ঢাকা মঙ্গলবার, ০৩ জুন, ২০২৫

গর্ভাবস্থায় কিশমিশ খাওয়ার উপকারিতা

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: জুন ১, ২০২৫, ১১:২৫ এএম
কিশমিশ। ছবি: সংগৃহীত

আঙুরের শুকনা রূপ কিশমিশ। সোনালী-বাদামী রংয়ের চুপসানো ভাঁজ হওয়া ফলটি খুবই শক্তিদায়ক। বহু শতাব্দী ধরে ঐতিহ্যবাহী ওষুধ এবং রন্ধনপ্রণালীর একটি প্রধান উপাদান কিশমিশ।  কিশমিশে  প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম থাকে যা গর্ভবতী মায়েদের জন্য উপকারি।

 কিশমিশের পুষ্টিগুণ

প্রতি ১০০ গ্রাম কিসমিসে থাকে (আনুমানিক):

ক্যালরি: প্রায় ২৯৯ কিলোক্যালরি।
কার্বোহাইড্রেট:  ৭৯ গ্রাম (মূলত প্রাকৃতিক চিনি)।
প্রোটিন:  ৩.১ গ্রাম।
ফাইবার: ৩.৭ গ্রাম।
ক্যালসিয়াম: ৫০ মিলিগ্রাম।
আয়রন: ১.৯ মিলিগ্রাম।
পটাশিয়াম: ৭৪৯ মিলিগ্রাম।
ম্যাগনেশিয়াম: ৩২ মিলিগ্রাম।
ভিটামিন বি৬:  ০.১৭৪ মিলিগ্রাম।
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট:  উচ্চমাত্রায় ফ্ল্যাভোনয়েড, পলিফেনলস।

 কখন কিশমিশ খাওয়া ভালো?

কিশমিশ হৃৎপিণ্ডের জন্যও অনেক উপকারী। রাান্নায় এই খাবারটি ব্যবহৃত হলেও প্রতিদিন সকালে খালি পেটে, দুপুরের খাবারের পর, বিকেলের নাশতায় কিংবা রাতে ঘুমানোর আগে খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন কিশমিশ।

প্রতিদিন কতটুকু কিশমিশ খাওয়া উচিত?

মূলত ১০০ গ্রাম কিসমিসে ৩০০ ক্যালরি থাকে। আর তাই আপনি যদি প্রতিদিন সর্বনিম্ন ১০০ গ্রাম কিসমিস খান তাহলে আপনার শরীরের ৩০০ গ্যালারি যোগ হবে। তাই আপনি আপনার শরীরকে ভালো রাখতে সর্বনিম্ন একশ গ্রাম কিসমিস খেতে পারেন।

কিশমিশের অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। 

কিশমিশের উপকারিতা

পাচনশক্তি বৃদ্ধি করেছ: কিশমিশে ফাইবার থাকে, যা হজম প্রক্রিয়াকে সহায়তা করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।

শক্তি বৃদ্ধি করে: কিশমিশে প্রাকৃতিক শর্করা (গ্লুকোজ, ফ্রুক্টোজ) থাকে, যা দ্রুত শক্তি যোগায়।

হাড় মজবুত করে: কিশমিশে ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন কে থাকে, যা হাড় ও দাঁতকে শক্তিশালী করে।

রক্তবর্ধক: কিশমিশে আয়রন থাকে, যা রক্তশূন্যতা দূর করতে সাহায্য করে।

হৃদরোগ প্রতিরোধে সহায়ক: কিশমিশে পটাশিয়াম থাকে, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।

ত্বকের জন্য ভালো: অ্যান্টিঅক্সিডেন্টসমৃদ্ধ কিশমিশ ত্বকের দাগ-ধবংসহীনতা কমায় এবং ত্বককে প্রাণবন্ত রাখে।

দাঁতের স্বাস্থ্যের জন্য: কিশমিশ দাঁতের এনামেল শক্ত করে এবং জীবাণু দূর করতে সাহায্য করে।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে: কিশমিশে রয়েছে ফাইবার, যা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়ায়: কিশমিশ মস্তিষ্কের কোষের কার্যক্ষমতা উন্নত করে স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।

ওজন নিয়ন্ত্রণে: সঠিক পরিমাণে কিশমিশ খেলে ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, কারণ এটি দীর্ঘক্ষণ পেট ভর্তি রাখে।

গর্ভবতী মা কি কিশমিশ খেতে পারবে?

শিশুর হাড়কে মজবুত করার জন্য প্রয়োজন ক্যালসিয়াম। কিশমিশে  প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম থাকে যা গর্ভবতী মায়েদের জন্য উপকারি। এ সময়ে প্রয়োজন বাড়তি ক্যালরি। কিসমিস, খেজুর ইত্যাদি শুকনো ফল যোগান দেবে বাড়তি ক্যালরির।

কিশমিশ খাওয়ার অনেক উপকারিতা থাকলেও অতিরিক্ত খেলে কিছু অপকারিতাও হতে পারে।

কিশমিশ খাওয়ার অপকারিতা

ওজন বৃদ্ধি: কিশমিশে ক্যালোরি ও প্রাকৃতিক চিনির পরিমাণ বেশি থাকে। বেশি খেলে ওজন বাড়ার ঝুঁকি থাকে।

রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়ানো: ডায়াবেটিস রোগীদের অতিরিক্ত কিশমিশ খাওয়া রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে সমস্যা তৈরি করতে পারে।

পাচন সমস্যা: অনেক বেশি কিশমিশ খেলে পেট ফাঁপা, গ্যাস বা অস্বস্তি হতে পারে, কারণ এতে ফাইবার ও শর্করা থাকে যা অতিরিক্ত হলে হজমে সমস্যা করতে পারে।

দাঁতের সমস্যা: কিশমিশে থাকা চিনির কারণে বেশি খেলে দাঁতে ক্যাভিটি বা ক্ষতি হতে পারে।

অ্যালার্জি: কিছু মানুষের ক্ষেত্রে কিশমিশ বা আঙ্গুরে অ্যালার্জি হতে পারে, যা স্কিন র‍্যাশ বা শ্বাসকষ্টের মত সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।