জিরা (Cumin) আমাদের দৈনন্দিন রান্নার একটি অপরিহার্য উপাদান। ছোট এই মসলা শুধু স্বাদ ও ঘ্রাণ বাড়াতেই নয়, শরীরের জন্যও বয়ে আনে অসংখ্য উপকার। প্রাচীন আয়ুর্বেদ চিকিৎসায় জিরাকে হজম শক্তি বৃদ্ধির অন্যতম কার্যকর উপাদান হিসেবে বিবেচনা করা হয়। জিরা সেবনের মাধ্যমে দেহের অনেক স্বাস্থ্য সমস্যা সহজেই প্রতিরোধ করা সম্ভব।
হজম শক্তি বৃদ্ধি করে
জিরার অন্যতম প্রধান গুণ হল এটি হজমে দারুণভাবে সাহায্য করে। জিরায় থাকা 'থাইমোকুইন' নামক উপাদান হজম প্রক্রিয়াকে সক্রিয় করে তোলে। এটি পাচনতন্ত্রে পাচক রস নিঃসরণ বাড়িয়ে বদহজম, গ্যাস ও পেট ফাঁপার মতো সমস্যাগুলোর সমাধান করে।
ওজন কমাতে সহায়ক
অনেকেই জানেন না, জিরা ওজন কমানোর একটি প্রাকৃতিক উপাদান। জিরা শরীরের মেটাবলিজম বাড়িয়ে চর্বি পোড়াতে সাহায্য করে। নিয়মিত জিরা পানি পান করলে শরীর থেকে টক্সিন বের হয় এবং অতিরিক্ত মেদ কমতে থাকে।
রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে
জিরা রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। তাই এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খুবই উপকারী। এটি ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়াতে ভূমিকা রাখে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
জিরায় রয়েছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, ভিটামিন সি এবং আয়রন, যা শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে। এটি ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণের ঝুঁকি হ্রাস করে।
ত্বক ও চুলের জন্য উপকারী
জিরা ত্বকের নানা সমস্যার জন্য দারুণ কার্যকর। এতে থাকা অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান ব্রণ কমাতে সাহায্য করে। এছাড়া জিরার পানি চুল পড়া রোধ করে এবং চুলের গোড়া শক্তিশালী করে।
ঘুমের সমস্যা দূর করে
যাদের অনিদ্রার সমস্যা আছে, তারা রাতে হালকা গরম দুধের সঙ্গে সামান্য জিরা গুঁড়ো মিশিয়ে খেলে উপকার পেতে পারেন। জিরা স্নায়ুকে শান্ত করে ঘুম আনতে সাহায্য করে।
রক্তস্বল্পতা দূর করতে সহায়ক
জিরায় থাকা উচ্চমাত্রার আয়রন শরীরের হিমোগ্লোবিন উৎপাদন বাড়িয়ে রক্তস্বল্পতা দূর করতে সাহায্য করে, বিশেষ করে গর্ভবতী নারীদের জন্য এটি খুবই উপকারী।
ছোট হলেও জিরা এক অসাধারণ গুণসম্পন্ন প্রাকৃতিক উপাদান। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় এটি অন্তর্ভুক্ত করলে শরীর আরও সুস্থ ও প্রাণবন্ত থাকবে। তবে যেকোনো স্বাস্থ্য সমস্যায় নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করাই উত্তম।
আপনার মতামত লিখুন :