বেসরকারি শিক্ষা ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা ও সমন্বয় আনতে তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর বদলি কার্যক্রম চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সফটওয়্যারের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ভেন্ডর প্রতিষ্ঠান এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মধ্যে দেখা দিয়েছে সমন্বয়হীনতা। সমন্বয়হীনতা ও দ্বন্দ্বের কারণে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষকদের বদলি কার্যক্রম যথাসময়ে শুরু হচ্ছে না।
মাউশি এবং বদলির সফটওয়্যার প্রস্তুতকারী সংস্থা উভয় নিজ নিজ অবস্থান থেকে সফটওয়্যারের নিয়ন্ত্রণ নিতে চায়। বিষয়টি নিয়ে মতপার্থক্য তৈরি হওয়ায় সরকারি কোনো প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে নতুন করে সফটওয়্যার তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে মন্ত্রণালয়। এতে করে দীর্ঘদিন ধরে বদলির অপেক্ষায় থাকা লক্ষাধিক শিক্ষকের অপেক্ষার প্রহর আরও বাড়ছে।
জানতে চাইলে মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (মাধ্যমিক-২) মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘বদলির সফটওয়্যার নিয়ে কাজ চলছে। কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত বদলি কার্যক্রম চালু করা সম্ভব হবে না। আমরা চলতি বছরের মধ্যে বদলি চালুর চেষ্টা করছি।’
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) একটি সূত্র জানিয়েছে, একটি ভেন্ডর প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে শিক্ষকদের বদলির সফটওয়্যার তৈরি করা হয়েছিল। কোনো প্রকার দরপত্র ছাড়াই ওই প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেওয়া হয়। তারা বিনা মূল্যে একটি সফটওয়্যার তৈরি করে। সেটির ট্রায়াল হয় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ৪৫টি স্কুল-কলেজের শিক্ষকদের তথ্য সংগ্রহের মাধ্যমে। এ ট্রায়াল সফলভাবে সম্পন্ন হলেও সফটওয়্যারের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে জটিলতা দেখা দিয়েছে।
নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে মাউশির এক কর্মকর্তা বলেন, ‘ভেন্ডর প্রতিষ্ঠান যে সফটওয়্যার তৈরি করেছিল সেটি তারা নিজেরাই নিয়ন্ত্রণ করতে চেয়েছে। তবে আমরা নিয়ন্ত্রণ নিজেদের আওতায় রাখতে চাই। বদলি একটি গোপনীয় বিষয়। এখানে নানা অনিয়ম হওয়ার সুযোগ রয়েছে। বাইরের কোনো প্রতিষ্ঠানকে এর নিয়ন্ত্রণ দিলে জটিলতা তৈরি হতে পারে। এত শিক্ষকের তথ্য এভাবে অন্যদের হাতে দিয়ে দেওয়া উচিত হবে না। এ জন্য আমরা সরকারি কোনো প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এই সফটওয়্যার নতুন করে তৈরি করব। এ জন্য যাবতীয় কার্যক্রম নতুন করে শুরু করা হবে।’
নতুন প্রতিষ্ঠান দিয়ে সফটওয়্যার তৈরির ফলে চলতি বছর বদলি চালু করা সম্ভব হবে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘এটি নিশ্চিতভাবে বলা সম্ভব হবে না। কেননা সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে সফটওয়্যার তৈরি সেটি ট্রায়াল করে পুনরায় সব শিক্ষকের তথ্য সংগ্রহ করতে কিছুটা সময় লাগবে। চলতি বছর সম্ভব না হলেও আগামী বছরের শুরুর দিকে বদলি কার্যক্রম চালুর চেষ্টা করা হবে।’
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন