মঙ্গলবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


ফিচার ডেস্ক

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৫, ২০২৫, ০৮:৫৪ এএম

যেভাবে বুঝবেন ক্যানসার রোগের লক্ষণ

ফিচার ডেস্ক

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৫, ২০২৫, ০৮:৫৪ এএম

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

ক্যানসার আজ বিশ্বজুড়ে মানুষের মনে এক নীরব আতঙ্কের নাম। চিকিৎসাবিজ্ঞানের উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন সত্ত্বেও এই রোগ এখনো মানবস্বাস্থ্যের সবচেয়ে বড় হুমকির একটি। দেহের কোষ স্বাভাবিক নিয়ম ভেঙে যখন অনিয়ন্ত্রিতভাবে বাড়তে থাকে এবং অস্বাভাবিক কোষগুলোর বিস্তার ঘটতে থাকে, তখনই জন্ম হয় ক্যান্সারের। এসব অস্বাভাবিক কোষ টিউমার তৈরি করতে পারে এবং টিউমার যদি ক্ষতিকর প্রকৃতির হয়, তা শরীরের নানান অঙ্গে ছড়িয়ে পড়ে প্রাণঘাতী পরিস্থিতি তৈরি করে। জিনগত পরিবর্তন, পরিবেশগত বিষাক্ততা, বিকিরণ, ভাইরাস, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাপন- সব মিলিয়েই বাড়ছে ক্যান্সারের ঝুঁকি।

কোন ক্যানসার সবচেয়ে হয়

শতাধিক প্রকার ক্যান্সারের মধ্যে বিশ্বজুড়ে কয়েকটি সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। নারীদের মধ্যে স্তন ক্যান্সার অন্যতম, যা স্ক্রিনিংয়ের মাধ্যমে আগেভাগেই শনাক্ত করা সম্ভব।

ফুসফুসের ক্যান্সার সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর কারণ, যদিও শুধু ধূমপান নয়, দূষণও এর জন্য দায়ী।

রক্তের ক্যান্সার, যেমন রক্ত সাদা কণিকার ক্যান্সার, শিশু থেকে বৃদ্ধ- সবাইকে আক্রান্ত করতে পারে।

কোলন ও রেকটাম সম্পর্কিত ক্যান্সার সাধারণত পলিপ থেকে শুরু হয় এবং নিয়মিত পরীক্ষা করালে এটি প্রতিরোধযোগ্য।

পুরুষদের মধ্যে প্রোস্টেট ক্যান্সার ধীরে ধীরে বাড়ে এবং রক্তের বিশেষ পরীক্ষার মাধ্যমে দ্রুত শনাক্ত করা সম্ভব। এছাড়াও ত্বক, হাড়, মস্তিষ্ক, অগ্ন্যাশয়, চোখ এবং পিত্তথলির ক্যান্সারও বিশ্বব্যাপী ক্রমেই বাড়ছে।

ক্যানসারের কোষ কী

ক্যান্সারকে বোঝার জন্য এর কোষগত শ্রেণিবিভাগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিচে কোষগুলো তুলে ধরা হলো-

কার্সিনোমা: এটি সবচেয়ে বেশি দেখা যায় এবং দেহের আবরণী টিস্যুতে উৎপত্তি হয়।

সারকোমা: হাড়, পেশি বা অন্যান্য সংযোগকারী টিস্যু থেকে তৈরি হয় এবং দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে।

রক্ত ক্যানসার: এতে অস্থিমজ্জায় অস্বাভাবিক রক্ত কোষ উৎপন্ন হয়, যা রোগীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে ভেঙে দেয়।

লিম্ফোমা: রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার গুরুত্বপূর্ণ অংশ লিম্ফ্যাটিক সিস্টেমে শুরু হয়।

মাইলোমা: প্লাজমা সেলে শুরু হওয়া ক্যান্সার, যা রোগীর রক্তের বিভিন্ন রাসায়নিক উপাদানে ব্যাঘাত সৃষ্টি করে।

যেভাবে শনাক্ত হয় ক্যানসার

প্রথমে চিকিৎসক শারীরিক পরীক্ষা করেন এবং প্রয়োজন হলে নানান প্রযুক্তির সাহায্যে গভীরভাবে পরীক্ষা করা হয়। এক্স-রে, চৌম্বক চিত্রায়ন, অঙ্গ-প্রতঙ্গের অভ্যন্তরীণ আলোক পরীক্ষা- সবকিছু মিলিয়ে টিউমারের অবস্থান, আকার ও বিস্তার বোঝা যায়

কিন্তু সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ হলো টিস্যু পরীক্ষা, যেখানে আক্রান্ত কোষ সরাসরি পরীক্ষা করে নিশ্চিত হওয়া যায় এটি ক্যান্সার কিনা। রক্তের বিশেষ কিছু রাসায়নিক পরীক্ষাও ক্যান্সারের সংকেত দিতে পারে।

স্তন ক্যান্সারের ক্ষেত্রে স্তন পরীক্ষা, জরায়ুর ক্যান্সারের ক্ষেত্রে পাপ পরীক্ষা, পুরুষদের ক্ষেত্রে প্রোস্টেটের রক্ত পরীক্ষা এবং হজমতন্ত্রের ক্যান্সারের ক্ষেত্রে অন্ত্র পরীক্ষা জীবন বাঁচানোর ক্ষেত্রে অত্যন্ত কার্যকর।

ক্যানসার চিকিৎসায় আধুনিকায়ন

ক্যান্সার চিকিৎসা আজ আগের তুলনায় অনেক বেশি উন্নত, ব্যক্তিভেদে চিকিৎসা পরিকল্পনা নির্ধারণ করা হয়।

শল্য চিকিৎসা: প্রাথমিক পর্যায়ে টিউমার সম্পূর্ণ অপসারণে অত্যন্ত কার্যকর।

ওষুধ প্রয়োগ থেরাপি: দ্রুত বাড়তে থাকা ক্যান্সার কোষ ধ্বংসে প্রচলিত হলেও এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রোগীভেদে আলাদা।

বিকিরণ থেরাপি: উচ্চমানের বিকিরণ দিয়ে টিউমার সংকুচিত করা বা অবশিষ্ট ক্যান্সার কোষ ধ্বংস করা হয়।

নিখুঁত বিকিরণ প্রযুক্তি: নতুন প্রযুক্তি যেমন চৌম্বক-নিয়ন্ত্রিত বিকিরণ থেরাপি চিকিৎসাকে করেছে আরও নিরাপদ, যেখানে সুস্থ টিস্যুর ক্ষতি খুবই কম হয়।

লক্ষ্যভিত্তিক থেরাপি: ক্যান্সারের নির্দিষ্ট কোষগত দুর্বলতাকে লক্ষ্য করে চিকিৎসা করা হয়।

রোগ প্রতিরোধ সক্রিয়করণ থেরাপি: শরীরের প্রতিরোধ ব্যবস্থা নিজেই ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই করে।

হরমোন নিয়ন্ত্রণ থেরাপি: বিশেষ করে স্তন ও প্রোস্টেট ক্যান্সারে অত্যন্ত ফলপ্রসূ।

উচ্চতাপ থেরাপি, আলোক সক্রিয় থেরাপি, অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন- সব মিলিয়ে ক্যান্সার চিকিৎসায় এসেছে নতুন দিগন্ত।

ক্যান্সারের প্রাথমিক লক্ষণ

অকারণে ওজন কমে যাওয়া, দীর্ঘদিনের ক্লান্তি, অস্বাভাবিক রক্তপাত, অবিরাম কাশি, কণ্ঠস্বর পরিবর্তন, ক্ষত সারতে দেরি হওয়া, হঠাৎ গাঁট বা পিণ্ড অনুভব করা- এসবই সতর্ক সংকেত। অনেক সময় এসব উপসর্গ সাধারণ রোগের মতো মনে হতে পারে, কিন্তু দীর্ঘদিন স্থায়ী হলে তা গুরুত্ব সহকারে দেখা প্রয়োজন।

Link copied!