হোয়াটসঅ্যাপ বিশ্বব্যাপী যোগাযোগের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। বন্ধুদের সঙ্গে চ্যাট করা, পরিবারের সদস্যদের আপডেট জানানো কিংবা জরুরি কোনো বার্তা পাঠানো, সবকিছুই খুব সহজে করা যায় এই অ্যাপের মাধ্যমে।
তবে এমন কিছু দেশ আছে যেখানে এই জনপ্রিয় মেসেজিং অ্যাপটি সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ অথবা এর কিছু কিছু ফিচার সীমিত করা হয়েছে। চলুন জেনে নেওয়া যাক সেই কেন দেশগুলোতে এই জনপ্রিয় অ্যাপটি নিষিদ্ধ এবং এর পেছনের কারণগুলো...
চীন
চীনে হোয়াটসঅ্যাপ সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ। এর প্রধান কারণ হলো, দেশটির কঠোর ইন্টারনেট নিয়ন্ত্রণ নীতি। চীনা সরকার স্থানীয়ভাবে তৈরি উইচ্যাট-এর মতো অ্যাপগুলোকে উৎসাহিত করে, যা তাদের ডেটা নীতির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। ২০১৭ সাল থেকে এনক্রিপশন এবং ডেটা অ্যাক্সেস সংক্রান্ত উদ্বেগের জের ধরে হোয়াটসঅ্যাপ সেখানে আর ব্যবহার করা যায় না।
উত্তর কোরিয়া
উত্তর কোরিয়ার ইন্টারনেট ব্যবস্থা অত্যন্ত নিয়ন্ত্রিত। সাধারণ নাগরিকদের জন্য বিশ্বব্যাপী ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ খুবই সীমিত। শুধুমাত্র বিশেষ ব্যক্তিগত কাজের জন্য বিশ্বব্যাপী ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করার অনুমতি পান। এজন্য, হোয়াটসঅ্যাপ এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক মেসেজিং অ্যাপ সেখানে জনসাধারণের ব্যবহারের জন্য সহজলভ্য নয়।
ইরান
ইরানে হোয়াটসঅ্যাপের উপর বিভিন্ন সময়ে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। রাজনৈতিক অস্থিরতার সময়কালে এটি সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। যদিও সাম্প্রতিক কিছু প্রতিবেদনে এই নিষেধাজ্ঞায় কিছুটা শিথিলতা দেখা গেছে, ব্যবহারকারীরা এখনও নিয়মিতভাবে এই প্ল্যাটফর্মটি ব্যবহার করতে অসুবিধার সম্মুখীন হন এবং প্রায়শই ভিপিএন-এর সাহায্য নিতে বাধ্য হন।
সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই)
সংযুক্ত আরব আমিরাতে হোয়াটসঅ্যাপের মেসেজিং পরিষেবা চালু থাকলেও ভয়েস এবং ভিডিও কলিংয়ের সুবিধা সীমিত। দেশটির টেলিযোগাযোগ নীতি এবং স্থানীয়ভাবে লাইসেন্সপ্রাপ্ত অন্যান্য অ্যাপকে উৎসাহিত করার উদ্দেশ্যেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
সিরিয়া
সিরিয়ায়, বিশেষ করে সংঘাতের সময়কালে হোয়াটসঅ্যাপের মতো এনক্রিপ্টেড যোগাযোগ মাধ্যমের উপর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। যদিও কিছু ব্যবহারকারী ভিপিএন-এর মাধ্যমে এটি ব্যবহার করার চেষ্টা করেন, ব্যাপক ইন্টারনেট নজরদারির কারণে এর ব্যবহার সীমিত।
কাতার
কাতারে হোয়াটসঅ্যাপের ভয়েস এবং ভিডিও কলিংয়ের সুবিধা বর্তমানে বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে টেক্সট মেসেজিং পরিষেবা সাধারণভাবে কাজ করে। দেশটির জাতীয় টেলিকম নিয়ম মেনে চলা এবং লাইসেন্সপ্রাপ্ত স্থানীয় পরিষেবা প্রদানকারীদের সমর্থন করার জন্যই এই বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে।
মিশর
মিশরে হোয়াটসঅ্যাপের মতো ভিআইপি পরিষেবাগুলো মাঝে-মধ্যে বিধিনিষেধের সম্মুখীন হয়। তবে দেশটিতে সরকারি বা স্থায়ীভাবে ব্যাবহারে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। দেশটির জাতীয় টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (এনটিআরএ) মাঝে-মধ্যে এই ধরনের পরিষেবা সীমিত করে। কারণ হিসেবে তারা ‘নিরাপত্তা’ এবং ‘আর্থিক’ উদ্বেগের কথা উল্লেখ করেছে।