মনের আনন্দে সমুদ্রের নীল জলে খেলা করছে ডলফিন। এক সময় দক্ষিণ কোরিয়ার জেজু দ্বীপে প্রতিনিয়ত দেখা মিলতো এ দৃশ্যের। জেলে নৌকা, ফেলে দেওয়া জাল, দূষণ আর পর্যটকের ভিড়ে দিন দিন কঠিন হয়ে উঠছে এসব ডলফিনের জীবন-যাপন। যার ফলে এই প্রজাতির ডলফিনের অস্তিত্ব এখন হুমকির মুখে।
বর্তমানে জেজু দ্বীপে বাস করে প্রায় ১৩০টি ডলফিন। এদের বেশির ভাগের শরীরে মাছ ধরার জালের দাগ বা আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। পরিবেশকর্মীরা বলছেন, জেলে ও পর্যটকদের নৌকা প্রায়ই ডলফিনের খুব কাছে চলে যায়। এতে তারা ভয় পায়, আহত হয়। দ্বীপের চারপাশে নতুন করে গড়ে ওঠা মাছের খামার ও সমুদ্রের নিচে নির্মাণকাজের শব্দ ডলফিনের যোগাযোগে বাধা সৃষ্টি করছে।
এ পরিস্থিতি বদলাতে জেজুর একদল পরিবেশকর্মী শুরু করেছেন এক ব্যতিক্রমী আন্দোলন। তারা চান, এই ডলফিনের ‘লিগ্যাল পারসন’ বা আইনি নাগরিকের মর্যাদা দেওয়া হোক। জেজুতে ডলফিন নিয়ে কাজ করে বেসরকারি সংস্থা ‘মার্ক’। সংস্থাটির কর্মী মিয়ন কিম বলেন, ‘আমরা যদি ডলফিনকে আইনি সত্তা দিতে পারি, তাহলে যারা তাদের ক্ষতি করে, তাদের বিরুদ্ধে সরাসরি আইনি ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।’
সম্প্রতি জেজুর পশ্চিম দিকে ডলফিনের জন্য একটি সংরক্ষিত এলাকা ঘোষণা করা হয়েছে। তবে এখানেও অনেক সময় মাছ ধরার নৌকা ঢুকে পড়ে। ডলফিনের এই সংকটাপন্ন অবস্থার কথা চিন্তা করে জেজুর পরিবেশবাদীরা বলছেন, শুধু সংরক্ষিত এলাকা দিয়ে হবে না, ডলফিনকে ‘আইনি নাগরিক’ হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে।
দক্ষিণ কোরিয়ায় কোনো প্রাণীর জন্য এটিই প্রথমবারের মতো নাগরিকত্ব দাবি। এর আগে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে নদী বা বনকে আইনি সত্তা দেওয়া হলেও, প্রাণীর ক্ষেত্রে এমন উদ্যোগ বিরল।