বলিউডের হিসেবে টাকার অঙ্কটা হয়তো খুব বড় নয়, কিন্তু বন্ধুত্বের অঙ্কে এই ১১ লাখ রুপির সুদসহ ফেরত যেন অনেক কিছু বলে দেয়। বলিউডের জনপ্রিয় জুটি অক্ষয় কুমার ও পরেশ রাওয়ালের বন্ধুত্ব নিয়ে এত দিন ছিলো গর্বের গল্প, এখন সেখানে ঢুকে পড়েছে প্রশ্ন, অবিশ্বাস আর ক্ষোভের ছায়া। ‘হেরা ফেরি ৩’ থেকে পরেশ রাওয়ালের বিদায় আর তারপরে সুদসহ অর্থ ফেরতের খবরে এখন সরগরম গোটা বলিউড।
এক সময়ের বন্ধুত্বে ভর করে একের পর এক সিনেমায় দারুণ রসায়ন তৈরি করেছিলেন এই দুই তারকা। ‘হেরা ফেরি’ সিরিজের বাবু রাও আর রাজু হয়ে মানুষের হৃদয়ে চিরস্থায়ী জায়গা করে নেন। কিন্তু তৃতীয় কিস্তির আগে হঠাৎই বন্ধুত্বের সেই গল্প যেন নতুন মোড় নিল। পরেশ রাওয়াল সরে দাঁড়ালেন সিনেমা থেকে। প্রথমে মনে হয়েছিল, হয়তো সময়সূচি বা বয়সজনিত ক্লান্তির কারণেই এই সিদ্ধান্ত। কিন্তু বাস্তব যে আরও জটিল।
সূত্র জানায়, ‘হেরা ফেরি ৩’র জন্য পরেশ রাওয়ালকে ১৫ কোটি রুপি পারিশ্রমিক দেওয়ার চুক্তি হয়। অগ্রিম হিসেবে দেওয়া হয় মাত্র ১১ লাখ রুপি। বাকি অর্থ প্রায় ১৪ কোটি ৮৯ লাখ রুপি ছবির মুক্তির এক মাস পর দেওয়ার কথা ছিলো।
এই দীর্ঘ প্রতীক্ষার নিয়মেই আপত্তি তোলেন পরেশ। তিনি স্পষ্ট করে দেন, এত বছর অপেক্ষা করা তার পক্ষে সম্ভব নয়। এই সিদ্ধান্তে অখুশি হয়ে ওঠে অক্ষয় কুমারের প্রযোজনা সংস্থা, এমনকি তারা ২৫ কোটি রুপির ক্ষতিপূরণ মামলার প্রস্তুতিও নেয়।
গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, পরেশ রাওয়াল শেষমেশ সুদসহ সেই ১১ লাখ টাকা ফেরত দিয়েছেন প্রযোজনা সংস্থাকে। প্রতিবছর ১৫ শতাংশ হারে সুদ হিসেব করে পুরো অর্থ পরিশোধ করেছেন তিনি, এমনকি ‘গুডউইল’ অর্থ হিসেবে কিছু বাড়তি টাকাও দিয়েছেন।
এ যেন বন্ধুত্বের শেষ হিসেবে ‘আদান-প্রদান’ সমাপ্ত করার এক নির্দয় প্রক্রিয়া। এমনকি কেউ কেউ বলছেন, এই টাকা ফেরতের মধ্য দিয়েই যেন শেষ হলো অক্ষয়-পরেশ জুটির ব্যক্তিগত এবং পেশাগত সম্পর্কের অধ্যায়।
যদিও পরেশ রাওয়াল বারবার দাবি করে এসেছেন, কাজ বা অর্থ সংক্রান্ত কোনও মতবিরোধ তার সঙ্গে হয়নি। তিনি স্বেচ্ছায়ই ছবিটি ছেড়ে দিয়েছেন। তবে যেভাবে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার ইঙ্গিত দেয় প্রযোজক পক্ষ, আর পরে হঠাৎ করে সুদসহ অর্থ ফেরতের বিষয় সামনে এসেছে, তা থেকেই বলিউডে গুঞ্জন, বন্ধুত্ব আর বিশ্বাসে চিড় ধরেছে বহু বছরের সম্পর্কের।
এদিকে, অক্ষয় কুমারও নিজের জন্মদিনে নতুন ছবি ‘ভূত বাংলা’র ঘোষণা দিয়ে বুঝিয়ে দেন, পুরনো গল্প ভুলে তিনি এগিয়ে যেতে চান।
তবু দর্শকের চোখে ঘুরপাক খাচ্ছে সেই চিরচেনা বাবু রাওয়ের হাসি, যে আর হয়তো ফিরবে না ‘হেরা ফেরি’-র নতুন পর্বে। এখন শুধু অপেক্ষা - এই জায়গা কে পূরণ করতে পারবেন, আদৌ পারবেন কিনা।