বিএফডিসির চিত্রকর্মীদের চেনা মুখ চলচ্চিত্রকর্মী মোহাম্মদ খোরশেদ আলম। দীর্ঘ ৪৭ বছর ধরে এফডিসিতে শিল্প নির্দেশকের সহকারী হিসেবে কাজ করেছেন তিনি। তার হাতে প্রাণ পেয়েছে অসংখ্য সিনেমার দৃশ্য, উজ্জ্বল হয়েছে বহু তারকার সোনালি মুহূর্ত। কিন্তু সময়ের নিয়মে তিনি আজ বিদায়ের পথে—এফডিসির কোলাহল ছেড়ে ফিরে যাচ্ছেন আপন ভিটায়। তাই তার পাশে দাঁড়িয়েছেন একাধিক অভিনয়শিল্পী। এবারই সেই তালিকায় যুক্ত হয়েছেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী রুমানা ইসলাম মুক্তি ও আলোচিত চিত্রনায়ক জায়েদ খান।
এ প্রসঙ্গে মুক্তি দৈনিক রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, ‘এফডিসিতে তার সঙ্গে প্রায়ই দেখা হয়। আমারও অনেক সিনেমার সেটে তিনি কাজ করেছেন, যেটা হয়তো আমি নিজেও জানি না। তবে তার চেয়ে বড় কথা, তিনি আমাদের চলচ্চিত্র পরিবারের মানুষ। জীবনের পুরো সময় এখানে দিয়েছেন। সেই জায়গা থেকে আমাদের দায়িত্ব অনেক। বর্তমানে তার শারীরিক অবস্থা ভালো নয়। যখনই সাংবাদিক ভাইদের এই মানবিক উদ্যোগের কথা জানতে পারি তখন তার পাশে দাঁড়ানোর আগ্রহ প্রকাশ করি। এমন একটি মানবিক উদ্যোগে পাশে থাকতে পেরে ভীষণ ভালো লাগছে।’
দীর্ঘ সময় ধরে আমেরিকা অবস্থান করছেন চিত্রনায়ক জায়েদ খান। দূর দেশ থেকে তিনি বলেন, ‘সাংবাদিক ভাইয়েরা এর আগে এফডিসির ঝালমুড়ি বিক্রেতাকে বাড়ি ফেরাতে উদ্যোগ নিয়ে সফল হয়েছিল। সে সময়ও আমি পাশে দাঁড়িয়েছিলাম। এবার সশরীরে না থাকলেও এই মানবিক উদ্যোগে পাশে থাকতে পেরে ভালো লাগছে। কারণ, খোরশদ ভাই আমারও অনেক সিনেমার সেটে কাজ করেছেন। তার জন্য দোয়া রইল।’
এর আগে, খোরশেদের পাশে দাঁড়ায় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি, ফিল্ম ক্লাব, চিত্রনায়িকা ইয়ামিন হক ববি, প্রযোজক-চিত্রনায়ক মুন্না খানসহ আরও অনেকে।
চলচ্চিত্র সাংবাদিকরা খোরশেদ আলমকে নিজ বাড়িতে সসম্মানে ফেরত পাঠানোর উদ্যোগ নেন। সেই উদ্যোগের অংশ হিসেবেই এফডিসিতে হতে চলেছে তার বিদায় সংবর্ধনা। বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৫টায় তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় দেবেন সাংবাদিক ও চিত্রকর্মীরা।
এই আয়োজনের নেপথ্যে রয়েছেন চলচ্চিত্র সাংবাদিক মাজহার বাবু, আহমেদ তেপান্তর, রাহাত সাইফুল, রঞ্জু সরকার, এ এইচ মুরাদ, আসিফ আলম, রুহুল আমিন ভূঁইয়া, চলচ্চিত্র নির্মাতা গাজী মাহবুব ও সায়মন তারিক।
এবারই প্রথম নয়, এর আগে এফডিসির ঝালমুড়ি বিক্রেতা প্রয়াত আব্দুল মান্নান মোল্লাকে বিদায় দেন উক্ত সাংবাদিকরা।
১৯৭২ সাল থেকে তিনি চলচ্চিত্রপাড়ায় ঝালমুড়ি বিক্রি করেন। ২০২১ সালের জানুয়ারিতে তিন দিনব্যাপী মুড়ি উৎসবের মাধ্যমে মোটা অঙ্কের অর্থ সহায়তা করে তাকে বিদায় দেন এই সাংবাদিকরা।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন