টানা বৃষ্টিপাতের কারণে দেশের বিভিন্ন স্থানে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। পানিতে তলিয়ে গেছে অনেক এলাকা। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ করে বসানো হয়েছে আশ্রয়কেন্দ্র। এমন পরিস্থিতিতে এইচএসসি পরীক্ষা নিয়ে দুশ্চিন্তায় অভিভাবক ও পরীক্ষা সংশ্লিষ্টরা।
আবহাওয়া অফিস বলছে, এমন টানা বৃষ্টিপাত আরও ৫ দিন চলতে পারে। এতে করে চলমান এইচএসসি পরীক্ষা পিছিয়ে যাওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
ইতিমধ্যে ফেনীর ফুলগাজীর ৯৯টি ও পরশুরামের ৩২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ এবং পরীক্ষা স্থগিত করে সেখানে আশ্রয়কেন্দ্র চালু করেছে জেলা প্রশাসন। পরিস্থিতি বিবেচনায় শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এখনো এইচএসসি নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না এলেও, পরীক্ষার সময়সূচি পেছানোর বিষয়ে আলোচনার আভাস পাওয়া যাচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের (মাউশি) একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিতের বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। পরিস্থিতি বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
এদিকে, মাত্র এক বছরের ব্যবধানে আবারও ডুবছে ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, কুমিল্লাসহ চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন জেলা। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন লাখ লাখ মানুষ। পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় বিভিন্ন সড়কে বন্ধ হয়ে গেছে যান চলাচল।
ফেনীতে রেকর্ড বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে পরশুরামের মুহুরী, সিলোনিয়া ও কহুয়া নদীর বেড়িবাঁধের ১০টি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে ২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বন্যার পানিতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় ফসলি জমি, মাছের ঘের, রাস্তাঘাট, ঘরবাড়িসহ ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। উপজেলার বেশির ভাগ এলাকায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
শুধু চট্টগ্রাম বিভাগ নয়- ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগেও ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণ হয়েছে। দিনভর বৃষ্টিতে স্থবির হয়ে গেছে রাজধানীর জীবনযাত্রা। জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে নিচু এলাকায়। বিপাকে পড়েছেন পথচলা মানুষ। টানা বৃষ্টির সঙ্গে পাহাড়ি এলাকায় পাহাড়ধসের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। পাহাড়ে বসবাসরত মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে নেওয়া হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, টানা বর্ষণ ও উজান থেকে আসা ঢলে ফেনীর মুহুরী, কহুয়া, সিলোনিয়া নদীতে পানি আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। গতকাল সন্ধ্যা ৬টায় মুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমার ১১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এ নদীতে পানি বিপৎসীমা ১২ দশমিক ৫৫ সেন্টিমিটার।
এদিকে টানা বৃষ্টিতে জনজীবনে চরম দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে। ভোগান্তিতে পড়েছেন পথচারী, অফিসগামী ও খেটে-খাওয়া মানুষ। কোথাও কোথাও দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা।
আপনার মতামত লিখুন :