চলতি বছরে ৯৮তম একাডেমি অ্যাওয়ার্ডে (অস্কার) আন্তর্জাতিক ফিচার ফিল্ম বিভাগে বাংলাদেশ থেকে চূড়ান্তভাবে মনোনীত হয়েছে লীসা গাজী পরিচালিত চলচ্চিত্র ‘বাড়ির নাম শাহানা’।
শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকালে ঢাকার একটি পাঁচতারকা হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ ফেডারেশন অব ফিল্ম সোসাইটিজ (বিএফএফএস)।
অস্কারে চলচ্চিত্র জমা দেওয়া ও বাছাইয়ের জন্য বিএফএফএস-এর তত্ত্বাবধানে গঠিত হয় অস্কার বাংলাদেশ কমিটি, যার সভাপতি ছিলেন মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম।
এ বছর অস্কারের আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র বিভাগের জন্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ছবি আহ্বান করা হয় সেপ্টেম্বরের শুরুতে। ১৬ সেপ্টেম্বর ছিল জমা দেওয়ার শেষ দিন। সময়সীমার মধ্যে জমা পড়ে পাঁচটি চলচ্চিত্র- ‘সাবা’, ‘বাড়ির নাম শাহানা’, ‘নকশিকাঁথার জমিন’, ‘প্রিয় মালতী’ ও ‘ময়না’।
এই পাঁচটি সিনেমার স্ক্রিনিং অনুষ্ঠিত হয় ২৪ ও ২৫ সেপ্টেম্বর। যাচাই–বাছাই শেষে ‘বাড়ির নাম শাহানা’কেই চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত করে কমিটি।
‘বাড়ির নাম শাহানা’ নির্মিত হয়েছে এক বাস্তব ঘটনার ভিত্তিতে। নব্বইয়ের দশকের প্রেক্ষাপটে, বাল্যবিবাহের শিকার এক কিশোরী মেয়ের জীবনের সংগ্রামের গল্প বলা হয়েছে এই সিনেমায়। কৈশোর পেরোনোর আগেই দীপার বিয়ে হয়ে যায়। কিন্তু স্বামীর নির্যাতনের জাল ছিঁড়ে নিজের মতো করে বাঁচতে চায় সে।
দীপার চরিত্রে অভিনয় করেছেন আনান সিদ্দিকা। একজন নারী চরিত্রের আত্মমর্যাদা ও বেঁচে থাকার লড়াইয়ের গল্পে উঠে এসেছে নারীর স্বাধীনতা ও প্রতিকূলতাকে অতিক্রম করার সাহসী প্রয়াস।
‘বাড়ির নাম শাহানা’ লীসা গাজীর পরিচালনায় প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র। এর আগে তিনি তথ্যচিত্র নির্মাণ করেছেন। এই ছবির চিত্রনাট্য তিনি যৌথভাবে লিখেছেন অভিনেত্রী আনান সিদ্দিকার সঙ্গে।
ছবিটি প্রযোজনা করেছে কমলা কালেকটিভ ও গুপী বাঘা প্রোডাকশন্স লিমিটেড।
সিনেমাটির অন্যতম প্রযোজক আরিফুর রহমান অস্কার মনোনয়নের পর বলেন, ‘আমার যে টিম, কাজের বাইরেও তাদের সঙ্গে আমার একটা পারিবারিক সম্পর্ক রয়েছে। শুরু থেকেই আমি তাদের বিশ্বাস করেছি। আজকে যখন এই ঘোষণা দেওয়া হলো, তখন মনে হয়েছে বিশ্বাসের মর্যাদা রাখা হয়েছে।’
বাংলাদেশ থেকে অস্কারে ছবি মনোনয়নের জন্য গঠিত কমিটিতে সভাপতি ছাড়াও ছিলেন সাংবাদিক ও চলচ্চিত্র সমালোচক সাজ্জাদ শরিফ, চিত্রগ্রাহক রাশেদ জামান, প্রযোজক শাহরিন আক্তার সুমি, পরিচালক শাহীন দিল-রিয়াজ এবং চলচ্চিত্র শিক্ষক এস এম ইমরান হোসেন।
তাদের সম্মিলিত যাচাই ও পর্যালোচনার ভিত্তিতেই ‘বাড়ির নাম শাহানা’ কে অস্কারে পাঠানোর জন্য চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত করা হয়।