতিটি শিক্ষার্থী ও প্রতিটি দলকে আমি শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই।’

প্রধান অতিথির বক্তব্যে যুব ও ক্রীড়া সচিব মাহবুব উল আলম বলেন, ‘আমি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলাম। আজ এই বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বিতীয়বার আসতে পেরেছি। এই বিশ্ববিদ্যালয় আমাকে সম্মান দিয়েছে এবং রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পদে অধিষ্ঠিত হওয়ার সুযোগ দিয়েছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনজন শিক্ষার্থী এখন সরকারের সচিব পদে কর্মরত। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান ও মর্যাদা এখনও অক্ষুণ্ণ রয়েছে। জাতি একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর কাছ থেকে অনেক কিছু প্রত্যাশা করে। আমরা যেভাবে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চ শিক্ষার সুযোগ পাই, অনেক দেশে তা পাওয়া যায় না। সেসব দেশে উচ্চশিক্ষা অনেক ব্যয়বহুল, কিন্তু বাংলাদেশ সরকার উচ্চ শিক্ষাকে আমাদের জন্য সহজ করে দিয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘পড়াশোনার এই চার বছর আমাদের জন্য ক্রান্তিকাল। আমরা যদি পরিশ্রমের সাথে এই সময় অতিক্রম করি, তবে আমাদের জন্য স্বর্ণযুগ অপেক্ষা করছে। তোমরা প্রতিটি সময়কে কাজে লাগাবে এবং চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রতিযোগিতামূলক যুগের সাথে তাল মিলিয়ে নিজেদের যোগ্য করে তুলবে। এই প্রতিযোগিতা শুধু নিজের বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যেই নয়, বরং পাবলিক, প্রাইভেট এবং বিদেশ থেকে যারা বাংলাদেশের পড়াশোনা করতে এসেছে তাদের সাথেও প্রতিযোগিতা করতে হবে। সেজন্য কেমন প্রস্তুতি দরকার, সেই দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। শিক্ষকদের দায়িত্ব হবে তোমাদের মেধাকে প্রস্ফুটিত করে সর্বোচ্চ ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত করা।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, ‘যিনি বাংলাদেশের ক্রীড়া সচিব, তার হাত দিয়েই আজ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রীড়া প্রতিযোগিতা উদ্বোধন হয়েছে। এর চেয়ে গর্বের বিষয় আর হতে পারে না। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার লগ্ন থেকে এ পর্যন্ত শিক্ষা ও ক্রীড়া ক্ষেত্রে অনন্য উজ্জ্বলতা ও কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছে। আমরা যখন ক্রীড়া মন্ত্রণালয় পরিদর্শন করি, তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রীড়াবিদদের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সম্পৃক্ততা তুলে ধরেছি। প্রত্যন্ত অঞ্চলে এই বিশ্ববিদ্যালয় হওয়া সত্ত্বেও ক্রীড়া ক্ষেত্রে সারাদেশে বিশেষ স্থান দখল করেছে।’

সচিবের কাছে আবেদন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনি সচিব থাকাকালীন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রীড়া বিভাগকে উন্নতি করতে যত কিছু প্রয়োজন, তা আপনি সাধ্যমতো দেওয়ার চেষ্টা করবেন। এছাড়াও আধুনিক বিশ্বের সাথে প্রতিযোগিতার জন্য আমাদের শিক্ষার্থীদের যে ধরনের প্রশিক্ষণ প্রয়োজন, আপনার মন্ত্রণালয়ের অধীনে যে সুযোগ আছে, তা এই ক্যাম্পাসে দেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি। প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে আমরা চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা শিখতে পারলে সামনের দিকে অগ্রসর হওয়া সম্ভব।’