কোরবানির ঈদে অনেক পরিবারে একসাথে প্রচুর পরিমাণে মাংস আসে। ইসলামে অপচয় নিষিদ্ধ এবং মাংসকে সংরক্ষণ করে পরবর্তীতে খাওয়া পুরোপুরি বৈধ। তাই কোরবানির মাংস সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা জরুরি, যেন তা নষ্ট না হয় এবং দীর্ঘদিন স্বাস্থ্যসম্মতভাবে খাওয়া যায়।
ইসলামি দৃষ্টিকোণ থেকে সংরক্ষণ
ইসলামে মাংস সংরক্ষণের অনুমতি রয়েছে। নবী করিম (সা.)- এর যুগে কোরবানির মাংস তিনদিনের বেশি রাখাকে প্রথমে নিরুৎসাহিত করা হয়েছিল, তবে পরে নবীজি (সা.) বলেছিলেন, ‘তোমরা কোরবানির মাংস খাও, জমাও এবং সদকা কর।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস ১৯৭১)
এই হাদিস প্রমাণ করে যে কোরবানির মাংস জমিয়ে রাখা জায়েজ, যদি তা অপচয় না হয় এবং গরিবদের হক দেওয়া হয়।
মাংস ভাগ ও প্রস্তুতি
মাংস সংরক্ষণের আগে ভালোভাবে ধুয়ে রক্ত ঝরিয়ে নিতে হবে। অতিরিক্ত চর্বি ও অনাবশ্যক অংশ আলাদা করে কেটে ছোট ছোট প্যাকেট তৈরি করতে হবে, যাতে প্রয়োজনমতো ব্যবহার করা যায়।
ফ্রিজিং পদ্ধতি
ডিপ ফ্রিজে সংরক্ষণ: মাংস ভালোভাবে পরিষ্কার করে প্লাস্টিক ব্যাগে বা এয়ার-টাইট কন্টেইনারে ভরে ফ্রিজে রাখা যায়। এতে ৩–৬ মাস পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যায়।
প্রিজারভেটিভ ছাড়াই সংরক্ষণ: কোনো ধরনের কেমিক্যাল না দিয়ে শুধু ঠাণ্ডায় সংরক্ষণ ইসলামি ও স্বাস্থ্যসম্মত।
তারিখ লিখে রাখা: প্রতিটি প্যাকেটের ওপর সংরক্ষণের তারিখ লিখে রাখা উচিত, যাতে আগে সংরক্ষিত মাংস আগে খাওয়া হয়।
রান্না করে সংরক্ষণ
রান্না করা মাংসও ফ্রিজে রাখা যায়। তবে রান্নার আগে বেশি তেল-মসলা ব্যবহার না করাই ভালো, যেন পুনরায় গরম করে খেতে সুবিধা হয়। রান্না করা মাংস সাধারণত ৪–৫ দিন পর্যন্ত ফ্রিজে ভালো থাকে।
স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সচেতনতাও জরুরি
মাংসের পচন ঠেকাতে প্রতিদিন ফ্রিজ চেক করুন। বিদ্যুৎ চলে গেলে ফ্রিজ খোলা বন্ধ রাখুন যেন ঠাণ্ডা বজায় থাকে। পাশাপাশি ফ্রিজ পরিষ্কার রাখতে হবে, যাতে দুর্গন্ধ বা ব্যাকটেরিয়া না ছড়ায়।
অতএব, ইসলামি শরিয়তের গাইডলাইন মেনে এবং স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে মাংস সংরক্ষণ করলে তা দীর্ঘদিন সুস্থ ও নিরাপদভাবে খাওয়া সম্ভব।