ঢাকা সোমবার, ১৪ জুলাই, ২০২৫

সকালের হলুদ প্রস্রাব, স্বাভাবিক না সমস্যা?

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: জুলাই ১৪, ২০২৫, ১১:২৮ এএম
প্রস্রাব পরীক্ষা করছেন চিকিৎসক। ছবি- সংগৃহীত

প্রস্রাব বা মূত্র হল আমাদের দেহের একটি স্বাভাবিক নিঃসরণ প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে দেহের ক্ষতিকর ও অতিরিক্ত উপাদানগুলো বাইরে বেরিয়ে যায়। কিন্তু অনেকেই খেয়াল করেন, সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর প্রথম প্রস্রাবটি সাধারণের তুলনায় গাঢ় হলুদ রঙের হয়ে থাকে। বিষয়টি অবহেলার নয়। কখন এটি সাধারণ, আর কখন তা চিকিৎসার প্রয়োজন সেই বিষয়ে অবশ্যই আপনাকে।

কেন সকালে প্রস্রাব গাঢ় হলুদ হয়?

পানিশূন্যতা (ডিহাইড্রেশন)

ঘুমের সময় দীর্ঘক্ষণ পানি না পান করায় শরীরে পানি ঘাটতি দেখা দেয়। এতে কিডনি প্রস্রাবকে ঘনীভূত করে ফেলে, ফলে প্রস্রাবে ইউরোক্রোম নামক একটি রঞ্জকের পরিমাণ বেড়ে যায় এবং প্রস্রাবের রঙ গাঢ় হলুদ হয়ে ওঠে।

ইউরোক্রোমের প্রভাব

এই প্রাকৃতিক রঞ্জকটি হিমোগ্লোবিন ভাঙার সময় তৈরি হয়। পানি কম থাকলে এর ঘনত্ব বাড়ে, ফলে রঙ আরও স্পষ্ট হয়।

ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট

বিশেষ করে বি-কমপ্লেক্স (যেমন: ভিটামিন বি২ বা রিবোফ্লাভিন) বেশি মাত্রায় গ্রহণ করলে প্রস্রাবের রঙ উজ্জ্বল হলুদ বা প্রায় নিয়ন হলুদ হতে পারে। সকালের দিকে মাল্টিভিটামিন খাওয়ার পর এমনটা হওয়া অস্বাভাবিক নয়।

কখন সতর্ক হবেন?

সারা দিন পানি খাওয়ার পরও প্রস্রাব গাঢ় হলুদ থাকলে, তা গুরুতর ডিহাইড্রেশনের লক্ষণ হতে পারে।

প্রস্রাবে তীব্র বা অস্বাভাবিক গন্ধ থাকলে, তা কিডনি সংক্রমণ বা ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশনের (UTI) ইঙ্গিত হতে পারে।

যদি প্রস্রাবের সঙ্গে জ্বালাপোড়া, তলপেটে ব্যথা, জ্বর, কালচে রঙ বা অতিরিক্ত ফেনা দেখা দেয়, তাহলে অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

কিছু যৌনতাবাহিত রোগ বা অণ্ডকোষজনিত সমস্যা থেকেও প্রস্রাবের রঙ পরিবর্তিত হতে পারে। তাই এমন লক্ষণ একাধিকবার দেখা গেলে অবশ্যই সতর্ক হতে হবে।

কি করবেন?

দিনে অন্তত ৮-১০ গ্লাস পানি পান করুন।

প্রস্রাবের রঙ, গন্ধ বা অন্যান্য উপসর্গের দিকে খেয়াল রাখুন।

দীর্ঘমেয়াদী সমস্যায় নিজে থেকে ওষুধ না খেয়ে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।

সকালের হলুদ প্রস্রাব সবসময় বিপদের ইঙ্গিত নয়, তবে কিছু বিশেষ লক্ষণ দেখলে অবহেলা না করে সময়মতো ব্যবস্থা নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।